ঢাকা: দেশে একতরফা নির্বাচন হলে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, জোর করে এক তরফা নির্বাচন করলে বাংলাদেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। আমাদের সেটা কাম্য নয়।
চলমান সঙ্কট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেছে বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের একটি প্রতিনিধিদল। শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁরা রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান।
পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলটি বিএনপির দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, আজ গণতন্ত্রের নামে এখানে এসে যা দেখলাম, তা বর্বর সমাজেও সম্ভব হয় না। যেখানে বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। এটি গণতন্ত্রের প্রতি পদাঘাত।
তিনি বলেন, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা একাত্তরকে হার মানিয়েছে। এটি লজ্জাজনক, গণতন্ত্রের প্রতি পদাঘাত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, জোর করে নির্বাচন করতে গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। আমরা তা চাই না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, গণতন্ত্র ও দেশকে বাঁচান, নিজে বাঁচুন। দমননীতিতে সাময়িক ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু পরিণতি ভয়াবহ হবে।
বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিতর্কিত করতে সরকার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করছে ও আগুন দিচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দয়া করে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সবাই সে নির্বাচনে আসবে। নিজে বাঁচুন, দেশ ও গণতন্ত্রকে বাঁচান।
বিএনপি কার্যালয়ে তল্লাশির নামে ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমরা লজ্জিত।
খন্দকার মাহবুব অভিযোগ করে বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলন বিতর্কিত করতে সরকার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের এ ধরণের ঘটনার ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে মাহবুব হোসেন বলেন, একটি মাত্র লোকের ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তার একটি মাত্র টেলিফোনে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমরা সরেজমিনে দেখতে এসেছি। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এভাবে অনাচার হবে এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, আমিরুল ইসলাম কাগুজী, মোহাম্মদ মহাসিন হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।
শুক্রবার ভোরে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বিএনপি যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানকালে কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।