আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরাকের আবু গারিব কারাগারে হামলা চালিয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্যসহ সহযোগীদের মুক্ত করে নিয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা। এ সময় কারাগার থেকে শত শত কয়েদি পালিয়ে যায়। রোববার রাতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে ইরাকি কর্তৃপক্ষ।কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই কারাগারটিতে জঙ্গিদের ভয়াবহ হামলায় ১০ পুলিশসহ আল কায়েদার চার জঙ্গি নিহত হয়।
রাজধানী বাগদাদের কাছের এই কারাগারটির সবগুলো গেটে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে হামলা চালায় আত্মঘাতী হামলাকারীরা। এভাবে তারা কারাগারে ঢোকার পথ করে নেয়। এ সময় কারারক্ষীদের ওপর মর্টার ও রকেট চালিত গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করে আরেক দল জঙ্গি।
অন্যান্য জঙ্গিরা সশস্ত্র অবস্থায় কারাগারের সামনের প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়। তারা বাগদাদ থেকে আসা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রতিরোধে লড়াই শুরু করে। লড়াই চলার সময় কিছু জঙ্গি শরীরে বোমা বেঁধে পায়ে হেঁটে কারাগারে প্রবেশ করে। তারা বন্দিদের মুক্ত করে নিয়ে যায়।
রোববার সারারাত লড়াই চলার পর সোমবার সকালে সেনা হেলিকপ্টার পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কারাগার থেকে সাজাপ্রাপ্ত শত শত কয়েদি পালিয়ে যায়।
পালিয়ে যাওয়া বন্দির সংখ্যা ৫শ’ বলে জানিয়েছেন ইরাকি পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য হাকিম আল জামালি। পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের বেশিরভাগই আল কায়েদার সদস্য এবং তাদের অনেকেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন বলে জানান তিনি।
পালিয়ে যাওয়া কয়েকজনকে নিরাপত্তা বাহিনী ফের গ্রেপ্তার করলেও অধিকাংশ বন্দি পালিয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ঘটনাটিকে “আল কায়েদার সন্ত্রাসী হামলা” বলে অভিহিত করেছেন।
একই সময়ে একই কায়দায় বাগদাদ থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরের তাজি শহরের কারাগারেও হামলা চালায় জঙ্গিরা। কিন্তু রক্ষীদের প্রতিরোধের কারণে কোনো বন্দিকে মুক্ত করতে পারেনি তারা। ওই লড়াইয়ে ১৬ রক্ষী ও ছয় জঙ্গি নিহত হয়। এক দশক আগে ইরাকে মার্কিন দখলদারিত্বের কালে আবু গারিব কারাগার সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল। ওই সময় কারাবন্দিদের ওপর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন সেনাদের নির্মম অত্যাচারের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।