আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বে সাড়া জাগানো ওয়েবাসাইট উইকিলিকসে বিপুল পরিমাণ গোপন নথি সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করায় ক্ষমা চেয়েছেন মার্কিন সেনাসদস্য ব্র্যাডলি ম্যানিং।
বৃহস্পতিবার মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ফোর্ট মিডে স্থাপিত মার্কিন সামরিক আদালতে শুনানির সময় নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে ম্যানিং বলেন, তিনি ভুল করে ভেবেছিলেন পৃথিবীটাকে ভালো কিছুর জন্য পরিবর্তন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘অতীতের দিকে তাকালে মনে হয় অবশ্যই বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যে থেকে কাজ করা উচিৎ ছিল।’
আদালতে ম্যানিংয়ের শুনানি চলাকালে এই প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন ম্যানিং। কাঠগঁড়ায় অত্যন্ত শান্ত এবং বিনয়ী ছিলেন তিনি। বিচারকের সামনে অনুতপ্ত হয়ে, নিজে একজন কনিষ্ঠ সৈনিক উল্লেখ করে ম্যানিং বলেন, ‘এই পৃথিবীতে আমি কীভাবে পারলাম…এটা ভাবতে যে আমি এই পৃথিবীটাকে বদলাতে পারবো।’
তবে ম্যানিংয়ের বক্তব্যের স্ক্রিপ্টটা তৈরি করা ছিল। তিনি খুব দ্রুত সেটি দেখে দেখে পড়ে যান। এসময় তার হাত ভীষণভাবে কাঁপছিল।
ম্যানিং বলেন, ‘আমার কাজে মানুষ কষ্ট পাওয়ায় আমি দুঃখিত। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করায় আমি দুঃখিত। আমার কাজে অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফলের জন্যে আমি ক্ষমা চাইছি।’
এ বছরের জুলাইয়ে ম্যানিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার ৯০ বছরেরও বেশি সময়ের কারাদণ্ড হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে উইকিলিকসকে বিপুল পরিমাণ গোপন নথি সরবরাহ করায় মার্কিন সেনাসদস্য ব্র্যাডলি ম্যানিং বিচারের রায়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত হন। তবে তার বিরুদ্ধে শত্রুকে সহায়তা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
২০১২ সালের জুনে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের ফোর্ট মিডে স্থাপিত মার্কিন সামরিক আদালতে ম্যানিংয়ের বিচারকাজ শুরু হয়।
ম্যানিং মার্কিন গোপন তথ্য ফাঁস করার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘শত্রুকে সহায়তা’ করার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ম্যানিংয়ের বিরুদ্ধে মোট ২২টি অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে গোয়েন্দাগিরি, চুরি এবং সামরিক বাহিনীর কম্পিউটার ব্যবহারের বিধিবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মী ম্যানিং ইরাকে কর্মরত অবস্থায় ২০১০ সালে গ্রেপ্তার হন।