ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম ২০১৩- ১৪ অর্থ বছরের এক হাজার ৮৭৬ কোটি আট লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন। গত অর্থ বছরের বাজেট ছিল এক হাজার ৫১৬ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার ডিএসসিসি অডিটোরিয়ামে বিভক্ত করপোরেশনের দ্বিতীয় বাজেট ঘোষণা করেন ডিএসসিসি’র প্রশাসক মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনছার আলী খান , সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপটেন শেখ জাবেদ ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন, প্রধান প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গির আলম এবং ডিএসসিসির বিভাগীয় প্রধান এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা।
এই বাজেট করপোরেশনের নিজস্ব উৎস হতে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়া সরকারি ও বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প এবং সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) ভিত্তিক প্রকল্প বাবদ অর্থ পাওয়া যাবে এক হাজার ১৮৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
প্রশাসক বাজেট বক্তব্যে বলেন, নিজস্ব উৎস থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সরকারি অনুদান ( থোক) ৫০ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ অনুদান ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারি ও বৈদেশিক সম্ভাব্য সাহায্য রাখা হয়েছে এক হাজার ১৮৯ কোটি ৫৮ লাক টাকা।
তিনি বলেন, ডিএসসিসির নিজস্ব আয়ের খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হোল্ডিং ট্যাক্স খাত থেকে ২৭০ কোটি টাকা, বাজার ও ভাড়া খাত থেকে ১২০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স খাত থেকে ৪০ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন খাত থেকে পাঁচ কোটি টাকা, রিক্সা লাইসেন্স ফি দুই কোটি টাকা, প্রমোদ কর ৪৫ লাখ টাকা, ক্ষতিপুরণ দুই কোটি টাকা, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর খাত থেকে ৬০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থ বছরে উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় এক হাজার ৫৬০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রশাসক বলেন, ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ১২৫ কোটি টাকা, কবরস্থান ও শ্মশানঘাটের জন্য এক কোটি টাকা, নাগরিক ও বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়নে এক কোটি টাকা, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে দুই কোটি টাকা, পরিবেশ উন্নয়নে বৃক্ষরোপন ও বনায়নে তিন কোটি টাকা ,পাবলিক টয়লেট উন্নয়নে ৩০ লাখ টাকা, ভূমি রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে চার কোটি টাকা, ঢাকা নগর জাদুঘর উন্নয়নে ২৫ লাখ টাকা, রাস্তা-নর্দমা-ফুটপাত উন্নয়নে ৫০ কোটি টাকা, ঢাকা আরবান ইনফ্রাস্টাকচার ইম্প্রুভমেন্ট প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকা।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে বাকি কাজের জন্য ৬০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। পলাশী থেকে গাবতলী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেনওয়ে নিমার্ণ প্রকল্প ৩৭৫ কোটি টাকা, মশক নিধণ ও এ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিখাতে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। পথশিশুদের জন্য পাঁচলাখ টাকার একটি খাত তৈরি করা হয়েছে। ফকিরেরপুল গ্রেড সেপারেটর ও আন্ডারপাসে ২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটের ১৪৫ ে কাটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বাবদ যা বিগত অর্থ বছরে ধরা হয়েছিলো ১১৭ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয় ৯৫ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও পানি বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ সাড়ে ৯ কোটি টাকা। মশক নিধন ও নিয়ন্ত্রণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। এছায়া উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ও সরকারি অনুদানের সম্পূর্ণ অর্থ বিভিন্ন প্রকল্প ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে।