বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তোপখানা রোডের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় নেতাকর্মীরা এ দাবি উত্থাপন করেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই বৈঠক শেষ হয় বিকেল সাড়ে চারটায়।
হঠাৎ করে এই যৌথসভা আহ্বানের ঘটনাকে অনেকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন জাপার মহাসচিব পরিবর্তনের এক গুঞ্জন চলছে তাদের হুমকি দেওয়ার জন্য এই সভা ডেকেছেন মহাসচিব।
তার প্রমাণ পাওয়া গেল সভার শুরু থেকেই। বিভিন্ন ইউনিট থেকে আসা খণ্ড খণ্ড মিছিলের স্লোগানে। প্রায় সবার মুখে একই স্লোগান ‘এরশাদ-রুহুল এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’, অনেকে শুধু ‘মহাসচিব এগিয়ে চলো’, ‘রুহুল তুমি এগিয়ে চলো’, একটি মাত্র মিছিল ‘ফিরোজ তুমি এগিয়ে চলো’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়।
অতীতে সব কর্মসূচীতে সাধারণ স্লোগান হয়েছে ‘এরশাদ তুমি এগিয়ে চলো, আমরা আছি...’। তবে এবারই প্রথম সেøাগানের ধরন পাল্টেছে।
উল্লেখ্য, সম্পতি চীন সফরের আগে জাপার মহাসচিব পদে পরিবর্তনের জোর গুঞ্জন শুরু হয়। এরশাদ চীন যাওয়ার আগের দিনে ১৪ জন যুগ্ম-মহাসচিব এরশাদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমান মহাসচিবকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়ার অনুরোধ করেন। তারা দ্রুত কাউন্সিল করে তাকে বদলানোর কথাও বলেছেন বলে ওই বৈঠক সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।
সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, এখনই মহাজোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিতে হবে। আর তা না হলে শেষ মুহূর্তে গিয়ে ঘোষণা দিলে জনগণকে সঙ্গে পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, এই সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে স¤পূর্ণ ব্যর্থ। শেয়ারবাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পথে বসিয়েছে। তাদের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করা মানে নিজেদের জনসমর্থন বিকিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, এখনই ঘোষণা না দিলে ঢাকা মহাসমাবেশে কোনো লোক পাওয়া যাবে না। ‘মহাজোটে আছি এবং থাকব’ এরশাদের এই ঘোষণা শোনার জন্য লোক আসতে চাইবে না। সর্বোচ্চ আমি পাঁচ হাজার, উত্তরের সভাপতি চিশতী পাঁচ হাজার আর ঢাকার আশপাশ সবমিলিয়ে ৫ হাজার সমর্থক আসতে পারে।
মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আপনারা দলকে সংগঠিত করেন যাতে আগামী নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে মহাসমাবেশ করে ঘোষণা দেওয়া যায়।’
সভায় আগামী ১ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী সাংগঠনিক কর্মসূচী প্রণয়ন করা হয়। প্রতিটি জেলা পর্যায়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জেলায় ও উপজেলায় সফর করা হবে। উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ, জেলা সম্মেলন শেষ করার পর ঢাকায় তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে তৃণমূল মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মহাসচিবের সভাপতিত্বে ওই সভায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম হাবিব দুলাল, প্রাক্তন সৈনিক পার্টির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী মাহমুদ হাসান, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, সাহিদুর রহমান টেপা, আইনজীবী ফেডারেশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শেখ মো. সিরাজুল ইসলাম, মহিলা পার্টির সভানেত্রী নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, এসএম ফয়সল চিশতী, যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদারসহ ঢাকা ও পার্শ্ববতী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ