পার্বত্য অঞ্চল প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ি জেলায় নয়টি উপজেলার চাষীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্রা চাষ। কয়েকটি উপজেলার ভুট্রাচাষীদের সাথে কথা বলে, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার দুইজন ভুট্রাচাষীর সফলতার কথা তুলেধরা হলো।
প্রথম চাষী: খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের ভুয়াছড়ি মেীজার নিবারন চন্দ্র চাকমার ছেলে জীবক চাকমা।
জীবক চাকমা জানান,তিনি প্রথম জমি আবাদ করার সময় সি.পি ও ক্যাটালিস্ট কোম্পানীর সহযোগীতায় ২০১০ইং সালে প্রশিক্ষন পেয়ে তিনি প্রথমে ৪০ শতাংশ জমির ওপর ভূট্রা চাষ আবাদ করেন। প্রথমত তিনি ভূট্রা চাষে সফলতা না পেলেও পরবর্তীতে ২০১১ইং সালে তার ভুট্রা চাষে ভালো ফলন হওয়া ও সফলতা ্আসা থেকে শুরু করে এখন প্রর্যন্ত্য তিনি আর পিছনে ফিরে তাকানো হয়নি। তিনি কর্তমানে জমির পরিমাণ আরো বাড়িয়ে ৫ একর জমির ওপর ভূট্রা চাষ করেছেন।
দ্বিতীয় চাষী: খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের ভুয়াছড়ি মেীজার বাদিধন চাকমার ছেলে নিলাবরণ চাকমা। তিনি পেশায় একজন চাষী হলেও তার নিজের কোন চাষযোগ্য জমিজমা নেই, তবে তিনি নিয়মিত একজন র্বগাচাষী। বর্গাচাষী:নিলাবরণ চাকমা জানান,তিনি কোনো সংস্থার সহযোগীতা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে ৪০ শতাংশ জমির ওপর ২০০৬ সালে প্রথম ভূট্রা চাষ করেন এবং প্রথম ভূট্রা চাষেই সফলতা অর্জন করে এখন তিনি প্রতিবছর ৪০ শতাংশ জমি ৫ হাজার টাকা র্বগা নিয়ে ভুট্রা চাষ করেন। বর্তমানে তিনি জমির পরিমাণ আরো ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ৮০(আশি)শতাংশ জমি চাষ করেছেন এবং তার জন্য জমির মালিককে দিতে হবে ১০ (দশ হাজার) টাকা।
নিলাবরণ চাকমা জানান, প্রতি ৪০ শতাংশ জমিতে তিন কেজি ভুট্রা বীজের প্রয়োজন হয় এক কেজি বীজের দাম পাচ শত ষাট। এক কেজি বীজ থেকে তিন হাজার থেকে বোত্রীশ শত চারা গাছ হয়। প্রথম বীজ বোপনের পর চারার বয়স যখন পনের দিন হয় তখন একবার সার ও ওষধ দিয়ে আইল বেধে পরে সময় মত তিনবার পানি দিতে হবে। পরে আর ভুট্রা কাটা পর্যন্ত্য আর কোন খরচ নাই।
উল্লেখ্য প্রতি ৪০ শতাংশ জমিতে তিন কেজি বীজে প্রায় ৯ হাজার চারা রোপন করেন এবং প্রতি ৪০ শতাংশ জমিতে খরচ হয় প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। একটি গাছে একটি ভুট্রার মোচা কাচা বিক্রি হয় বর্তমান বাজার মূল্য একপিচ দশ টাকা। তবে কাচা ভুট্রা বিক্রিতে কৃষক নয় গুন লাভবান হয়।
ডিলারের মাধ্যমে বিক্রিতে কৃষকের লাভের পরিমান কম, কারণ ডিলার ভুট্রা কিনে শুকনা। আর শুকনা এক কেজি ভুট্রার দাম ১৭ টাকা। শুকনা ও কাচা ভুট্রার পার্থক্য একটি কাচা ভুট্রার ওজন পাচশত গ্রাম আর একটি শুকনা ভুট্রার ওজন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম। ৪০ শতাংশ জমিতে তিন কেজি বীজে চারা হয়, ৯ হাজার। ৯ হাজার গাছে ৯ হাজার ভুট্রার মোচা হয়, প্রায় ৪টি মোচা শুকালে কেজি ভুট্রা হয় আর কেজি ভুট্রার ১৭টাকা। ঐ হিসাবে ৯ হাজার মোচায় শুকনা ভুট্রা হবে ২৭২৫ কেজি। ১কেজি ভুট্রার দাম ১৭ টাকা হলে ২৭২৫গুন ১৭ সমান ৪৬৩২৫ টাকা। শুকনা ভুট্রা বিক্রিতে কৃষক লাভ পায় ৪গুন। কাচা ভুট্রা বিক্রিতে কৃষক লাভ পায় ৯গুন।