ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কলেজছাত্র বখতিয়ার হত্যা মামলার আসামিরা জামিন নিয়ে আত্মগোপন করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এক আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে লাপাত্তা। তাই মামলার দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। আগামীকাল রোববার বখিতয়ারের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে উত্তর যাত্রাবাড়ীর ৯৬ নম্বর বাড়িতে ডাকাতদের হাতে খুন হন ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার্থী বখতিয়ার মোহাম্মদ লতিফ। তার বাবা ব্যবসায়ী জাহিদ আল লতিফ খোকা। ডাকাতরা তাদের বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে ঢোকে। এরপর জানালার গ্রিল কেটে তারা ঘরের ভেতরে ঢুকলে তাদের বাধা দিলে বখতিয়ারকে গুলিতে হত্যা করে সোনার অলঙ্কার ও টাকা লুট করে।
এ ঘটনায় বখতিয়ারের বাবা অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ইউনুস আলী তদন্ত শেষে গত বছরের ১৭ এপ্রিল ৭ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে। অভিযুক্তরা হলেন- খলিল, আকতার ওরফে আদেল, রুস্তম আলী হাওলাদার, জালাল উদ্দিন, হাবিবুর রহমান ওরফে ডাকাত হাবিব, সবুজ ওরফে স্বপন ও মতি ওরফে জিতু। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে ডিবি। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়। ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত-২ এ ওই ডাকাতি ও হত্যা মামলার বিচার চলছে। কিন্তু সম্প্রতি আসামি মতি ওরফে জিতু হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপন করেছে।
বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন এর বার্তা সম্পাদক ও বখতিয়ারের ফুপু শারমীন রিনভী বলেন, 'বখতিয়ার আমার ভাইয়ের ছেলে হলেও, আমার নিজের ছেলের মতোই আদরের ছিল। পরিবারের সকলের নয়নের মনি ছিল বখতিয়ার। অথচ একদল ডাকাত সব শেষ করে দিল।' তিনি বলেন, 'আমাদের এখন একটাই চাওয়া খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। বার বার খুনিরা জামিনে বেরিয়ে আসছে। এতে করে বিচার প্রলম্বিত হচ্ছে। এরফলে এক সময় হয়তো এরা হারিয়ে যাবে।'
সাংবাদিক রিনভী আরো বলেন, 'আমরা দেশবাসীর কথা, সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরি, তাদের ন্যয় বিচার পেতে সহায়তা করি। অথচ আমার ভাতিজা খুনের বিচার বার বার প্রলম্বিত হচ্ছে। আমাদের পরিবারের একটাই চাওয়া- খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক।'
সূত্র জানায়, অন্য আসামিরাও জামিনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যে কোনো সময় জামিন নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারে তারা।
বখতিয়ারের বাবা জাহিদ আল লতিফ খোকা বলেন, মামলার বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে। তাই আসামিরা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি হলে আসামিরা জামিন নেয়ার সুযোগ পাবে না। এছাড়া মামলা পরিচালনায় হয়রানি থেকেও রেহাই পাবেন তারা।