এ বছর মাড়াই মওসুম সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। সবকিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরও লাভের মুখ দেখবে ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠানটি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন না হলে চলমান আন্দোলনে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে চিনিকলটিতে।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানী। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিষ্টিলারী, স্পিরিট উৎপাদন কারখানা, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানা ,দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গুনে আসছিল। এ বছর সরকারিভাবে চিনির মুল্য বৃদ্ধির কারণে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চিনিকারখানাটি। তবে চিনির মুল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আগের বছর মিলস গেইটে ১ মণ আখের মূল্য ১’শ ১০ টাকা ছিল। এ বছর ১’শ ২৫ টাকা করা হয়েছে। চাষীদের দাবি আখের মূল্য প্রতিমণ ১’শ ৫০ টাকা করতে হবে। সেই সাথে মিলের ব্রেক ডাউন যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে মিল কর্তৃপক্ষের।
চিনিকলের শ্রমিকরা জানালেন, এ বছর মিলস হাউজের ফিটিংয়ের কাজ ভালো হয়েছে। বয়লার হাউজ ঠিকমতো স্টিম দিতে পারলে ব্রেক ডাউন হবেনা। মিল ভালো চলবে। বেশি চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন না হলে চলমান আন্দোলনে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
এ মওসুমে ৭০ দিন চালু থেকে প্রতিদিন গড়ে ১১’শ ৫০ মোট্রিকটন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে শতকরা ৭ দশমিক ২৫ ভাগ চিনি আহরণের মাধ্যমে ৫ হাজার ৮’শ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছর চিনিকল এলাকায় দন্ডায়মান আখ রয়েছে ৫ হাজার ৬’শ ৪৬ একর জমিতে ।
কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ এনায়েত হোসেন জানান, মাড়াই মওসুম শুরু করতে চিনিকলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মিল চালু হলে চলতি বছর চিনিকল এলাকায় আখ চাষের পরিমাণ বেশি হবে। মিলে আখ সরবরাহও বেশি হবে। চিনিও উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
গতবছর (২০১৬-১৭ অর্থবছরে) কেরু এ্যান্ড কোম্পানী সরকারি কোষাগারে ৬৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা রাজস্ব প্রদান করে ৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা মুনাফা করেছে।