ঢাকা: ২৯ এপ্রিল : বাংলাদেশের উপকূলবাসীর স্বজন হারানোর দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনে এক মহা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ল-ভ- হয়ে যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা। ভয়াল ২৯ এপ্রিল উপকূলবাসীর বেদনার দিন হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। ওই প্রাকৃতির দুর্যোগের ২৭ বছর অতিবাহিত হলেও কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের দিবাগত মধ্যরাতে কক্সবাজার, চট্রগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী,বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ১২ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাস আঘাত হানে। এতে লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটার পাশাপাশি নিখোঁজ হয় অনেক মানুষ। মারা যায় ৭০ হাজার গবাদি পশু। ঐ রাতের তা-বে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে সরকারি হিসেবে রয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেবে এ ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হবে বলে জানান কোষ্টাল জার্নালিষ্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আতা উল্লাহ খাঁন।
সে প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়ের ২৬ বছর অতিবাহিত হলেও কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত। তার সাথে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। এখনো বিভিন্ন স্থানে খোলা রয়েছে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। ফলে বিভিন্ন উপকূলীয় লোকালয়ে সাগরের লোনাজল এখনো প্রবেশ করছে।
কক্সবাজারের মহেশখালীর উপজেলা চেয়ারম্যান হোছাইন ইব্রাহিম বলেন, গত ২০ বছর ধরে তার এলাকায় ৩৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ খোলা রয়েছে।
টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বেড়িবাধেঁর কারণে। এ বাধঁ নির্মানের জন্য ১শ ৬ কোটি টাকা বরাদ্ধ হলে ও এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ঐ এলাকার মানুষ।
কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরং ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী বলেন,আমার এলাকার সিংহভাগ বেড়িবাধঁ এখনো খোলা, কিছুদিন আগে কিছু বাঁধের কাজ শুরু হলে ও তাতে ঠিকাদার ব্যাপক অনিয়ম করছে। অভিযোগ করার পরও কোন কাজ হচ্ছে না জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাবিবুর রহমান জানান, কক্সবাজারের ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাধেঁর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার এখনো খোলা। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৫০ কিলোমিটার। তবে ৬৫ কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়েছে বলে ও জানান তিনি। এসবের সাথে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। ফলে উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত।
উপকূলবাসীর একটাই দাবি তা হলো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে যেন দেশের উপকূলকে সাগরের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করা হয়।