উত্তর ভারতীয় রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার এইচ সি যোশী জানান, চারটি এ সি কোচ, পাঁচটি স্লিপার কোচ-সহ ১৩টি সাধারণ কোচের বগি লাইন চ্যুত হয়। এদিকে ভারতীয় রেলের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, নিহতদের পরিবার পাঁচ লাখ টাকা ও যাঁরা গুরুত্বর আহত হয়েছেন সেই সমস্ত যাত্রীদের এক টাকা ও সাধারণ আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী নিহতদের এক লাখ টাকা ও গুরুত্বর আহতদের ৫০ হাজার টাকা ও সাধারণভাবে যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
এপিপি, কলকাতা : ভারতের উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্মৌ থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে মালয়া স্টেশনের ফরিদপুরের কাছে দিল্লি-হাওড়া গামী কালকা মেলের ১৩টি বগি লাইন চ্যুত হয়। ভারতীয় সময় দুপুর ১২.১০ মিনিটে ট্রেনটি লাইন চ্যুত হয়। উক্ত ঘটনায় ২০ জন যাত্রী ঘটনা স্থলে মারা যান এবং ১০০ জনের বেশি গুরুতর আহত হয়েছে। স্থানীয় মানুষজন ও সরকারী নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্য চালায়। আহতদের ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এলাহবাদ ও কানপুর থেকে দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন এসে বগির মধ্যে আটকে থাকা যাত্রীদের গ্যাস কাটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সাহায্যে উদ্ধার করে। ঘটনার পর ঐ লাইনের কিছু ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তৎপরতার সাথে কাজ চালিয়ে বিকেল থেকে আমার স্বাভাবিক ভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর ভারতীয় রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার এইচ সি যোশী জানান, চারটি এ সি কোচ, পাঁচটি স্লিপার কোচ-সহ ১৩টি সাধারণ কোচের বগি লাইন চ্যুত হয়। এদিকে ভারতীয় রেলের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, নিহতদের পরিবার পাঁচ লাখ টাকা ও যাঁরা গুরুত্বর আহত হয়েছেন সেই সমস্ত যাত্রীদের এক টাকা ও সাধারণ আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী নিহতদের এক লাখ টাকা ও গুরুত্বর আহতদের ৫০ হাজার টাকা ও সাধারণভাবে যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
0 Comments
এপিপি, কলকাতা: ভারতে বিভিন্ন দলের সাংসদদের জন্য সুখবর ! সাংসদরা নিজ-নিজ কেন্দ্রে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্য বছরে আর দু’কোটি নয়, এখন থেকে তাঁরা পাবেন পাঁচ কোটি টাকা। মানে, পাঁচ বছরে পাবেন পঁচিশ কোটি। সাংসদদের কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্পে (‘এমপি ল্যাডস্’) এই বাড়তি অর্থবরাদ্দের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে গত পয়লা এপ্রিল থেকেই এই বৃদ্ধি কার্যকর হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অম্বিকা সোনি সাংবাদিকদের এই খবর দিয়ে জানান, এর ফলে বছরে বাড়তি দু’হাজার তিনশো সত্তর কোটি টাকা খরচ হবে। এতদিন ‘এমপি ল্যাডস্’ প্রকল্পে বছরে খরচ হত এক হাজার পাঁচশো আশি কোটি টাকা। বাড়তি বরাদ্দের ফলে তা গিয়ে দাঁড়াবে তিন হাজার সাড়ে ন’শো কোটি টাকায়। তাঁদের নিজ-নিজ সংসদীয় কেন্দ্র-এলাকায় খাবার পানি-নিকাশি-শিক্ষা-জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা পূরণ করতে সাংসদরা বহুদিন ধরেই ওই বরাদ্দ-বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
উদয়ন পাল, কলকাতা : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩০ জুন ২০১১ তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে যে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী গৃহীত হয়েছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিএএএমবি (ক্যাম্পেন এগেইনষ্ট অ্যাট্রোসিটিস অন মাইনোরিটিস ইন বাংলাদেশ) নামক সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতার প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে এই ‘‘নতুন সংশোধনে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার অধিকার বজায় রাখা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষ সহ সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান আদিবাসীর ক্ষুব্ধ। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ধর্মীয় শক্তিগুলি আবার প্রশ্রয় পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।” কলকাতা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রতন খাসনবিশ, সুবীর ভৌমিক, বিমল প্রামাণিক, রতেœশ্বর সরকার, কালীকৃষ্ণ গুহ ও মোহিত রায়ের মত বিশিষ্ট জনেরা। সিএএএমবির তরফে এদিন ‘‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে অপরিবর্তিত রূপে গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।” সংস্থার তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশের পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বাংলাদেশের ‘‘ধর্মীয় মৌলবাদকে জিইয়ে রাখবে”। যার ‘‘বিরূপ প্রভাব প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গেও পড়বে যার সব ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
উদয়ন পাল, কলকাতা: এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠল মন্ত্রিসভার বৈঠকে। বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার মহাকরণে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীরা এক জোট হয়ে সওয়াল করেন। এদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ নামটির ইংরেজি হরফে প্রথমেই ডব্লিুই আসার জন্য সমস্ত দিকেই অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে পিছিয়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। কেননা ডব্লিুউ হল ইংরেজি হরফের শেষের দিকের অক্ষর। বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে রাজ্যের কোনও কাজ নিয়ে গেলে অন্যান্য রাজ্যগুলি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে নামের অক্ষর আগে হওয়ায়। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নাম পরিবর্তন নিয়ে প্রাথমিক স্তরে ভাবনা চিন্তা নেওয়া হয়েছে। বিধানসভার অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ভাবের আদান প্রদান ঘটিয়ে ঐকমত্য হয়ে এই প্রস্তাব পাঠানো হবে কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য। এই ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্য সচিব সমর ঘোষকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামফ্রন্ট সরকারও তাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে একসময় নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সম্পূর্ণ বিষয়টি ধামা চাপা পড়ে যায়। এখন নতুন সরকারের এই প্রস্তাব কতটা কার্যকরী হয় সেদিকেই নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে রাজ্যের অতিবৃষ্টি এবং খরা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা। এবারের মাত্রাতিরিক্ত বর্ষণের ফলে রাজ্যে যাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেকথা মাথায় রেখে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করার বিষয়ে নানান পরিকল্পনার কথা আলোচিত হয় মিন্ত্র পরিষদের বৈঠকে। ‘পানি ধর ও পানি ভর’ এই নীতিকে সামনে রেখে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের খরা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন এবং বন্যা প্রতিরোধের বিষয়গুলির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে এদিন। এছাড়াও সরকারি কর্মচারিদের সমস্ত বিষয়টিকে কম্পিউটর প্রযুক্তিতে আনা হবে বলেও এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাত্র কয়েকদিন আগেই মহাকরণের বিভিন্ন দফতরগুলিতে আচমকা হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দিনই তিনি অভিযোগ পান যে এখনও কম্পিউটর পরিষেবায় উন্নত নয় সব দফতর। ফলে কাজের ক্ষেত্রে ব্যাপক অসুবিধা হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান কর্মচারীরা। মুখ্যমন্ত্রী তাদের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান করবেন। এদিনের বৈঠকে সমস্ত সরকারি কর্মচারিদের কম্পিউটরের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর প্রতিশ্র“তির বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে এগোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এপিপি, কলকাতা : কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধীর মিছিলে এক যুবক হঠাৎই ঢুকে পড়ে পিস্তল সহ। । ওই যুবকের সঙ্গে পয়েন্ট ৩২ বোর রিভলভার ছিল। রাহুলের নিরাপত্তায় থাকা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্র“প (এসপিজি) জওয়ানরা ওই যুবককে ধরেছে। ওই যুবক রাহুলের নিরাপত্তা বেষ্টনীর ‘সেকেন্ড রিং’-এর খুব কাছে চলে এসেছিল। তার সঙ্গে রিভলভার থাকায় এসপিজি-র জওয়ানরা তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আটক করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাপ্পাল গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক কংগ্রেস কর্মী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই যুবকের সঙ্গে যে রিভলভার ছিল, তার বৈধ লাইসেন্স আছে। তিনি পরিবার নিয়ে গাড়ি করে যাচ্ছিলেন। রাহুল গান্ধী সেই পথে পদযাত্রা করছেন শুনে তার প্রিয় নেতাকে দেখার জন্য খুব কাছে চলে গিয়েছিল ওই যুবক। উত্তরপ্রদেশে জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে আলিগড় পদযাত্রা শুরু করার দু-ঘন্টার মধ্যেই এই যুবককে আটক করেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। এদিকে, রাহুল গান্ধীর মিছিলে পিস্তল সমেত এক যুবক ঢুকে পড়েছে শুনে আলিগড় সহ গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়েই তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নানারকম গুজব ছড়াতে থাকে বিভিন্ন জায়গায়। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর কাছেও এখবর পৌঁছয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশও এই ঘটনার জেরে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে। রাহুলের যদি কোনওরকম বিপদ হত, তা হলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ওপরেই যে সেই ঘটনার দায় চাপত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে ন। এই ঘটনার পরেই মিছিলে হাঁটতে থাকা রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরপ্রদেশে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী সরব হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ সফরে গিয়ে তিনি কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন এবং মিছিল করে হাঁটছেন। বুধবার রাতে তিনি কৃষকদের বাড়িতেই ছিলেন। সব মিলিয়ে রাহুল গান্ধীর মতো ভিভিআইপি উত্তরপ্রদেশে এই ধরনের কর্মসূচি নেওয়ায় তটস্থ আলিগড় সহ নিকটবর্তী জেলাগুলির পুলিশ আধিকারিকরা। সকলেই চাইছেন, ভালোয় ভালোয় যেন রাহুল গান্ধীর উত্তরপ্রদেশ সফর শেষ হয়। উদয়ন পাল, কলকাতা : প্রবল বৃষ্টি কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে। তারই মধ্যে অমরনাথের দিকে রওনা হলেন আরো ৩ হাজার পুণ্যার্থী। এটি পুণ্যার্থীদের অষ্টম দল। এবারের যাত্রী দলে রয়েছেন ৮৮৬ জন মহিলা ও ৬৬টি শিশু। ১০১টি বাসে চড়ে ওরা ভাগবতী নগর বেস ক্যাম্প ছেড়েছেন বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায়।
পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সি আর পি এফ-এর কড়া পাহারা রয়েছে বাসগুলির আগে ও পিছনে। এই যাত্রী দল নিয়ে এ পর্যন্ত অমরনাথের দিকে গেলেন মোট ২৬,০৭৮ জন পুণ্যার্থী। ১৩,৫০০ ফুট উচ্চতায় এরা সকলেই অমরনাথ গুহায় পৌঁছে পুজো দেবেন। এপিপি, কলকাতা : বাসচালকের ভুলে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল বুধবার বাংলাদেশি সময় রাত ২.৩৫ মিনিটে ভারতের উত্তরপ্রদেশের কাঁসিরামনগরে ছাপরা-মুথরা এক্সপ্রেসের সঙ্গে বরযাত্রী বোঝাই একটি বাসের সংঘর্ষে ৩৭ জন বাসযাত্রীর এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন এদিন রাতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৩৭ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৩৫ জন। বাসটিতে মোট ৮০ জন যাত্রী ছিল। একটি প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং-এ এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের দ্রুত সেখান থেকে উদ্ধার করে এটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গভীর শোকের ছায়অ নেমে আসে গোটা এলাকায়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। আসে দমকল এবং উদ্ধারকারী দল। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় উদ্ধারের কাজ। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আশপাশের এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ এসে ভিড় জমান ঘটনাস্থলে। ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে। পুলিশের জনৈক মুখপাত্র বলেছেন, রাত ২.৩৫ মিনিট নাগাদ ছাপরা-মথুরা এক্সপ্রেসের সঙ্গে বরযাত্রী বোঝাই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের অঞ্চল। বাসটির ইঞ্জিন একেবারে ভিতরে ঢুকে যায়। গোটা বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে দলা পাকিয়ে যায়। রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বাস চালকের ভুলের জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভয়াবহতা প্রথমটা মানুষের পক্ষে বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। তারপর জানাজানি হয় মর্মান্তিক ঐ দুর্ঘটনার খবর। সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাসীরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। পুলিশ এবং দমকল ও উদ্ধারকারী দল আসার আগেই গ্রামবাসীরা উদ্ধারের কাজে নেমে পড়েন। ট্রেনটি মথুরা থেকে ছাপরার দিকে যাচ্ছিল। রবিবার রাত ১১.১৫ মিনিটে মথুরা থেকে ট্রেনটি রওনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মৃতদের পরিবারবর্গকে ২ লক্ষ এবং গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন। এটোয়ার জেলাশাসক শৈলজা কুমারী বলেছেন, আহতদের এটোয়া এবং ফারুক্কাবাদ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত বাসচালকের উচিত ছিল লেভেল ক্রশিংয়ে ঢোকার আগে সাবধানতা অবলম্বন করা। এপিপি, কলকাতা : গত সপ্তাহে খাড়খণ্ডের গিরিডির স্থানীয় আদালত একটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় চার মাওবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ৪০ জনকে খুন করে এর বদলা নেবে বলে হুমকি দিল মাওবাদীরা। একটি সংবাদ চ্যানেলের খবর, পুলিশ জানিয়েছে, বোকারোয় এই হুমকি দিয়ে কিছু পোস্টার সেঁটেছে মাওবাদীরা। পোস্টারে বলা হয়েছে, চার জঙ্গির ফাঁসির সাজা রদ না হলে বদলা নিতে চারজনের বদলে ৪০ জনকে হত্যা করা হবে।
পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতেই মাওবাদীরা ওই পোস্টার লাগিয়েছে। পোস্টারগুলি ইতিমধ্যেই ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এই হুমকির প্রেক্ষিতে গিরিডি, বোকারো ও অন্য কয়েকটি জেলায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে গিরিডির চিলকারি গ্রামে ১৯ জনকে হত্যা করেছিল মাওবাদীরা। এই হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত জিতেন মারাণ্ডি, ছত্রপতি মণ্ডল, মনোজ রাজওয়ার এবং অনিল রামকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। এদিকে সম্প্রতি ছত্তিশগড় সফরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল মাওবাদীদের হিংসা ছেড়ে রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে আসার যে আবেদন জানিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে মাওবাদীরা রায়পুর থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে নকশাল অধ্যুষিত এলাকা থেকে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নিরাপত্তাবাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চলতি ‘গ্রিন হান্ট অপারেশন’ বন্ধেরও দাবি তুলেছে মাওবাদীরা। একইসঙ্গে তারা দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিদেশের ব্যাংকে গচ্ছিত কালো টাকা দ্রুত ভারতে ফেরানোর কথাও বলেছে। মাওবাদীরাও এও বলেছে, জমি অধিগ্রহণের চলতি নীতি বদলাতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ অপচয়ও বন্ধ করতে হবে। এইসব দাবি মেনে নেওয়া হলেই তারা হিংসার পথ ছাড়বে। উদয়ন পাল, কলকাতা : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালন রুখতে অত্যাধুনিক অ্যালার্মিং সিস্টেম এবং নাইট ভিশন ডিভাইস ব্যবহার করছে বিএসএফ। সোমবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের নবনিযুক্ত আইজি কমল কেশোয়ানি। তিনি জানান, সীমান্তে আরও ভাল নজরদারির জন্য বর্ডার আউট পোস্টের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের পূর্বতন আইজি নন্দকিশোরের জায়গায় দায়িত্ব নিয়েছেন বিএসএফের গোয়ালিয়রের (একাডেমিক) কর্মরত আইজি কমল কেশোয়ানি। চলতি মাসের আট তারিখ দায়িত্ব নিয়েই এই ফ্রন্টিয়ারের অধীনে থাকা বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন তিনি। এদিন শিলিগুড়ি সংলগ্ন কদমতলায় বিএসএফের উত্তরবঙ্গ সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, তুলনামূলকভাবে বর্তমানে এখানকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত শান্ত রয়েছে। তবে, জাল নোট, নেশার ওষুধ, গবাদি পশু পারাপার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। চোরাচালান বন্ধ করতে বেশ কিছু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। আইজি জানান, বর্তমানে পাঁচটি সেক্টরের ২০৯টি বিওপি এলাকাতেই যে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে সেখানে অ্যালার্ম সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কাঁটাতারের বেড়াতে অত্যাধুনিক একটি যন্ত্র বসানো থাকবে। যে কেউ কাঁটাতার কাটার চেষ্টা করলেই ওই যন্ত্রটি প্রচণ্ড শব্দে বেজে উঠবে। এই যন্ত্রটি অন্তত দু’কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি ‘থার্মাল ইমেজ’ নামে একটি নাইট ভিশন ডিভাইসও দেওয়া হচ্ছে সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানদের। অত্যাধুনিক এই ব্যবস্থায় দূরবীক্ষণের মতো একটি যন্ত্রের মাধ্যমে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা রাতের অন্ধকারেও পরিষ্কার দেখা যাবে। ফলে কেউ চোরাচালানের চেষ্টা করে তাকে শনাক্ত করা সহজ হবে। আইজি জানান, এই দু’টি প্রযুক্তিই পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের সর্বত্রই এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।
এপিপি , কলকাতা : ভারতের নতুন বিদেশ সচিব হচ্ছেন রঞ্জন মাথাই। পয়লা আগস্ট থেকে তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন। মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। রঞ্জন মাথাই এখণ ফ্রান্সে ভারতের রাষ্ট্রদূত। পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করে ১৯৭৪ সালে তিনি ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। অস্ট্রিয়া, শ্রীলঙ্কা, আমেরিকা, ইরান, বেলজিয়ামে তিনি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন। বাস্তববাদী ও কর্মঠ অফিসার হিসাবে তাঁর সুনাম রয়েছে। ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৯৮ সালের ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত তিনি বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব ছিলেন। তখন বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মায়নমার ও মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার করতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন রঞ্জন মাথাই। এনডিএ সরকারের আমলে ১৯৯৮ সালের ফেব্র“য়ারি থেকে ২০০১ সালের জুন পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলের ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তাঁর উদ্যোগেই ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এত ভাল হয়েছে। ২০০১ সালের আগস্ট থেকে ২০০৫ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি কাতারে রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এছাড়াও ২০০৫ সালের আগস্ট থেকে ২০০৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রিটেনে ডেপুটি হাই কমিশনের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দু’বছর বিদেশ সচিব পদে থাকবেন। প্রসঙ্গত, ভারতের বিদায়ী বিদেশ সচিব নিরুপমা রাও আমেরিকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছেন। রঞ্জন মাথাই তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
উদয়ন পাল কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নতুন সরকারের কাছে নিজেদের একগুচ্ছ দাবি দাওয়া প্রকাশ করে, তা মেটানোর আর্জি জানাল অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেদের এই দাবিগুলির কথা জানান তাঁরা। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাচার কমিটির সদস্য সম্পাদক ড. আবু সালে শরিফ। সাচার কমিটিতে এই রাজ্যের যে করুণ চিত্র উঠে এসেছে, তার সংপ্তি বিবরণের পাশাপাশি আলোচনায় উঠে আসে কোন কোন েেত্র কী কী পদপে নতুন সরকারের নেওয়া উচিত, সেই প্রসঙ্গও। অর্থাৎ, সাচার কমিটি যে যে েেত্র রাজ্যের উন্নতির জন্য সুপারিশগুলি করেছিল, সেই দিকগুলিই এ দিন আবারও উঠে আসে নেতৃত্বের আলোচনায়। সাচার কমিটির সদস্য সম্পাদক ড. আবু সালে শরিফ বলেন, ‘ভারত এখন উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্ন্য়নের অংশীদারি দেশের সব অংশের মানুষের থাকা অতি প্রয়োজন। দেশের সংখ্যালঘু মানুষ কেমন রয়েছে, কী তাঁদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, তা জানার জন্যই সাচার কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সংখ্যালঘু মানুষের খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থানের উপর ভিত্তি করেই সাচার কমিটির রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছিল, রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষরা যথেষ্ট পিছিয়ে। শিা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, চাকুরি-সব েেত্রই পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘এ রাজ্যে ১৫ শতাংশ সংখ্যালঘু পড়–য়া চতুর্থ শ্রেণিতে ওঠার আগেই বিদ্যালয় ছেড়ে দেয়।’ রাজ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন সরকারের কাছে নিজেদের আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের সংরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে যে সংরণ সিস্টেম চালু রয়েছে, তার সংশেধান করা হোক।’ এই ব্যাপারে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়–, কর্নাটকে যে সিস্টেম চালু রেেছ, তা বিবেচনার জন্য একটি কমিটি তৈরির কথাও তিনি জানান। সেই কমিটির নির্দেশিত সংরণ প্রক্রিয়া রাজ্যে দ্রুত চাল করার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানান তিনি। বিচারপতি সাচারকে এ রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন ড. আবু সালে শরিফ জানান, বিচারপতি সাচার এ রাজ্যে আসবেন। তবে তার দিনণ নির্দিষ্ট হয়নি। রাজ্যে এসে বিচারপতি সাচার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাাৎ করবেন বলেও তিনি জানান। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের উন্নতির জন্য যে পদপেগুলি ইতিমধ্যেই নিয়েছেন, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের সহ সভাপতি মহম্মদ সুলেমান খুরশিদ, সাধারণ সম্পাদক ড. মনজুর আলম, রাজ্য সম্পাদক শাহুদ আলম সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সাহিদ সিরাজী : পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, তিনি বাংলাদেশকে অত্যন্ত ভালোবাসেন এবং প্রতিবেশী দেশটির জন্য কিছু একটা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। মতায় আসার পর প্রথমবারের মতো তিনি ভারতের প্রেসকাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং সকল প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ‘এটি একটি ঘরোয়া বৈঠক এবং আমি জবাবও দেব ঘরোয়াভাবে।’ তিস্তা নদীর পানি বন্টন ও ছিটমহল বিনিময় বিষয়ে তিনি কিভাবে সাড়া দেবেন বাসস প্রতিনিধি এ বিষয় জানতে চাইলে মমতা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে যথেষ্ট ভালোবাসি এবং যখন প্রয়োজন দেখা দেবে তখন সে েেত্র কিছু একটা করার জন্য আমি প্রস্তুত।’
মমতা আরো সুনির্দিষ্ট করে বলেন, যখন এসব ইস্যু বাংলাদেশ উত্থাপন করবে তিনি তা বিবেচনা করবেন। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত আন্তরিক। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আজ পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা বিপর্যস্ত। রাজ্যের পুঞ্জীভূত দেনার পরিমাণ দুই লাখ তিনশ’ কোটি রুপি। সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে সাাতকালে রাজ্যের অর্থনৈতিক বিষয়ে তিনি কোনো রাখঢাক করেননি। তিনি বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সামনে রাজ্যের মারাত্মক শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরেছি। তিনি জোরপূর্বক ভূমি অধিগ্রহণের বিপে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি যখন তাদের (গরিবদের) আহার দিতে পারছি না তখন কিভাবে তাদের জমি নিয়ে নেবো?’ রাহুল গান্ধীর ভারতের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী হওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নেবেন কংগ্রেস ও এর নেতৃবৃন্দ। আন্না হাজারে ও যোগগুরু রামদেবের লোকপাল নিয়োগ ও দুর্নীতি নির্মূলের দাবিতে অনশনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মমতা বলেন, ‘আমি আর দিল্লীর প্রতিনিধিত্ব করছি না, দয়া করে এসব প্রশ্ন তাদের (কেন্দ্র) করুন, তবে আমি যোগ ব্যায়াম পছন্দ করি এবং তার (রামদেবের) কাসে যোগ দেব।’ সিপিআই(এম) ও সিপিআই’র একীভূত হওয়ার প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, ‘রসগোল্লাকে পানতোয়ার সঙ্গে মেশাবেন কিভাবে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদয়ন পাল কলকাতা থেকে : জঙ্গলমহলের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে বৃহস্পতিবার মহাকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলের মানুষদের জন্য কর্মসংস্থান, খাদ্য ও খাবার পানি সরবরাহ, চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্যাকেজ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, স্বরাষ্ট্রসচিব জি ডি গৌতম, রাজ্য পুলিশের ডি জি নাপরাজিত মুখোপাধ্যায় সহ পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এই সপ্তাহের শেষের দিকে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখ্যাপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের কাছে একটি আলাদা প্যাকেজ রাজ্য চাইতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর। তাই মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত জঙ্গলমহলের উন্নয়নের ব্যাপারে বিভিন্ন দপ্তর থেকে রিপোর্ট চাইছেন। রিপোর্ট হাতে এলে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আরও বিস্তারিতভাবে এ নিয়ে কথা বলতে পারবেন। জঙ্গলমহলের বাসিন্দা যুবকদের আরও বেশি করে পুলিশে চাকরি দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হবে সরকার। পুলিশে এখন বেশ কয়েক হাজার পদ শূন্য আছে। জঙ্গলমহলের যুবকদের পুলিশে চাকরি দিয়ে এলাকায় মাওবাদী সমস্যা কমানো যাবে বলে মনে করছে সরকার। প্রয়োজনে জঙ্গলমহলের যুবকদের নিয়ে পুলিশের একটা আলাদা ব্যাটেলিয়ান খোলার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থান হলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। জঙ্গলমহলের আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার জন্য প্রকল্প আগেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পটি দ্রুত রূপায়ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলে একটি মানুষও যাতে অনাহারে না থাকেন, তার জন্য বিনামূল্যে চাল সরবরাহ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এদিনই খাদ্য দপ্তরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন, চাল-গম পোকা গেলে নষ্ট হওয়ার আগে গরিব মানুষদের কাছে তা বিলি করে দিন। জঙ্গলমহলে পানীয় ও সেচের পানি সরবরাহ বাড়ানোর জন্য পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর ইতমধ্যে ২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানি ছাড়াও বৃষ্টির পানি ধরে রেখে তা ব্যবহার করার উপর জোর দিয়েছে দপ্তর। জঙ্গলমহলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার এবং ওষুধের কোনও সমস্যা যাতে না থাকে সেদিকে বিশেষ নজরদারি করছে স্বাস্থ্য দপ্তর। জঙ্গলমহলের মানুষের জীবনধারণের ন্যূনতম প্রয়োজনগুলি মেটানোর জন্য দপ্তরগুলিকে সক্রিয় হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুভ পাল কলকাতা থেকে : ছিটমহল সমস্যার সমাধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে ছিটমহলের বাসিন্দারা নতুন কমিটি গঠন করল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিট পোয়াতের কুঠিতে ছিটমহল বাসিন্দাদের একসভায় নতুন এক কমিটি গঠিত হয় বলে ছিটের বাসিন্দা কাসেম আলি মিঞা জানান। তিনি আরও জানান , ছিটমহল সমস্যা সমাধান ১৯৫৮, ১৯৭৪ ও ১৯৯২ সালে তিন-তিনটি চুক্তি হলেও আজও সেই চুক্তি কার্যকর হয়নি। ছিটমহলের বাসিন্দারা আজ নেই রাজ্যের বাসিন্দায় পরিণত হয়েছে। প্রবীণ কাশেম আলি বলেন , ছিটমহল সমস্যা সমাধানের দাবিতে ছিটমহলের বাসিন্দারা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দাবি পত্র পাঠানো হয়েছে। ছিটমহল বিনিময়ের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের দাবিতে ভবারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি ছিটমহল পোয়াতের কুঠির বাসিন্দারা ‘ছিটমহল বিনিময় অগ্রগামী কমিটি’ নামে নতুন কমিটি গঠন করেন। নরেন্দ্র চন্দ্র বর্মনকে সভাপতি ,খবীরউদ্দিন মিঞাকে সহ সভাপতি. আবদুল গফুর মিঞাকে সম্পাদক , অবিনাশ বর্মনকে সহ সম্পাদক ও নুর মহম্মদ মিঞাকে কোষাধ্য করে ৯ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয় বলে জানা গেছে। নতুন এই কমিটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল গুলির বিনিময় দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে কমিটির সভাপতি নরেন্দ্র বর্মন ও সম্পাদক আবদুল গফুর মিঞা জানান। ছিটমহল বিনিময়ের দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে দাবি জানানো ছাড়াও দেশের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানাবেন নতুন কমিটি।
|
বিভাগীয় সম্পাদক
প্রিয় পাঠক আপনাদের জন্যই পশ্চিম বঙ্গের লেখা দিয়েই আমাদের এ বিশেষ আয়োজন। তাই এ সম্পর্কে মতামত জানিয়ে আমাদের চলার পথকে আরো প্রসারিত করুন. বিষয় ভিত্তিক লেখা
All
আর্কাইভ
April 2018
|