কাঠমান্ডু: এ অঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে সকল সার্ক দেশের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালনোর আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে আজ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা আজ সকালে কাঠমান্ডুর সিটি হলে দু’দিনের এই শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
সম্মেলনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সাথে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভূটানের প্রধানমন্ত্রী টিশেরিং তোবগায়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ূম, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মহিন্দ রাজাপাকসে যোগ দিয়েছেন।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘শান্তি ও উন্নয়নে গভীর সংহতি’। সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা বলেন, সন্ত্রাসবাদ আমাদের অভিন্ন শত্রু এবং দক্ষিণ এশিয়া এর ভয়াবহ শিকার। সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা এবং ধর্মীয় মৌলবাদ দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ব্যাহত করছে। তাই সন্ত্রাসবাদ দমনে আমাদেরকে সম্মিলিত ও দ্ব্যর্থহীন পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকল প্রতিষ্ঠান ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে স্বচ্ছ ও কার্যকর সহযোগিতাসহ সার্কের আওতায় একটি প্রাতিষ্ঠানিক ফ্রেমওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এর আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ূম নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার কাছে সার্কের চেয়ারম্যানশিপ হস্তান্তর করেন।
১৯৮৭ সালের নভেম্বর এবং ২০০২ সালের জানুয়ারির পর এনিয়ে তৃতীয়বার নেপালে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০০৮ সালে নেপাল ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে পরিণত হওয়ার পর এই শীর্ষ সম্মেলন কূটনৈতিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মরিশাস, মায়ানমার, ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৯ জন পর্যবেক্ষকও যোগ দিয়েছেন।
আগামীকাল কাঠমান্ডু ঘোষণা গ্রহণ এবং কয়েকটি আঞ্চলিক চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে কাঠমান্ডু সিটি হলে শীর্ষ সম্মেলন শেষ হবে। শীর্ষ সম্মেলনে মঙ্গলবার সমাপ্ত হওয়া সার্ক মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক এবং এর আগে সার্ক মন্ত্রীদের সভার প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
শীর্ষ সম্মেলনে আঞ্চলিক পর্যায়ে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। এগুলো হচ্ছে- সার্ক এগ্রিমেন্ট অন মোটর ভেহিকেলস, সার্ক এগ্রিমেন্ট অন রেলওয়ে সার্ভিস এবং সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট অন এনার্জি কো-অপারেশন।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহেন্দ্র বাহাদুর পান্ডে বলেছেন, এসব চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
সার্ক হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক সংস্থা। ১৯৮০’র দশকে দক্ষিণ এশিয়ার এ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত সংগঠনটির ধারণা আসে এবং ১৯৮৫ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় এর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখন বাংলাদেশ, ভূটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলংকাকে নিয়ে সার্ক গঠিত হয়। এরপর আফগানিস্তানকে নতুন সদস্য ও বেশকয়েকটি দেশকে পর্যবেক্ষক হিসেবে গ্রহণের মধ্য দিয়ে এর সম্প্রসারণ ঘটে।