এপিপি, লন্ডন: সেইভ বাংলাদেশ আয়োজিত পাবলিক মিটিং-এ বক্তারা বলেছেন, অত্যাচার নির্যাতন করে কোন আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যায়না। জনগন ফুঁসে উঠেছে। ফ্যাসিবাদী এই আওয়ামীলীগ সরকারের সরকারের পতন এখন অনিবার্য। ইব্রাহিম কমিউনিটি সেন্টারে মঙ্গলবার ২০ সেপ্টেম্বর আয়োজন করা হয় এই পাবলিক মিটিং এর। সেইভ বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের অন্যতম নেতা ব্যারিস্টার আবুবকর মোল্লা, বাংলাদেশ সেন্টার ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট এর চেয়ারম্যান মুহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপি‘র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, খেলাফত মজলিশ যুক্তরাজ্য’র আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের সালেহ, জমিয়তুল ওলামা ইউরোপের সভাপতি মুফতি শাহ সদরুদ্দিন, ইসলামী ঐক্যজোট যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি ও জমিয়তে ওলামা ইউরোপের সেক্রেটারী মাওলানা শোয়েব আহমদ, ফ্রি মাওলানা সাঈদী ফেডারশনের আহ্বায়ক আখতার হোসাইন কাওসারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামজিক , সাংস্কৃতিক ও পেশাজিবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জনসভায় বক্তারা বলেন, নিজেদের ব্যর্থতায় দিশেহারা এই সরকার এখন জনগনের স্বাভাবিক প্রতিবাদের গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নিতে চাইছে। গণবিরোধী এই সরকার এখণ প্রজাতন্ত্রের পুলিশবাহিনীকেও ব্যবহার করছে দলীয় কর্মী হিসেবে। বক্তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলের আয়োজন করে। কিন্তু যেকোন মুল্যে রাজিৈনতক বিরোধিতাকে নির্মূল করার জন্য সরকার সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে শান্তিপূর্ণ এই মিছিলের ওপর হামলা চালায়। সারাদেশে অভিজান চালিয়ে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটি কোন সভ্য গণতান্ত্রিক দেশের নীতি হতে পারে না। বক্তারা সভায় উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বদেশ থেকে বহু দূরে থাকলেও আমরা এহেন অনাচারের বিরুদ্ধে চুপ থাকতে পারিনা। তারা বাংলাদেশের গণবিরোধী সরকারের মানববতা ও মানবাধিকার বিরোধী কর্মকান্ডকে স্থানীয় ব্রিটিশ এমপি ও সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান। বক্তারা বাংলাদেশের পুলিশবাহিনী, সেনাবাহিনী ও বিচারব্যবস্থায় কর্মরতদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনারা প্রজতান্ত্রের কর্মচারী। আপনাদের উচিত নয় কোন সরকারের পেটেয়াবাহিনীর বূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। মনে রাখবেন কোন সরকারই চিরস্থায়ী নয়। আর দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ এই সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। এমন কিছু করবেন না যাতে দেশের মানুষের সাথে আপনারদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।’ বক্তারা আরো বলেন, একটি সরকারের পায়ের তলা থেকে যখন মাটি সরে যায় তখন জেল, জুলুম এবং নির্যাতন তাদের হাতিয়ারে পরিণত হয়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী জনতার বিরোধিতা করে কোন সরকারই তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারেনা। বক্তারা আরো বলেন, ‘মুস্টিমেয় কিছু চিহ্নিত দলীয় ক্যাডারের কারণে গোটা আইন-শৃংখলা বাহিনীর বদনাম হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এসব মুখোশধারী দলীয় কর্মীরা চিহ্নিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এদের জবাব দিতে হবে। তারা বলেন, যদি দলীয় রাজনীতি করতে চান তাহলে সরকারী পোষাক খুলে ফেলুন। বক্তারা মিশর, তিউনেশিয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, গনগণ ক্ষেপে গেলে কোন বিদেশী প্রভুই স্বৈরাচারীদের রক্ষায় এগিয়ে আসে না। বক্তারা আরো বলেন, আমরা দেশের ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমের সুবদে দেখতে পেয়েছি পুলিশ একজন বিরোধীদলের কর্মীকে যেভাবে ঘিরে ধরে নির্বিচারে পিটিয়েছে তা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কোনো সভ্য সমাজে এটা কাম্য হতে পারে না। পুলিশ বিশেষ একটি দলের পক্ষে কাজ করেছে। সরকারি পোশাক পরে এ ধরনের ঘটনা লজ্জাজনক। তারা পুলিশকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সাবেক তিন আইজিপিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে না তা কেউ বলতে পারে না। তারা আরো বলেন, সভা-সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার। এ সুযোগ না দিলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।