ঢাকা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিবতায় রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থী জয়লাভ করতে যাচ্ছেন।সারাদেশে শেষ দিনে শতাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় ৯৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এটি স্বাধীনতার পর একটি রেকর্ড। এদের মধ্যে ৮৮ জনই আওয়ামী লীগের, ২জন জাতীয় পার্টির, ওয়ার্কাস পার্টির ২জন এবং ১জন জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এর আগে বিএনপির করা ৯৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে ৪৯জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তফসিল অনুযয়ী শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর ছিল মনোয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ঢাকায় ৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হচ্ছেন, রাশেদ খানন মেনন, ফজলে নুর তাপস, সাবের হোসেন েেচৗধুরী, একে এম রহমতুল্লাহ, আসাদুজ্জামান খান, জাহংগীর কবির নানকও আসলামুল হক। জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ মনোনয়ন প্রত্রাহার করেছেন।
কোন প্রার্থী না থাকায় চাদপুরে ৫টি আসনে সরকারি দলের প্রার্থীরা বিজয়ী হতে যাচ্ছেন। এদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার শেষ দিনে পটুয়াখালী-১ আসনে জমা দেয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।তার স্ত্রী রতœা আমিন বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসন থেকে এবং বরিশাল-৩ আসনে গোলাম কিবরিয়া টিপু মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। দুপুরে তার পক্ষে জেলা জাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খায়রুল আলম মামুন প্রত্যাহারের আবেদন রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন জমা দেন।
ময়মনসিংহে দু আসন ছাড়াও সারাদেশে জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তবে সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ,আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, আবু হোসেন বাবলা,মুজিবুল হক চুন্নু ও এ্যাড: সালমা ইসলাম মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনননি।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। তাঁকে ওই আসন ছেড়ে দিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মতিউর রহমান তা প্রত্যাহার করেছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় নির্বাচনকালীন সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসন েেথকে জাপা প্রার্থী হিসেবে আছেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তাঁকে ওই আসন ছেড়ে দিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তে তিনি তা করেছেন।
এদিকে,লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং লালমনিরহাট-৩ (সদর উপজেলা) আসনে এরশাদের ভাই জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জি এম কাদেরের প্রার্থিতা প্রত্যাহার হয়নি। এখনো তাঁরা ওই দুই আসনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে বহাল আছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জি এম কাদের যথাযথভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন না করায় তা গ্রহণ বা মঞ্জুর করা হয়নি। এ কারণে তাঁরা দুজনসহ লালমনিরহাট জেলার তিনটি সংসদীয় আসনের সাতজন প্রার্থীকেই বৈধ প্রার্থী হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, লালমনিরহাট-২ আসনে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী নুরুজ্জামান আহাম্মেদকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বুধবার বিকেল সোয়া চারটায় জাতীয় পার্টির রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা লালমনিরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফজলুল করিমের কাছে এইচ এম এরশাদ ও জি এম কাদেরের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন।
লালমনিরহাটে তিনটি আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন লালমনিরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগের মোতাহার হোসেন, জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ছাদেকুল ইসলাম। লালমনিরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের নুরুজ্জামান আহাম্মেদ, লালমনিরহাট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আবু সালেহ মোহাম্মদ সাঈদ (দুলাল), জাতীয় পার্টির জি এম কাদের ও জাসদের মো. খোরশেদ আলম বৈধ প্রার্থী হিসেবে বহাল থাকলেন। সিলেটে
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ শুক্রবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়েছে।সিলেটে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন ৩ জন এবং বাতিল হয়েছে ২ জনের মনোনয়নপত্র।
শনিবার সকাল ১০টায় নির্বাচন অফিসে চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আজিজুল ইসলাম।
সিলেট-১ আসনে একক প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুূল মুহিত। এ আসনে প্রথমে মোট তিনজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। বাছাইকালে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী বাবরুল হোসেন বাবুল ও জেপি মনোনীত প্রার্থী ইফতেখার আহমদ লিমনের মনোনয়ন বাতিল হয়।
আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ভূমি ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বেসরকারিভাবে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।এ আসনের জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রার্থী নাসির উদ্দীন ইমরান শুক্রবার বিকালে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: শাখাওয়াত হোসেন বেসরকারিভাবে আমির হোসেন আমুকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর জেলার ৩টি আসনে মোট ৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
জেলা রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাকীর হোসেন জানান, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর শেরপুর-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিউর রহমান, জাসদ (ইনু) আবু সালেহ্ মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচনকালীন কৃষি, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা এবং শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে প্রকৌশলী ফজলুল হক চাঁন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হেদায়েত ইসলাম জাসদ (ইনু) এবং জাপার মো. খোরশেদ আলম চূডান্ত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন।