প্রবাস ডেস্ক: বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে এক দলীয় সমাবেশে কার্যত নির্বাচনী কর্মসূচি ঘোষণা করলেও দলকে এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি না নিয়ে বরং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন।
বুধবার রাতে লন্ডন ব্রিজের কোল ঘেঁষে অবস্থিত পাঁচতারকা টাওয়ার হোটেলে অনুষ্ঠিত এক ইফতার পার্টিতে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানান।লন্ডনে প্রায় পাঁচ বছরের প্রবাসজীবনে এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় প্রকাশ্য রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তৃতা। তারেক রহমান তাঁর বক্তৃতায় কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, প্রযুক্তি, রপ্তানিমুখী অর্থনৈতিক নীতিমালা, পর্যটনসহ যেসব বিষয়ে কথা বলেছেন, তার প্রতিটিতেই পাঁচ বছরে কী পরিবর্তন বা কতটা উন্নয়ন সম্ভব, সেই চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি এসব বিষয়ে প্রবাসের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের পর আরও মতবিনিময় করবেন বলে জানিয়েছেন। স্পষ্টতই এটি আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপির দলীয় কর্মসূচি বা ইশতেহারের একটি প্রাথমিক রূপরেখা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত এই ইফতার পার্টিতে অংশ নেওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মূল্যে আমন্ত্রণপত্র কিনতে হয়েছে বলে জানা গেছে। দলীয় স্বেচ্ছাসেবক নয়, বরং পেশাদার নিরাপত্তাকর্মীদের বেষ্টনীর মধ্যে তিনি সোজা এসে মঞ্চে ওঠেন এবং ইফতারের পর আবার একইভাবে সভাস্থল ত্যাগ করেন। তবে বক্তৃতার সময় অনেকটা দলীয় কর্মশালার আঙ্গিকে বিভিন্ন বিষয়ে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন করেন এবং বিভিন্ন টেবিল থেকে কয়েকজনের মতামত নেন। লন্ডনের সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সোয়া নয়টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের পুরোটাই ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি সাইস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ইফতারপূর্ব আলোচনা সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ।ইফতার পূর্ব আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক নিজ ভাবনা প্রকাশের খোলসে আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য ইশতেহারই যেন তুলে ধরেছেন নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের সামনে।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নির্বাচন নয়, মূল ইস্যু তত্ত্বাবধায়ক সরকার সিস্টেম। ভবিষ্যতসমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্যেই এ সিস্টেম ফিরিয়ে আনতে হবে। এ সিস্টেম ফিরিয়ে আনার ওপর নির্ভর করছে একটি জনসম্পৃক্ত, গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী কোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়া বা না যাওয়ার বিষয়।