রোববার ১৮ দলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় নেতা কর্মীদের ওপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিকালে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ কথা বলেন। বিএনপির নগর কার্যালয় চত্বরে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।” পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই সরকার শেষ সরকার নয়।” দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণ না করার আহবান জানিয়ে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “লাঠি টিয়ার গ্যাস দিয়ে কখনো চট্টগ্রামের আন্দোলন দমানো যাবে না।”
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘স্বৈরাচার তোমার সময় শেষ। এখন দুটি পথ খোলা আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া। আর নয় তো কঠিন উচ্চমূল্য দিয়ে কৃত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে ক্ষমতা ত্যাগ।’’
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের গণতন্ত্রপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক মানুষ সরকারি পেটুয়া বাহিনীকে যেভাবে প্রতিরোধ করেছে তাতে প্রমাণ হয়, এই সরকারের দিন শেষ হয়ে এসেছে।”
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। এই সরকারকে আর বেশিদিন সময় দেয়া যাবে না।”
আমীর খসরু বলেন, “রোববারের পুলিশী হামলার প্রতিবাদে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ যেভাবে সাহসী ভূমিকা নিয়ে সরকারের পেটুয়া বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছে তাতে আমাদের সাহস অনেক গুণ বেড়ে গেছে।” যতই নির্যাতন মামলা দেয়া হোক চট্টগ্রামের সাহসী নেতাকর্মীরা এখন প্রস্তুত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, সাবেক মন্ত্রী ও দক্ষিণ জেলা সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, এএম নাজিম উদ্দিন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাত হোসেন, আবু সুফিয়ান, মাহবুবের রহমান শামীম, অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, গাজী শাহজাহান জুয়েল, অ্যাডভোকেট আবদুস ছাত্তার, আবুল হাসেম বক্কর, মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী, বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও ইফতেখার চৌধুরী মহসিন।
এদিকে সোমবারের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও র্যাব ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়। র্যাবের ১৫টি গাড়ি সার্কিট হাউস ও নেভাল এভিনিউ চত্বরে দুপুর থেকে অবস্থান নেয়। এছাড়া বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থায় নেয় প্রায় তিন প্লাটুন পুলিশ। নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় শত শত পুলিশ ও র্যাব।
বিকেল সাড়ে তিনটায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল কাজীর দেউড়ি থেকে নাসিমন ভবনের সামনে রাস্তার ওপরে এসে অবস্থান নিলে পুলিশ বাধা দেয়। নোমান বাধা উপেক্ষা করে রাস্তার উপর আইল্যান্ডে বসে পড়েন এবং তাৎক্ষনিক সমাবেশে নোমান বলেন, “হিটলারী কায়দায় রোববার দলীয় কার্যালয়ে যেভাবে পুলিশের একজন কর্মকর্তার নির্দেশে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এর বিচার জনগণের আদালতে হবেই।”
এদিকে উত্তর জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম চৌধুরীসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল কাজীর দেউড়ি ও লাভলেইন এলাকা হয়ে নাসিমন ভবনে এক গণসমাবেশের আয়োজন করে।