এপিপি বাংলা রিপোর্ট : সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পক্ষে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এ রায়ের ফলে দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে না বলেও মনে করছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন। ‘গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধভাবে দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এই ক্ষমতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’ তিনি বলেন, ‘আইনজীবী হিসেবে আমি এ রায় মেনে নিয়েছি। ভবিষ্যতে এর কার্যকারিতা দেখব বলে আশা করছি। এ রায়ের ফলে দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে না বলেই আমার মনে হয়।’ মওদুদ আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু যেহেতু তা হয়নি, সেহেতু কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।’সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। তারা কী সিদ্ধান্ত নেয় তা-ই এখন দেখার বিষয়।’বৃহস্পতিবার সকালে সংসদ ভবনে কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ব্যারিস্টার মওদুদ সাংবাদিকদের জানান, এগুলো তার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। তার দল ও সরকারের প্রতিক্রিয়া জানার পর এ নিয়ে বিশ্লেষণ করবেন।
0 Comments
এপিপি রিপোর্ট : অন্তিম শয্যায় শায়িত হলেন আবদুল মান্নান ভূঁইয়া। বিএনপির সাবেক মহাসচিব জনপ্রিয় এই নেতাকে নরসিংদীর শিবপুরের ধানুয়ায় তারই প্রতিষ্ঠিত শহীদ আসাদ কলেজমাঠের পাশে দাফন করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে সেখানে প্রিয় নেতার দাফন ও নামাজে জানাজায় অংশ নিতে লাখো মানুষের ঢল নামে । লোকে লোকারণ্য কলেজমাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দুই-দফা জানাজা পড়ানো হয়। আশেপাশের রাস্তায় দাঁড়িয়েও অনেকে জানাজায় শরিক হন। এর আগে সকাল থেকেই আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে শেষবারের মতো দেখতে ভৈরব, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, শিবপুর, মনোহরদীসহ আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজমাঠে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল নাগাদ কলেজমাঠ ছাপিয়ে দুই দিকের রাস্তায় প্রায় এক কিলোমিটার লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
গাছের ডালে ঝুলে এবং বাড়ির ছাদে উঠেও প্রিয় নেতাকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে দেখা যায় অনেককে। কারো কারো বুকে এ সময় কালো ব্যাজ দেখা যায়। গৃহস্থ বধুরাও এ সময় বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন মান্নান ভূঁইয়াকে শেষবারের মতো দেখতে। এলাকার দোকানপাট ও ঘরবাড়িতে কালো পতাকা ওড়ানো হয়। ‘মান্নান ভূঁইয়াকে হারিয়ে আমরা শোকাহত’ লেখা কালো কাপড়ের ব্যানার দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে। এদিকে শহীদ আসাদ কলেজের কয়েকজন ছাত্র বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, মান্নান ভূঁইয়াকে হারিয়ে আমরা একজন অভিভাবককে হারিয়েছি। শুধু শিবপুর নয়, গোটা নরসিংদীতে মান্নান ভূঁইয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে। এর আগে ঢাকা থেকে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার মরদেহ তার নিজ গ্রাম নরসিংদীর মাছিমপুরে নেওয়া হয়। সেখানে গ্রামের লোকজনের এক নজর দেখা শেষে শহীদ আসাদ কলেজের মাঠে শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে ধানুয়ার নিজ বাড়ির পাশে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের প্রস্তুতি শুরু হয়। এদিকে জানাজা নামাজের পূর্বে স্থানীয় সাংসদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিরা বক্তৃতা করেন। তারা মান্নান ভূঁইয়াকে একজন সফল রাজনীতিক ও ক্ষণজন্মা পুরুষ হিসেবে অখ্যায়িত করে এলাকায় তার ভাস্কর্য নির্মাণের ঘোষণা দেন। একই সাথে মান্নান ভূঁইয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জাতি একজন আদর্শ রাজনীতিবিদ ও মানুষকে হারালো বলেও মন্তব্য করেন। মান্নান ভূঁইয়ার জানাজায় তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, স্থানীয় সাংসদ সরদার সাখাওয়াত হোসেন, জেড এ খান, ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, এম মোরশেদ খান, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লা মিয়াসহ ৬ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধও জানাজা নামাজে অংশ নেয়। এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিএনপির সাবেক মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়ার প্রথম জানাজা ও বাদ যোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মান্নান ভূঁইয়ার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সরকার দলীয় চিফ হুইপ উপাধ্যাক্ষ আব্দুস শহীদ। এসময় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। উপাধ্যাক্ষ আব্দুর শহীদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি ছিলেন মান্নান ভূঁইয়া। আমরা একজন বিচক্ষণ রাজনীতিককে হারিয়েছি। মানুষ হিসেবে তিনি ভালো ছিলেন। সংসদের পক্ষ থেকে তাঁর আত্মার মারগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’ নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, সাংসদ রাশেদ খান মেনন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মনিরুজ্জামান মিয়া প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন। জানাজা পরিচালনা করেন সংসদের ইমাম মাওলানা আ ন ম ইব্রাহিম। প্রবীণ এই রাজনৈতিক নেতা ও সাবেকমন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূইয়া মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইন্তেকাল করেন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টা ১ মিনিটে তাঁকে মৃত্যু ঘোষণা করেন তার চিকিৎসকরা। ফুসফুসে ক্যান্সারে ভুগছিলেন মান্নান ভূঁইয়া। বর্ষিয়ান এই নেতার মৃত্যুর খরবে রাতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা, আত্মীয়-স্বজন , দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সাথী ও সাধারণ মানুষ ছুটে আসে স্কয়ার হাসপাতালে। রাতেই স্কয়ার হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা তাঁর মৃত্যুতে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সকাল ৬ টায় মান্নান ভুঁইয়ার মরদেহ তাঁর গুলশানের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা ও কর্মীরা তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে যান। এদের মধ্যে ছিলেন এম কে আনোয়ার, হায়দর আকবর খান রনো, রাশেদ খান মেনন, শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়–য়া প্রমুখ। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার এসময় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, মান্নান ভূঁইয়া সারাজীবন জনকল্যাণমূলক কাজ করে গেছেন। তার অভাব বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপূরণীয়। এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে স্কয়ার হাসপাতালে মান্নান ভূঁইয়ার শারিরিক অবস্থা অবনতি হতে শুরু করে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তাঁর ব্যাক্তিগত চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এক ব্রিফিংয়ে ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ড. বজলুল গণি বলেন, ‘সোমবার রাত ১১ টার দিকে মান্নান ভূঁইয়ার অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চলে যায়। এসময় তাঁর হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। হার্ট অক্সিজেন গ্রহণ করছিল না। দ্রুত প্রেসার কমে যেতে থাকে।’ গত ৭ জুলাই মান্নান ভূঁইয়াকে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় এনে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস অক্ষম ভূঁইয়াকে অক্সিজেনের সহযোগিতায় বাঁচিয়ে রাখা হয়। গত ৩১ মে ফুসফুসে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান মান্নান ভূঁইয়া। সেখানে তিনি সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভিার্সিটি হাসপাতালে করোনারি ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। সিঙ্গাপুর হাসাপাতালে ফুসফুসের ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য মান্নান ভূঁইয়ার দেহে মোট ৮টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। সর্বশেষ কেমোথেরাপি দেওয়ার পর তিনি ক্যামিক্যাল নিউমোনাইটিজে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছিলেন না। এর পর তাকে আর ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় মান্নান ভূঁইয়ার শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার করে স্থায়ী টিউব বসানো হয়। এপিপি রিপোর্ট : পানি, রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক কম লাগে এমন উচ্চ ফলনশীল ধান উদ্ভাবনের জন্য কৃষিবিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার এ সময়ে জলবায়ু উপযোগী ফসলের জাত উদ্ভাবন করা গেলে দেশে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে কৃষির উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য ৩২ জনের হাতে জাতীয় কৃষি পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫ জনকে স্বর্ণপদক, ৯ জনকে রৌপ্যপদক ও বাকি ১৮ জনকে ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয়। পদক প্রদানের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি সংকটে ও দুর্যোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে যেন সহায়তা করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদন ঠিক রাখার স্বার্থে রাসায়ানিক সার, ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার এ মুহূর্তে বন্ধ করা না গেলেও এগুলো পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনতে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। এ সময় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস এবং বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কৃষিতে মহিলাদের অবদানের জন্য কুমিল্লা দেবিদ্বারের ঊষা রানী গোস্বামী, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক এমএ মতিন, কৃষি উন্নয়নে সচেতনতা ও উদ্ধুদ্ধকরণ, প্রকাশনা ও প্রচারণায় খামারবাড়ির কৃষি তথ্য সার্ভিস, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগী চাষে যশোরের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও বাণিজ্যিক খামার স্থাপনে কিশোরগঞ্জের ভাগলপুর আফতার বহুমুখি ফার্মস লিমিটেডকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু সরকার এ পদক প্রদান শুরু করেন। তবে দীর্ঘ ১০ বছর পর আজ ৩টি ক্যাটাগরিতে ৩২ কৃষকের মধ্যে ৫ জনকে স্বর্ণপদক ও নগদ ২৫ হাজার টাকা, ৯ জনকে রৌপ্যপদক ও নগদ ১৫ হাজার টাকা এবং ১৮ জনকে ব্রোঞ্জপদক ও নগদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা দেয়া হয়। সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসাবে আগামী ২৫ জুলাই রাজধানীর পল্টন ময়দানে গণঅনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালিত হবে। মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ কর্মসূচির কথা জানান। এ সময় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা, নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা-মামলা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলম নিখোঁজের ঘটনায় সরকারের নিরবতার প্রতিবাদে সাত ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হবে দেলোয়ার জানান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিয়ে বিদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় মেতে উঠেছে। তারা দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি মনে করে তারাই শেষ সরকার তবে এটা তাদের ভুল ধারণা। কারণ জনগণ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে।’ কোন দলীয় নীতিতে দেশ চলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইন মানতে হবে। কিন্তু সরকার তা মানছে না। তাই জাতীয়তাবাদী শক্তি সরকারের কর্মকাণ্ডে নিশ্চুপ থাকতে পারে না। সংবিধান সংশশোধনে সরকারের সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকে অপরিকল্পিত বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ ব্যাপারে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে।’ দেলোয়ার বলেন, ‘সংবিধান সংশশোধনে সর্বদলীয় কমিটি গঠনের ব্যাপারে মহাজোট চিঠিটা গতকাল দিয়েছে। আমি শুনেছি তবে চিঠি পড়িনি। আমাদের সিদ্ধান্ত দেয়ার ব্যাপারে অধিকার আছে। বিএনপি চেয়ারপারসন এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করবেন এবং আলোচনা করবেন। এরপর ওই চিঠির জবাব দেয়া হবে।’ সরকারি কর্মচারীদের দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেরও সমালোচনা করেন তিনি। ২৫ জুলাইয়ের কর্মসূচি সফল করতে দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিখোঁজ কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের সন্ধান দাবিতে জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনের প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলররা। সকাল ১১টায় শুরু হওয়া অনশন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করছেন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। বিএনপি সমর্থিত ঢাকার প্রায় ৭০ কাউন্সিলর ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেটের কাউন্সিলররা অংশ নিয়েছেন। চৌধুরী আলমের স্ত্রী মায়া বেগম এ কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরওয়ার, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যোগ দিয়েছেন। মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে চৌধুরী আলমকে খুঁজে বের করার জন্য সরকারের কছে দাবি জানাচ্ছি আমরা। অনশন বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে ‘জুলুম-নির্যাতনের’ প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে দলটি। কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচি পালন করতে এরই মধ্যে দলের সকল শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ২৯ জুন জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমীর দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর ১৩ জুলাই ১৯৭১ সালে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান এবং আব্দুল কাদের মোল্লাকে আদালত প্রাঙ্গন থেকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের যৌথসভার আহ্বান করা হয়েছে। বিকাল ৫টায় দলের বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভা বসবে। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ, ঢাকা মহানগরীর সব থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য এবং সকল সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। এ সভায় আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণ এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, সরকারের নির্লিপ্ততা দেখে মনে হচ্ছে চৌধুরী আলম নিখোঁজ হওয়ার পেছনে তাদের হাত রয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের সন্ধানের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেসকাবের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতীক অনশনে বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রক্ষীবাহিনী সৃষ্টি করে ’৭২ থেকে ’৭৫ সাল পর্যন্ত যেভাবে দেশ চালিয়েছে এখনও তেমনিভাবে দেশ চালাচ্ছে।’ অবিলম্বে চৌধুরী আলমকে ফিরিয়ে না দিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও সরকারকে সতর্ক করেন তিনি। অনশনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা আর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি সমর্থক মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা অংশগ্রহণ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-সভাপতি সেলিমা রহমান, ঢাকা সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, টিআইবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিরোধীদলীয় চিফ হুইফ জয়নুল আবদীন ফারুক প্রমুখ অনশনে অংশ নেন। |
নিউজ সার্চ
All
নিউজ আর্কাইভ
May 2018
|