শেখ মো. রতন: কালের সাী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুন্সীগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক নিদর্শন ইদ্রাকপুর কেল্লা। পরিত্যাক্ত অবস্থায় জড়াজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এ কেল্লাটি। রণাবেণের অভাবে অযতœ-অবহেলায় কেল্লাটি এখন তার প্রতœতাত্বিক সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলছে। এটি মুঘল স্থাপত্যের অনন্য পুরাকীার্ত। এদিকে এই দূর্গ বা কেল্লাটিকে যাদু ঘরে রূপান্তরিত করার দাবি মুন্সীগঞ্জবাসীর বহুদিনের। জেলা শহরে নেই কোন যাদুঘর প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরে বেশ কয়েক দয়া জেলা প্রশাসক এ কেল্লাটির সংস্কারের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে আছে। জানা গেছে, ১৯৮৪-৮৯ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকসহ গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিদের বাসভন ছিল এটি। পরবর্তীতে একে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের আওতাভূক্ত হয়। একসময়(১৮৪৫-১৯৮৪) ইদ্রাকপুর দুর্গে মহকুমা প্রশাসকের বাসভবন ছিল। ১৯৯০ সালের পর কেল্লাটি পরিক্ত অবস্থায় রয়েছে। উপরের চাড়ার ছাদটি অনেকাংশে ভেঙ্গে গেছে। সংস্কারের অভাবে মুঘল স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন ইদ্রাকপুর কেল্লাটি তার অতীত হারিয়ে যেতে বসেছে। মনে হয় যেন দেখার কেউ নেই। কেল্লাটি এখন অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শাহীন মোহাম্মদ আমান উল্লাহ জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরে কোন যাদুঘর নেই। ইদ্রাকপুর কেল্লাটিকে যাদুঘরে রূপান্তর করার জন্য জেলাবাসী অনেকদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু প্রশাসনের প থেকে পজিটিভ কোন রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে না। সংস্কারের অভাবে কেল্লাটি ধবংস হতে বসেছে। জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের কাছে ইদ্রাকপুর কেল্লাটির সংস্কারের জন্য আবেদন পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত এর কোন জবাব আসেনি। এই কেল্লাটিকে জেলা শহরের যাদুঘরে পরিনত করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে ৪ বছর আগে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক মো. মনির উাদ্দন। বিক্রমপুর তথা আজকের মুন্সীগঞ্জ মুঘলদের কব্জায় রাখতে এবং বিদেশী সৈন্যদের হাত থেকে সুবেদার মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে একটি দুর্গ বা কেল্লা নির্মাণ করেন। কেল্লাটি লালবাগের চেয়ে ছোট হলেও গুরুত্ব ছিল অনেক বেশী। ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দে ইদ্রাকপুর এলাকাটি ইছামতি-ধলেশ্বরী, ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ও শীতল্যার সংগমস্থল ছিল। মেঘনা-ব্রহ্মপুত্র, ইছামতি ও ধলেশ্বরী গতি পরিবর্তনের ফলে ‘ইদ্রাকপুর ফোর্ট’ এখন মুন্সীগঞ্জ শহরের কেন্দ্রস্থল পুরাতন কাচারি সড়কের পশ্চিম পাশে কোটগাঁও এলকায় অবস্থিত। চতুর্দিকে প্রাচীর দ্বারা ঘেরা মূল দুর্গটি ড্রামের মতো। দুর্গের প্রাচীর শাপলা ফুলের পাপড়ির মতো। প্রতিটি পাপড়িতে ছিদ্র রয়েছে। ছিদ্র দিয়ে কামান ব্যবহার হতো। দুর্গের উত্তরদিকে বিশালকার প্রবেশ পথ রয়েছে। সিঁড়ি দিয়ে মূল দুর্গের চুড়ায় ওঠা যায়। মূল দুর্গটি ভূমি থেকে ২০ ফুট উঁচু। প্রাচীরের দেয়াল ১২-১৫ ফুট পুরু। দুর্গে প্রবেশপথের পাশেই একটি গুপ্ত পথ রয়েছে। কথিত আছে, এ গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় যাওয়া যেত। যদিও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় নয়, অন্য কোথাও পালানো যেত। ২১০দ্ধ২৪০ ফুট আয়তনের এ দুর্গটি। মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন নাম বিক্রমপুর। বিক্রমপুর ছিল প্রাচীন বাংলার রাজধানী। মহকুমা মুন্সীগঞ্জকে বিলুপ্ত করে ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত করা হয়।
0 Comments
Leave a Reply. |
বিভাগীয় সম্পাদকপ্রিয় পাঠক আপনাদের জন্যই আমাদের বিশেষ এ আয়োজন. তাই এ সম্পর্কে মতামত জানিয়ে আমাদের চলার পথকে আরো প্রসারিত করুন. নিউজ সার্চ
All
নিউজ আর্কাইভ
August 2017
|