রোববার চট্টগ্রামে ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের পর সন্ধ্যায় মেহেদীবাগস্থ বাসভবনে তাৎক্ষণিক প্রেস কনফারেন্সে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রেস কনফারেন্সে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘‘সরকারের নগ্ন ফ্যাসিবাদী আচরণের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। এ সরকারের পায়ের তলায় মাটি আর চারপাশ থেকে জনগণের ন্যূনতম সমর্থনও অবশিষ্ট নেই দেখে বর্বর আচরণের পথ বেছে নিয়েছে।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আকবর খন্দকার, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, নগর বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন, এ এম নাজিমুদ্দিন, আবু সুফিয়ান, শামসুল আলম, আবুল হাশেম বক্কর, সাইফুল আলম, মাহবুবের রহমান শামিম, আহমেদুল আলম রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরু বলেন, “আমার রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিতে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি এমন নির্মম ও র্ববর পুলিশি নির্যাতন দেখিনি। বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর যুদ্ধের মতো পুলিশ ঝাপিয়ে পড়েছে। এমন পরিকল্পিত হামলা চালানোর জন্য পুলিশ গত দুদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিল।”
তিনি বলেন, “নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশেই দলীয় অফিসের ছোট একটি রুমে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে । তাদের নির্মমতা থেকে সাধারন মানুষও রেহাই পায়নি।”
তিনি বলেন, “পুলিশের টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে ঐ রুমটিতে আটকে পড়া অবস্থায় মনে হয়েছিল জীবন নিয়ে আর বেরুতে পারবো না।” তিনি বলেন, “১৮ দলের গণমিছিলে লক্ষাধিক লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে তা বানচালের জন্য এ পরিকল্পিত নির্মমতা চালিয়েছে। দেশ এভাবে চলতে পারে না। এখানে কারো নিরাপত্তা ও ন্যূনতম নাগরিক অধিকার পর্যন্ত নেই।”
আমীর খসরু পরিকল্পিত হত্যা চক্রান্তের অভিযোগে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
ঘটনার সূত্রপাত জামায়াত-শিবিরের মিছিল এমন অভিযোগ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “এটা একটা অজুহাত। এত বড় সমাবেশে জামায়াতের একটি মিছিল হামলা ও সংঘর্ষের কারণ হবে কেন? তাদের উপস্থিতি বড় কিছু ছিল না। আর যে ইস্যুতেই প্রতিবাদ করুন না কেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র প্রচার এখন নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।”
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “জামায়াত তো নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দল। এটি ১৮ দলের একটি শরীক দল। সরকার নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত এ দলের মিছিল মিটিংয়ের অধিকার আছে। এ দলের মিছিল হলেই হামলা-আক্রমণের কারণ হবে এটা অযৌক্তিক ও অন্যায়।”
আহতাবস্থায় বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে দলীয় অফিস থেকে কর্মীরা উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় কাজীর দেউড়ি মোড়ে সাংবাদিকদের নোমান বলেন, “এ ধরনের ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখে বোঝা যায় সরকার জনগণ থেকে সম্পুর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতীতে অনেক তীব্র রাজনৈতিক গণআন্দেলনের সময়ও এ ধরনের পুলিশি বর্বরতা আমার রাজনৈতিক জীবনে দেখিনি।”
তিনি বলেন, “সরকার ও পুলিশের অত্যাচার-জুলুমের জবাব জনগণ দিতে শুরু করেছে। এ ধরনের হামলা মেনে নেয়া হবে না। আমরা আরো জোরদার আন্দেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নোমান বলেন, “হামলার এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল কেয়ামত নেমে এসেছে। আমি কলমা পড়া শুরু করেছি। আর হয়তো বাচঁতে পারবো না।”