এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মুরশিদ কুলি খান, নজরুল হুদা, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সভাপতি কে মাহমুদ সাত্তার, কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তার হোসেন, স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ প্রধান জিম ম্যাককেভসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে নতুন কৃষিঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে ড. আতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সব বেসরকারি বাণিজ্যিক, বিদেশি, রাষ্ট্রায়াত্ব ও বিশেষায়িত ব্যাংকের জন্য এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক মোট ঋণের ৩৮ শতাংশ বিদেশি ব্যাংক, চার শতাংশ ও রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংক ১৮ শতাংশ সরবরাহ করবে। বাকি ৪০ শতাংশ ঋণ দেবে বিশেষায়িত ব্যাংক। তিনি বলেন, ‘সব বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংককে মোট ঋণের আড়াই শতাংশ কৃষি খাতে দিতে হবে। অর্থ বছর শেষে অনর্জিত টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে এক বছরের জন্য জমা রাখতে হবে।’ ড. আতিউর বলেন, ‘কৃষি খাত আরও টেকসই করতে এ খাতে ব্যাপক ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি ঋণের গুণগত পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে।’ কৃষকরা যাতে হয়রানিমুক্ত ভাবে ঋণ পান সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। তিনি বলেন, ‘আবেদনের ১০ দিনের মধ্যে কৃষকরা যাতে ঋণ পান সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শক বিভাগ খুলেছে। এ বিভাগ কৃষি ও এসএমই খাতে ঋণ নিবীড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।’
ড. আতিউর বলেন, ‘ব্যাংকগুলো জনবলের অভাবে কৃষিঋণ বিতরণ ও আদায়ে বিঘœ ঘটে বলে অজুহাত দেখায়। এ সব সমস্যা নিরসনে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ কে মাহমুদ সাত্তার জানান, ‘রাষ্ট্রায়াত্ব ও বিশেষায়িত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কৃষি ঋণ বিতরণে এগিয়ে এসেছে। বিগত অর্থ বছরে আমরা লক্ষ্যমাত্রার ৮২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছি। এ বছর লক্ষমাত্র বাড়িয়ে চার হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্র অর্জনে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।’
জিমি ম্যাকক্যাভ বলেন, ‘কৃষি ঋণ বিতরণে পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই বিদেশি ব্যাংকগুলোর। তারপরও আমরা এগিয়ে এসেছি। আশা করছি ৫৪৭ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।’ ড. আতিউর রহমান জানান, জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে কৃষির অবদান তেমন না থাকলেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এ খাতের ভূমিকা অনেক। তাই এ খাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
গত অর্থ বছরের কৃষি ঋণের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গত অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১২ হাজার ৬২৭ কোটি টাকার। বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশ। আমদানি পণ্য বিকল্প খাতে যারা ঋণ দেবে তার রেয়াতি সুদের হার দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে চার শতাংশ করা হয়েছে।