উদয়ন পাল, কলকাতা: তিস্তা-চুক্তি বাতিল হয়েছে ভালই হয়েছে। কারণ, সম্পূর্ণ ভুল একটি তথ্যর উপর ভিত্তি করে এই চুক্তি সম্পন্ন হতে চলেছিল। পানি বন্টনের যেটুকু তথ্য দেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে অতটা পানি তিস্তায় পাওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও যদি এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে যেত, তা হলেও চুক্তি বাস্তবায়িত করা যেত না। কারণ, বর্ষার কয়েকমাস বাদ দিলে সারা বছর পানির অপ্রতুলতা থাকায় শর্ত মেনে পানি বন্টন করা সম্ভব হত না। বর্ষায় তিস্তায় পাওয়া যায় প্রায় ৭০ হাজার কিউসেক পানি। কিন্তু শুখা মরশুমে এপ্রিল মে মাস নাগাদ তা নেমে আসে ৪০০ কিউসেকে। সংবাদ মাধ্যমের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তি অনুসারে শুখা মরশুমে বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা ৩৩ থেকে ৫০ হাজার কিউসেক পানি। নদীতে পানি না থাকলেও এই পানি দেওয়া হত কীভাবে ? আবার চুক্তি মানা না হলে, আন্তর্জাতিক সেই সঙ্কট মোকাবিলা করা হত কিসের ভিত্তিতে ? এখন প্রশ্ন হল, তিস্তায় পানি বন্টনের হিসাব কিসের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল ? অর্থাৎ প্রথমে আমি যা বলেছি, তাই ঠিক, ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছিল। সত্যি বলতে কী, কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়। আসলে এই চুক্তিটা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাধারণ মানুষকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছিল। এমনকী উত্তরবঙ্গের তিস্তা পাড়ের মানুষও এনিয়ে বিশেষ কিছু জানেন না। আমার প্রশ্ন হল, যাদের পানি দেওয়ার জন্য এত আয়োজন, তাদের না জানিয়ে আসলে কার স্বার্থ রক্ষায় এই চুক্তি হতে চলেছিল ? এখন কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এই তিস্তা চুক্তি নিয়ে অবিলম্বে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা।
আমাদের মুখ্যমন্ত্রী একেবারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ছাড়া আর কোনও বিকল্প তাঁর ছিল না। এই ঘটনায় যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের মর্যাদা হানির সম্ভাবনা দেখছেন, তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন যে, মমতা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের স্বার্থ দেখটাই তাঁর প্রথম কাজ। যেভাবে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সেই শর্ত মেনে চুক্তিটা হয়ে গেলে, পানি না পেয়ে চাষাবাদ মার খেত উত্তরবঙ্গে। তাই আমি মনে করি, মমতা যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। আর তা ছাড়া শুধু তো বাংলাদেশ নয়, সিকিমও একটি সমস্যা হয়ে উঠেছে। তিস্তার উৎস সিকিম। সিকিমে তিস্তার উপর ২৩টি বাঁধ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। আমার তো মনে হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে কথা চালানোর পাশাপাশি ভারত সরকারের উচিত, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সিকিমের সঙ্গেও অবিলম্বে কথা শুরু করা।
১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক নদী পানি ব্যবহার সংক্রান্ত আইন অনুসারে যুক্তিগ্রাহ্য এবং আনুপাতিক হারে (রিজনেবল অ্যান্ড ইক্যুইটেবল) পানিবন্টন হওয়া উচিত ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে। তা হলে কিন্তু ভারতের আরও বেশি পানি পাওয়া উচিত। কারণ, ১২ হাজার ৩৬১ বর্গ কিলোমিটার ব্যাপী তিস্তা অববাহিকায় মাত্র ১৬ শতাংশ বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে। ৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা নদীর মাত্র ১২১ কিলোমিটার বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে প্রবাহিত। আন্তর্জাতিক নিয়মকে মান্যতা দিতে বাধ্য দুই দেশের সরকারই। ফলে খুব সহজভাবেই বলা যায়, চুক্তি প্রকাশিত অংশ দেখে মনে হচ্ছে, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘিত হত।
এখন কী করা উচিতÑ তিস্তায় পানির পরিমাণ তো বাড়ানো যাচ্ছে না। কাজেই পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট রেখে ভারত এবং বাংলাদেশকে চাহিদার ক্ষেত্রে সংযত হতে হবে। নদীর বাস্তুতান্ত্রিক পরিষেবাকে অক্ষুণœ রাখার জন্য প্রবাহকে ছেড়ে রাখতে হবে। শুখা মরশুমে সেচ নির্ভরতা কমাতে হবে। অর্থাৎ শুখা মরুশুমে এমন ফসল চাষ করার কথা ভাবতে হবে, যাতে পানি কম লাগে। আমার কাছে জানতে চাইলে এসময় বোরো ধানের চাষ না করার পরামর্শ দেব আমি, বিকল্প কিছু ভাবতে হবে আমাদের। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছে কিছু জানতে চাইলে, আমি সানন্দে রাজি আছি।
আমাদের মুখ্যমন্ত্রী একেবারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ছাড়া আর কোনও বিকল্প তাঁর ছিল না। এই ঘটনায় যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের মর্যাদা হানির সম্ভাবনা দেখছেন, তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন যে, মমতা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের স্বার্থ দেখটাই তাঁর প্রথম কাজ। যেভাবে বলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সেই শর্ত মেনে চুক্তিটা হয়ে গেলে, পানি না পেয়ে চাষাবাদ মার খেত উত্তরবঙ্গে। তাই আমি মনে করি, মমতা যা করেছেন, ঠিকই করেছেন। আর তা ছাড়া শুধু তো বাংলাদেশ নয়, সিকিমও একটি সমস্যা হয়ে উঠেছে। তিস্তার উৎস সিকিম। সিকিমে তিস্তার উপর ২৩টি বাঁধ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। আমার তো মনে হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে কথা চালানোর পাশাপাশি ভারত সরকারের উচিত, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সিকিমের সঙ্গেও অবিলম্বে কথা শুরু করা।
১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক নদী পানি ব্যবহার সংক্রান্ত আইন অনুসারে যুক্তিগ্রাহ্য এবং আনুপাতিক হারে (রিজনেবল অ্যান্ড ইক্যুইটেবল) পানিবন্টন হওয়া উচিত ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে। তা হলে কিন্তু ভারতের আরও বেশি পানি পাওয়া উচিত। কারণ, ১২ হাজার ৩৬১ বর্গ কিলোমিটার ব্যাপী তিস্তা অববাহিকায় মাত্র ১৬ শতাংশ বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে। ৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা নদীর মাত্র ১২১ কিলোমিটার বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে প্রবাহিত। আন্তর্জাতিক নিয়মকে মান্যতা দিতে বাধ্য দুই দেশের সরকারই। ফলে খুব সহজভাবেই বলা যায়, চুক্তি প্রকাশিত অংশ দেখে মনে হচ্ছে, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘিত হত।
এখন কী করা উচিতÑ তিস্তায় পানির পরিমাণ তো বাড়ানো যাচ্ছে না। কাজেই পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট রেখে ভারত এবং বাংলাদেশকে চাহিদার ক্ষেত্রে সংযত হতে হবে। নদীর বাস্তুতান্ত্রিক পরিষেবাকে অক্ষুণœ রাখার জন্য প্রবাহকে ছেড়ে রাখতে হবে। শুখা মরশুমে সেচ নির্ভরতা কমাতে হবে। অর্থাৎ শুখা মরুশুমে এমন ফসল চাষ করার কথা ভাবতে হবে, যাতে পানি কম লাগে। আমার কাছে জানতে চাইলে এসময় বোরো ধানের চাষ না করার পরামর্শ দেব আমি, বিকল্প কিছু ভাবতে হবে আমাদের। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছে কিছু জানতে চাইলে, আমি সানন্দে রাজি আছি।