খেলা ডেস্ক: এ্যাশেজ সিরিজের ১ম টেস্টে চতুর্থ দিনেই বড় ব্যবধানের জয় তুলে নিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। রোববার ব্রিসবেনে চতুর্থ দিন রোববার বৃষ্টির কবলে পড়ে ম্যাচটি। তারপরও মিশেল জনসনের বিধ্বংসি বোলিং তোপের মুখে ৩৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে হার মানতে বাধ্য হয় ইংল্যান্ড। মিশেল জনসন ৪২ রানের বিপরীতে তুলে নেন ৫ উইাকেট। ফলে ১৭৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইংলিশরা। এ জয়ের ফলে ৫ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক দল।
ভারতের কাছে তাদের মাটিতে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর থেকে বিগত ১০ টেস্টে এটি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম জয়। চলতি বছর ইংল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের কাছে ৩-০ ব্যবধানে আরো একটি সিরিজ হারে অসিরা। ফলে ২০১০ সালে পার্থে এ্যাশেজ টেস্টের পর ওই সিরিজেও ৮ ম্যাচে এটি তাদের প্রথম জয়।
চতুর্থ দিনে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুই দফা খেলা বন্ধ ছিল। দুই দফায় দুই ঘন্টারও বেশি সময় খেলা বন্ধ রাখারর পরও জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি অসিদের। আপাত দৃষ্টিতে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে গড়ানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও জনসনের বোলিং ক্যারিশমায় চতুর্থ দিনেই ফল ঘরে তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
যদিও ৫৭১ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের শুরুতেই তৃতীয়দিনের শেষ ভাগে দু’টি উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ইংলিশদের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল, তারপরও বৃষ্টির আগ্রাসনের ফলে ম্যাচটি অন্তত ড্রয়ের স্বপ্ন দেখছিল তারা।
ব্যক্তিগত ৬৫ রানে ইংিলিশ অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক বিদায় নেয়ার পরপরই ধ্বস নামে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনে। ৪ উইকেটে ১৪২ রান সংগ্রহকারী ইংলিশ দল ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে ১৬০ রানে পৌছতেই হারায় আরো চারটি উইকেট।
প্রথম ইনিংসে ৬১ রানের বিপরীতে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ইংলিশ দলকে ১৩৬ রানে আটকে দেয়া ন্যাটা পেসার জনসন দ্বিতীয় ইনিংসেও সংগ্রহ করেন ৫ উইকেট। টেস্টে এটি তার অস্টমবারের মত ৫ উইকেট সংগ্রহ করার ঘটনা। যে কারণে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটিও উঠে তার হাতে। অসি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক বলেন, ‘চমৎকার সুচনা এবং মিশেল জনসনের মত কয়েকজন খেলোয়াড়ের চমৎকার ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের ফসল হ”েছ এই জয়।
অবশ্য কুকের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি সহ দুই উইকেট নিয়ে অসিদের ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন স্পিনার নাথান লিয়ঁ। ৪৬ রান দিয়ে ২ উইকেট লাভ করেন তিনি। গাব্বায় আগের এ্যাশেজে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৫ রান সংগ্রহকারী কুক অনেকটা পরিকল্পিতভাবেই ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। কিন্তু আকষ্মিকভাবেই খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। বৃষ্টির জন্য বিরতির পর খেলা মাঠে গড়ানোর পর মাত্র ৬টি বল গড়িয়েছে। তখনই লিয়ঁ’র বাউন্সি বলে কাট করতে গিয়ে এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে তুলে দেন কুক। যেটি তালবন্দী করে ব্রাড হাডিন। কুকের পতনের পরই নাটকীয় মোড় নেয় ম্যাচে। পরবর্তী তিন উইকেটের বিনিময়ে সফরকারী ইংলিশরা দলীয় সংগ্রহ শালায় মাত্র ৯টি রান যোগ করতে পেরেছেন। এসময় আউট হন ম্যাট প্রিয়র (৪), স্টুয়ার্ট ব্রড (৪) ও গ্রায়েম সোয়ান (০)।
খেলা শেষে অধিনায়ক ক্লার্ক বলেন, ‘একটি মাত্র টেস্ট শেষ হয়েছে। আমি নিশ্চিত আরো শক্তি সঞ্চার করে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়াবে। এই সফলতা ধরে রেখে চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে হলে আমাদেরকে আরো প্রচুর কাজ করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ২৯৫ : (ব্রাড হাডিন ৯৪, মিশেল জনসন ৬৪, স্ট্রুয়ার্ট ব্র্যাড ৬/৮১)।
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৩৬ (এম কারবেরি ৪০, মিশেল জনসন ৪/৬১)।