ফিচার ডেস্ক: ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। সমৃদ্ধির ৫২ বছর গৌরবময় যাত্রা অতিক্রম করে ৫৩ বছর পা রাখলো বিশ্ব বিদ্যালয়টি।
১৯৫৯ সনের জাতীয় শিক্ষা কমিশন এবং খাদ্য ও কৃষি কমিশনের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে। ময়মনসিংহস্থ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ভেটেরিনারি কলেজকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক কার্যক্রম। কৃষিশিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণের পথিকৃৎ বিদ্যাপীঠ হিসেবে ১৯৬১ সনে ১৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।
এদেশের প্রথম উচ্চতর কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার পথিকৃৎ ও সর্বোচ্চ জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্রমাগত সাফল্যের পথ বেয়ে সৌরবে গৌরবে নিজেকে যোগ্য প্রমান করে আজ ৫২ বছরের গৌরবময় যাত্রাপথ অতিক্রম করে ৫৩ বছরে পা দিয়েছে। মানসম্মত উচ্চতর কৃষি শিক্ষাদান এবং কৃষি উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব বহনে সমর্থ দক্ষ কৃষিবিদ, গবেষক ও প্রযুক্তিবিদ তৈরি করাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আর বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতার দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেয়ার কঠিন এ দায়িত্ব পালনে নিঃসন্দেহে এ বিশ্ববিদ্যালয় আজ শতভাগ সফল । বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনির্মাণ ও বিকাশ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বদানকারী প্রথম ভাইস-চ্যান্সেলর ছিলেন প্রফেসর ড.এম ওসমান গনি আর বর্তমানে ২১তম ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে নিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল হক।
ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে চিরসবুজে ঘেরা নৈসর্গিক পরিমন্ডলে প্রায় ১২০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তরে এই ক্যাম্পাসের অবস্থান। এছাড়া দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রতিষ্ঠান Ñ বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ মাৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই অবস্থিত।
ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নামে দু’টি অনুষদ নিয়ে ১৯৬১ সনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল । বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পশুপালন অনুষদ নামে তৃতীয় অনুষদের যাত্রা শুরু। এরপরে ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ এবং ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ছয়টি অনুষদের আওতায় ৪৩টি শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সিমেস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষা দান করা হচ্ছে। ৪২টি শিক্ষা বিভাগে তিন সিমেস্টার মেয়াদে এমএস ডিগ্রি কার্যক্রম চালু রয়েছে। বর্তমানে ৪০টি বিভাগ থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটি স্নাতকোত্তর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় ও তত্ত্বাবধান করে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজটি জামালপুরের মেলান্দহে অবস্থিত।
এ যাবত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৪৪২০ জন স্নাতক, ১৪৪৯৪ জন এমএসসি/এমএস এবং ৪৪৬ জন পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উওীর্ণ বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৭জন। এঁদের মাঝে ৯৪ জন ¯œাতক, ৯ জন মাষ্টার্স ও ৪ জন পিএইচ. ডি. ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এযাবৎ ৬টি সমাবর্তনের মাধ্যমে উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে সবুজ বিপ্লবের জনক নোবেল লরিয়েট বিজ্ঞানী ড. নরম্যান ই. বোরলগকে সম্মানসূচক ডি.এসসি (অনারিজ কজা) ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট ৫,৫৪৪ জন, তারমধ্যে ৩,৯৫৯ জন স্নাতক, ১,২২৫ জন এমএস এবং ৩৬০ জন পিএইচ.ডি পর্যায়ে অধ্যয়নরত। শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক ছাত্রী। এছাড়া মোট ৫৬০ জন শিক্ষক, ৪৩৬ জন কর্মকর্তা এবং ১,৬১৬ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের মধ্যে ২৫১ জন অধ্যাপক, ১৩১ জন সহযোগী অধ্যাপক এবং ১১৬ ও ৬২ জন যথাক্রমে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক রয়েছেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন অনুষদীয় ভবন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, সম্প্রসারণ ভবন, জিটিআই ভবন এবং শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ১২টি হল রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি হল ছাত্রীদের জন্য। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেকনোলজি ও পরিবেশ বিজ্ঞানসহ প্রাগ্রসর গবেষণার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত গবেষণাগার গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগার, সীড প্যাথলজি সেন্টার, ফিল্ড ফার্টিলিটি ক্লিনিক ল্যাব, আইপিএম ল্যাব, বায়োটেকনোলজি ল্যাব, ভেটেরিনারি ক্লিনিক এবং ফিশ নিউট্রিশন ও ডিজিজ ল্যাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইনস্টিটিউট অব এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট। রয়েছে আধুনিক সুবিধা সংবলিত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন (প্রায় দু’ হাজার আসনবিশিষ্ট)। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিরল বৃক্ষরাজি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন, জার্মপ্লজম সেন্টার, প্ল্যান্ট ডিজিজ ক্লিনিক, দেশের প্রথম কৃষি মিউজিয়াম এবং উপমহাদেশের প্রথম ফিশ মিউজিয়াম। একটি বিশাল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসহ রয়েছে জিমনেসিয়াম, স্টেডিয়াম, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রকৌশল শাখা, সুসজ্জিত অতিথি ভবন, ক্লাব ভবন, কমিউনিটি সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও মন্দির। রয়েছে শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাষ্কর্য বিজয়-৭১ এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বর ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম দু’টি প্রধান ধারায় পরিচালিত হয়ে থাকে। এর একটি ডিগ্রিভিত্তিক অপরটি প্রকল্পভিত্তিক। মাস্টার্স ও পিএইচ.ডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ডিগ্রি অর্জনের অংশ হিসেবে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে; পক্ষান্তরে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কোনো বহিস্থ সংস্থার অর্থানুকূল্যে অপরাপর সমস্যা সমাধানমূলক প্রকল্পের গবেষণাকাজ পরিচালিত হয়।
গবেষণা প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) এর তত্ত্বাবধানে ১,০৪২টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে এর চলমান প্রকল্পসংখ্যা ২১০টি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শস্যের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর মধ্যে বাউকুল, বাউ-৬৩, বাউধান-২ নামে উফশী ধান জাত- সম্পদ ও সম্বল, বাউ-এম/৩৯৫, বাউ-এম/৩৯৬ নামে ৪টি উফশী সরিষা জাত; ডেভিস, ব্র্যাগ, সোহাগ, জি-২ ও বিএস-৪ নামে ৫টি সয়াবিন জাত; কমলা সুন্দরী ও তৃপ্তি নামে আলুর জাত; লতিরাজ, বিলাসী ও দৌলতপুরী নামে তিনটি মুখীকচু জাত; কলা ও আনারস উৎপাদনের উন্নত প্রযুক্তি, রাইজোবিয়াম জৈব সার উৎপাদন প্রযুক্তি; সয়েল টেস্টিং কিট; হাওর এলাকায় হাঁস পালনের কলাকৌশল, কমিউনিটি ভিত্তিক উৎপাদনমুখী ভেটেরিনারি সেবা, গবাদিপশুর ভ্রুণ প্রতিস্থাপন, স্বল্প ব্যয়-মিডিয়ামে কোরেলার চাষ, মাছের পোনা পালনের জন্য রটিফারের চাষ, মাছের রোগ প্রতিরোধকল্পে ঔষধি গাছের ব্যবহার এবং মলিকুলার পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছের বংশ পরিক্রম নির্ণয়, তারাবাইম, গুচিবাইম, বড় বাইম, কুচিয়া ও বাটা মাছের কৃত্রিম প্রজনন, ধানক্ষেতে মাছ ও চিংড়ি চাষ, পুকুরে মাছ চাষ, সহজলভ্য মাছের খাদ্য তৈরি, একোয়াপনিক্স এর মাধ্যমে মাছ এবং সবজি উৎপাদন, মাছের বিকল্প খাদ্যের জন্য ব্লাক সোলজার ফাই চাষ এবং কচি গমের পাউডার উৎপাদন,নিরাপদ সুটকি তৈরীর ট্যানেল উদ্বাবন, বিদ্যুৎবিহীন হিমাগার স্থাপন, গাভীর উলান প্রদাহ রোগ নির্নয় কীট, প্রমুখ ।
কৃষি খামার, গৃহাঙ্গন ও সমষ্টিগত উন্নয়নকল্পে পরিচালিত সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষকদের জীবনধারার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (জিটিআই) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক) এর অন্যতম লক্ষ্য কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যাবলিতে নিয়োজিত গ্র্যাজুয়েট, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও গবেষকদের জন্য চাকরিকালীন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বাংলাদেশের সকল এলাকার জন্য উপযোগী এমন একটি কার্যকর সম্প্রসারণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা, যা অঞ্চল বিশেষে সহজেই বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিটিআই, বাউএক, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও অনুষদসমূহ তাদের শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ কর্মকান্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মোট ৪৬,০৮৪ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে যার মধ্যে ১৭৫৬৪ জন খামারি, ৩৬৩৭ জন মাঠকর্মী এবং ২৪,৮৩৩ জন গ্র্যাজুয়েট ও বিভিন্ন স্তরের পেশাজীবী রয়েছেন। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে জিটিআই নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ম্যাথমেটিক্স বিভাগ পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা-ইন-ইনফরমেশন কম্যুনিকেশন টেকনোলজি(পিজিডি-আইসিটি) কোর্স নিয়মিত পরিচালনা করছে এতে বিভিন্ন পেশাজীবি (ডাক্তার,প্রকৌশলী,সেনাবাহিনীর সদস্যসহ নানা পেশার গ্রাজুয়েটগণ অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া ইনস্টিটিউট অব এগ্রিবিজনেস এন্ড ডেবেলাপমেন্ট স্টাডিজ, এগ্রিকালচার এমবিএ ডিগ্রী চালু করেছে।
শিক্ষার্থীদের মননশীলতা বিকাশ ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের আওতায় বিনোদন সংঘ, সাহিত্য সংঘ, নাট্য সংঘ, সংগীত সংঘ, বিজ্ঞান সংঘ, ডিবেটিং ক্লাব ইত্যাদি নিয়মিতভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীবৃন্দ স্কাউটিং, বিএনসিসি ও বাঁধন এর সঙ্গে যুক্ত থেকে ভবিষ্যত জাতি গঠনে নেতৃত্ব দিতে নিজেকে তৈরি করছে ।
১৯৭১ সনের অসহযোগ ও মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ হানাদারবাহিনী ও তার এদেশীয় দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র, ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় হারায় ১৯ জন সাহসী বীর সন্তানকে, যাঁরা দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য অকাতরে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁরা আমাদের চিরতরে ছেড়ে চলে গেছেনÑ এ কথা যেমন সত্য, তেমনি এটিও সত্য যে, এই চিরঞ্জীব শহীদগণ আজো আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন এবং আগামী দিনগুলোতেও আমরা তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি অনুভব করবো। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে ছাত্রদের তিনটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে, হলগুলো হচ্ছেÑ শহীদ শামসুল হক হল, শহীদ নাজমুল আহসান হল ও শহীদ জামাল হোসেন হল।
এ ব্যাপারে বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল হক জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এ যাবত যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা একেবারে গৌণ নয়। এ উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে আগামীতে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। পরিকল্পনা ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে এর শিক্ষা ও গবেষণাসহ যাবতীয় কার্যাবলির বিকাশ অব্যাহত থাকবে এবং এর মধ্য দিয়েই কৃষি তথা জাতীয় উন্নয়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও অবদান আরো ফলপ্রসূ হবে।