ঢাকা, ০২ মার্চ : ছয় শতাধিক প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে রাজধানীর হাতিরঝিলে দূরপাল্লার দৌড় প্রতিযোগিতা ‘ঢাকা হাফ ম্যারাথন-২০১৮’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার ভোর ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত হাফ এবং মিনি দুটি আলাদা বিভাগে ৬২০ জন প্রতিযোগী এই ম্যারাথনে অংশ নেন। সকাল ৬টায় হাফ ম্যারাথন শুরুর ১৫ মিনিট পর শুরু হয় মিনি ম্যারাথন। প্রতিযোগীদের মধ্যে ৫০ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক।
রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন ও নাগরিকদের সুস্থভাবে জীবনযাপনে উৎসাহিত করার জন্য থাউজেন্ড মাইলস এক্সপেডিশন বাংলাদেশ ও ঢাকা রান লর্ডস নামের দুটি অ্যাডভেঞ্চার ও ক্রীড়া সংগঠন যৌথভাবে এই দূরপাল্লার দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
হাফ ম্যারাথনে অংশ নেওয়া প্রতিযোগীরা ২১ দশমিক ১ কিলোমিটার দৌড়েছেন। এই পথ পাড়ি দিতে পুলিশ কনকর্ড প্লাজা থেকে গোটা হাতিরঝিল এলাকা তিন বার ঘুরতে হয়েছে প্রতিযোগীদের। দৌড় শেষ করার জন্য হাফ ম্যারাথনের প্রতিযোগীদের বরাদ্দকৃত সময় ছিল ৩ ঘণ্টা। আর মিনি ম্যারাথনের প্রতিযোগীরা দৌড়েছেন ৭ কিলোমিটার। তাঁরা একবার হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে এসেছেন। তাঁদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ ঘণ্টা সময়।
হাফ ম্যারাথনে অংশ নিয়ে পুরুষ ক্যাটাগরিতে প্রথম হন আবদুর রহমান। তিনি দৌড় শেষ করতে ১ ঘণ্টা ২৭ মিনিট সময় নেন। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী মাহবুবুর রহমান তাঁর দৌড় শেষ করেন ১ ঘণ্টা ৩৭ মিনিটে। আর তৃতীয় মো. মাহফুজুল হক সময় নেন ১ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট।
একই বিভাগের নারী ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন সিউতি সবুর। তিনি সময় নেন ২ ঘণ্টা ২৮ মিনিট। আর মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় হন সিফাত ফাহমিদা। তাঁর সময় লাগে ২ ঘণ্টা ২৯ মিনিট। তৃতীয় আনজুমান আরা সময় নেন ২ ঘণ্টা ৩১ মিনিট।
এদিকে মিনি ম্যারাথনের সাধারণ ক্যাটাগরিতে ২৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করে প্রথম হন শরিফুল ইসলাম। এই ক্যাটাগরিতে ২৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করে দ্বিতীয় হন ক্লারা ডি গিরোলামো। তৃতীয় হন মো. রুম্মান সিদ্দীক। তাঁর সময় লাগে ২৯ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড।
এই বিভাগের নারী ক্যাটাগরিতে প্রথম হন সাধারণ ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ক্লারা ডি গিরোলামো। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হন মৌসুমী আক্তার ও স্যেজি ফ্যালফাউল। দৌড় শেষ করতে তাঁরা যথাক্রমে ৪০ মিনিট ও ৪৪ মিনিট সময় নেন।
এই ম্যারাথন আয়োজনে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। আর আয়োজনের মূল পৃষ্ঠপোষক ছিল নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড। আরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড এবং মিল্ভিক বাংলাদেশ।
দৌড় শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান। এমন একটি ‘পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর’ আয়োজনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট লোকজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পর্যটন এবং খেলাধুলা বিশ্বের কাছে নিজের দেশকে পরিচিত করে তোলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ম্যারাথন বাংলাদেশে সেই অর্থে প্রচলিত না হলেও আজকে এখানে প্রতিযোগীরা যেভাবে উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন, তা ইতিবাচক একটি ঘটনা। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয়।
আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্টেফান নর্দে আগামী বছর বাংলাদেশে একটি পুরো ম্যারাথন আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা হাফ ম্যারাথন-২০১৮-এর আহ্বায়ক এবং আয়োজক সংগঠন ঢাকা রান লর্ডসের পরিচালক ইমতিয়াজ এলাহী বলেন, ‘পরবর্তী ম্যারাথনগুলোতে যেন আরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নিতে পারেন সে ব্যাপারে আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে।’
সমাপনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন মিলভিক বাংলাদেশের এ-দেশীয় পরিচালক আকিরা মরিতা, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন পিল্লাই প্রমুখ।