গোটা রাজধানী জুড়ে প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও অলিতে গলিতে বসানো হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট।
কেন নগরবাসী আতঙ্কে এমন প্রশ্নের জবাবে তরুন আইনজীবী রাকিব হাসান বলেন, ‘‘সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও দলের নেতাদের বক্তব্যে পরিষ্কার তারা ১২ মার্চ রাজপথে থাকবে। এদিকে বিরোধীদলের প্রায় এক মাস পূর্বে ঘোষিত ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি তারা যে কোনো মূল্যে সফল করতে চাইবে। এর ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় নগরবাসী আতঙ্কে রয়েছে।’’
নয়া পল্টনে একটি বেসরকারী অফিসে কর্মরত আছেন জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার কাজ শেষে বাসার উদ্দ্যেশে বের হয়েছি। এমন সময় পল্টন থানা পুলিশের একটি টিম আমাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমাকে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলায় আটক দেখানো হয়। অথচ আমি কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। পরে সকালে আমার বাসা থেকে খবর পেয়ে অভিভাবকরা থানায় গেলে আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়। শনিবার সকালে অফিস সহকারী ফোন করেছে অফিসে না যাওয়ার জন্য। এই ধরনের পরিবেশ কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলা যায় না। বিরোধীদল মহাসমাবেশ করবে তার জন্য সাধারণ জনগনকে এভাবে হয়রানি করার কোনো মানে হয় না।’’
অন্যদিকে নগরীরর মোড়ে মোড়ে পুলিশিরে চেকপোস্টে হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকেই। মালিবাগে নিজস্ব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে আনোয়ার হোসেনের। তিনি বলেন, ‘‘আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স ভুয়া এই অভিযোগে গতকাল রাজারবাগের সামনে থেকে পুলিশ গাড়ি আটক করে। অথচ আমার লাইসেন্সে তারা কোনো ধরনে ফল্ট পায়নি। আমার জোরালো প্রতিবাদের মুখে পরে তারা গাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এভাবে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে বেহুদা হয়রানি।’’
পড়াশুনা শেষ করে এখন আইন পেশায় জড়িত রয়েছে অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম। তিনি বলেন,‘‘ পুলিশ মেসে মেসে রেইড করছে। আমরা অনেকই নিজেদের মতো করে ব্যাচেলর বাসায় থাকি। এখন আতঙ্কে রয়েছি কখন পুলিশ না আমাদের বাসায় এসে পড়ে।’’
এদিকে বৃহস্পতিবার মালিবাগ মাটির মসজিদের সামনে থেকে জহির নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রত্যাক্ষদর্শীদের ভাষ্য মতে ওই ব্যক্তি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হলে তাকে পুলিশ আটক করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলা হয়েছে ১২ তারিখের আগে ছাড়া যাবে না।
বিরোধীদল অভিযোগ করেছে সরকার নিজেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আর সাধারণ নগরবাসী এখন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আগামী কয়েকদিন খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাসা থেকে বের না হওয়ার। তবে সামগ্রিকভাবে অভিযোগ সরকারের প্রতি। তাদের হাতে নাশকতার কোনো তথ্য প্রমাণ থাকলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। শুধু শুধু সাধারণ জনগণকে হয়রানি করে সরকারবিরোধী মনোভাব বাড়বে ছাড়া কমবে না বলেই মনে করছেন তারা।