সোমবার রাতে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বার্মিংহ্যাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ১০০ দাঙ্গাবাজকে। এনফিল্ড, হ্যাকনি, ইলিং, পেকহ্যাম, ক্রয়ডন, ইস্টহ্যাম, বমলি, ক্ল্যাপহ্যাম, উইলউইচ, লুইশ্যাম, ক্যামডেন, বার্কিংসহ লন্ডন শহরের অনেক এলাকাই এখন যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। সারারাত লন্ডন ছিলো পুলিশ, অগ্নিনির্বাপক বাহিনী ও অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনে মুখর। অনেক এলাকায় তরুণরা পুলিশের সামনেই গাড়ি ও দোকানপাটে ভাংচুর চালায়। হামলা হয়েছে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটসেও।
বেথনাল গ্রিন, ওয়াইটচ্যাপেল ও স্টেপনিতেও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। ওয়াইটচ্যাপেলে যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম মসজিদ লন্ডন মুসলিম সেন্টারে দাঙ্গাকারীরা হামলা চালানোর চেষ্টা করলে শত শত মানুষের প্রতিরোধে তারা পিছু হটে। মসজিদটির সামনে দাঙ্গা পুলিশও অবস্থান নেয়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বেথনাল গ্রিন ও বো এলাকার বাঙালি এমপি রুশনারা আলী।
শহরের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সোমবার রাত থেকে লন্ডনে ১৭শ' অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দাঙ্গাবাজ ও লুটেরাদের ভয়ে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের আগে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পুলিশও ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। দাঙ্গা, ভাঙচুরের পরে লন্ডনের অনেক এলাকাই এখন প্রায় অচল। রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বন্ধ করা হয়েছে অনেক পাতাল রেল স্টেশনও।
দাঙ্গার কারণে মঙ্গল ও বুধবার পূর্বনির্ধারিত সব ফুটবল খেলা বাতিল করা হয়েছে। অগাস্টের শেষে অনুষ্ঠেয় নটিং হিল কার্নিভাল বাতিলের দাবিও উঠেছে। প্রতিবছর নটিংহিল কার্নিভালে ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হয়। বর্তমান অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, আগামী বছর লন্ডনে অলিম্পিক গেমস চলার সময় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে কীভাবে?
শনিবার উত্তর লন্ডনের টটেনহ্যামে পুলিশের গুলিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হওয়ার পরেই দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। রোববার রাতে লন্ডনের এনফিল্ড, ব্রিক্সটন, ওয়ালথামস্টো, চিফোর্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছৃঙ্খল তরুণরা ভাঙচুর, লুটতরাজ ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। উত্তর লন্ডনের এনফিল্ডের সনি ইলেক্ট্রনিকসের ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয় দাঙ্গাকারীরা।
নিজ সন্তান কোথায় আছে তা খুঁজে নিয়ে তাদের বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমান্ডার টিম গুডউইন। গুডউইন বলেন, "রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের কারণে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।"