ঢাকা, ২৭ অক্টোবর : মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে ফোন করে রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত মানবিক সংকট ও সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিদার নয়ার্ট এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান বলে শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন টিলারসন। এ সময় তিনি রাখাইন রাজ্যের সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি সেখানে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের প্রতি আহ্বান জানান।
হিদার নয়ার্ট বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধে এবং বাস্তুচ্যুত লোকজনের, বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদে ঘরে ফেরার পথ তৈরি করতে সরকারকে সহায়তা দিতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগগুলো উঠেছে সেগুলোর বিষয়ে সম্পূর্ণ ও স্বাধীন তদন্ত এবং সেখানে জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করার জন্যও দেশটির সেনাপ্রধানকে বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট পুলিশের বেশ কিছু চৌকিতে হামলার জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করে তাদের দমনের নামে সেখানে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। এই অভিযান শুরুর পর সেখান থেকে দলে দলে পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা বলছে, বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিরীহ রোহিঙ্গাদের দমন করছে এবং তাদের নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার পাশাপাশি তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধন করছে মিয়ানমার।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাখাইনে বিদ্রোহীদের দমনেই সেনা অভিযান চালানো হয়। আর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরাই রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে বলেও দাবি করে তারা।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধানকে ফোন করে রাখাইন সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, 'রাখাইনে যেসব সহিংসতার খবর আসছে, বিশ্ব তা দেখেও চুপ করে থাকতে পারে না।ৃ যা ঘটছে সেজন্য আমরা মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকেই দায়ী করব।