ঢাকা: দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামায়াতের আমির বলার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি বলেছে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির নির্বাচনী জোট আছে। তবে দুটি দলের মধ্যে নীতি-আদর্শের ফারাক বিস্তর। জামায়াতের নিজস্ব কর্মপন্থা আছে।বিএনপি চেয়ারপারসন জামায়াতের আমির-প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, বিএনপি নেত্রী জামায়াতের আমির হলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির নেত্রী।
জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট ভোটের রাজনীতির বলেও মন্তব্য করেন তিনি।শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান শনিবার যশোরে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জামায়াতের আমির বলে উল্লেখ করেন।প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি বক্তব্যের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তুই তুকারি করে বক্তব্য দেওয়া সভ্য-সংস্কৃতির অংশে পড়ে না। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের যে ট্রেন চলেছে, তার যাত্রীরা ছিল টিকিটবিহীন, অবৈধ যাত্রী। বিএনপি অবৈধ যাত্রী হতে চায়নি। সে ট্রেনে কোনো টিকিট চেকার ছিল না। তবে যদি কোথাও মোবাইল কোর্ট বসে, তাহলে বিনা টিকিটের যাত্রীদের জেল-জরিমানা হবে। তাই তাদের ভয় নিয়ে চলা উচিত।
বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে কোনো ভুল করেনি বলেও দাবি করেন আসাদুজ্জামান। তিনি আওয়ামী লীগকে আরও সহনশীল ও উদার হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে যোগ না দিয়ে বিএনপির নেতা বুঝতে পেরেছেন যে তিনি কত বড় ভুল করেছেন। তিনি আমাদের গোপালি বলে গালি দেন। এখন যদি আমি বলি, গোলাপি রে গোলাপি ট্রেন তো মিস করলি, তাহলে উনি কী বলবেন?খালেদা জিয়া জামায়াতের আমির’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিপন বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আদর্শগত বিস্তর ফারাক। তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি আছে। তাদের সঙ্গে আমাদের পজাট হলো ভোটের রাজনীতির।
এক প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, আজ নবম সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারি দশম সংসদের এমপিদের শপথ নেয়ার কথা, কিন্তু আগেই তাদের শপথ নিয়ে পয গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তা অবৈধ। আমরা এটাকে বৈধ প্রক্রিয়া বলে মনে করি না। এছাড়া দশম সংসদ নির্বাচনকে জনগণ স্বীকৃতি দেয়নি। তাই এ নিয়ে কথা বলতে চাই না।
বিএনপি নির্বাচনের ট্রেন ফেল করেছে- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে জবাবে তিনি বলেন, ট্রেন একটি চলেছে ঠিকই, তবে এর যাত্রী ছিল অবৈধ। আমরা অবৈধ যাত্রী হতে চাই না। কারণ যেকোনো সময় মোবাইল কোর্টের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই সরকারকে বলবো, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন এমন হুঙ্কার না দিয়ে ভয় নিয়ে চলুন। অবৈধ যাত্রী হিসেবে নরম সুরে কথা বলুন। অন্যথায় পতন হবে পাশাপাশি জরিমানাও দিতে হতে পারে।
বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়া ভুল ছিল কি-না তা যথাসময়ে প্রমাণ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।অবিলম্বে সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দাবি করেন রিপন। একই সঙ্গে প্রয়োজনে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত কমিশনও গঠনের দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপি নেতা রফিক শিকদার, যুবদল নেতা আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।