এপিপি, নারায়ণগঞ্জ: সরকারি দলীয় প্রার্থী হওয়াতে নিজের হাত পা বাধা জানিয়ে শামীম ওসমান দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বললেন, “নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে জেনেও আমার কিছুই করার নেই।” নির্বাচন কেন্দ্রে পুলিশ অর্থের বিনিময়ে অপর প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করেছে এমন অভিযোগ এনে তিনি একথা বলেন। রোববার দুপুর তিনটা বিশ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় শামীম ওসমান ‘বড় বিষ জ্বালা এ বুকে’ বলে আক্ষেপ করেন। শামীম ওসমান এ সময় বলেন, “আমি সরকার দলীয় সমর্থিত একজন প্রার্থী। এইজন্য অনেক কিছু বলতে চাইলেও সরাসরি বলা যায় না। কিছু দায়দায়িত্ব আমার কাঁধে এসে পড়ে। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জানাচ্ছি, “অনেকে অনেক জল্পনা কল্পনা করেছিল, নির্বাচনে শামীম ওসমান কেন্দ্র লুট করে নিয়ে যাবে। অনেক কথা বলা হয়েছে। কিছুই কিন্তু হয়নি।” সকাল সাড়ে দশটা পর্যমত্ম নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে শামীম ওসমান বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম দেখেছেন জানিয়ে বলেন, “সকাল সাড়ে আটটায় সোনাকান্দা ডকইয়ার্ড কেন্দ্রে আমাদের কিছু মহিলা ভোটার গেছেন। তাদের দোয়াত কলম মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য পুলিশ প্রভাবিত করেছে।” সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে পুলিশের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন তিনি। এই নির্বাচনে টাকা খেয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট একজন প্রার্থীর হয়ে কাজ করছে বলে শামীম ওসমান অভিযোগ করলেও তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটারদের যে প্রভাবিত করেছেন এই বক্তব্যের পক্ষে জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পরিচিত এক ভোটারকে পুলিশ আইভীর পক্ষে ভোট দিতে বলেছে “ সরকার দলীয় প্রার্থী হয়েও তিনি কেন নির্বাচন কমিশনে কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি- এমন পশ্নের জবাবে শামীম বলেন, “নির্বাচন কমিশন কোনো অভিযোগকেই আমলে নেয় না। গতকালও (শনিবার) আমি তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো ফলাফল পাইনি।” নির্বাচনী এলাকায় সেনা মোতায়েনের কথা বলে পরবর্তীতে ব্যর্থ হওয়াই শামীম ওসমান নির্বাচন কমিশনের কর্মদক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেও ফলাফল মেনে নিতে কোনো আপত্তি নেই শামীম ওসমানের। কারচুপির ঘটনা ঘটেছে এই অভিযোগ জানার পরও তিনি বলেন, “যদি ৫০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রেও কারচুপির ঘটনা ঘটে তাহলেও আমি জয়ের আশাবাদী।” সাংবাদিক সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ১/১১ এর হোতারা এবং বিএনপি জামায়াত চক্র মিলে খেলা খেলছে বলেও অভিযোগ করেন শামীম ওসমান। সংবাদ সম্মেলনের আগে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে জালভোট চলছে শোনার পর শামীম ওসমান সেখানে যান। তখন ভোট কারচুপির অভিযোগে র্যাব লিটন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। এসময় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে শামীম সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। নির্বাচন কেন্দ্রের সামনে দাড়িয়ে শামীম ওসমান বলেন, “আমি যদি সরকার দলীয় প্রার্থী না হতাম, তাহলে এই নারায়ণগঞ্জে ১৫ মিনিটের মধ্যে ৫ লাখ লোক এতক্ষণে রাস্তায় নামতো।”
0 Comments
এপিপি রিপোর্ট : ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমির ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ফজলুল হক আমিনী বলেছেন, “চারদলীয় জোটের আন্দোলনের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং স্বতস্ফূর্ততা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ করে দিয়েছে। তারা এখন আবোল-তাবোল বকতে শুরু করেছে। তবে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জনগণ এই সরকারের পতন ঘটাবে। কারণ আওয়ামী লীগ যে ইসলামের দুশমন, একথা এখন দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার।” শুক্রবার বাদ জুমা লালবাগের কার্যালয়ে ইসলামী ছাত্র মোর্চা সূত্রাপুর, মিরপুর ও যাত্রাবাড়ি থানার ছাত্র নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, “স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় আসার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। এজন্য এখন তারা ভিন্ন পথে এগুচ্ছে। তবে তাদের মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে হলে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।” বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামীতে দেশবিরোধী এই সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার ঘোষণা দেয়ায় আমি বেগম খালেদা জিয়াকে তাকে অভিনন্দন জানাই। এই সরকারের কার্যক্রম দেশবাসী সমর্থন করে না। কাজেই আগামীতে এই সরকারের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” ছাত্র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমিরুল ইসলাম, ওমর ফারুক, হেলাল উদ্দীন, সালিম হোসাইন, সাইফুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমান। এ সময় আগত দুই শতাধিক ছাত্র ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এপিপি, ময়মনসিংহ: আজ ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা হবে। জনসভাকে ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ চলছে। সবাই ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে প্রচার। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। শহরের রাস্তার পাশে এবং মোড়গুলোতে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছেয়ে গেছে পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনে। বিএনপি নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার জনসভায় দেড়শ মাইক ব্যবহার করা হবে। এছাড়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় খালেদা জিয়ার ভাষণ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসভায় পাঁচ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটানোর টার্গেট নিয়েছে বিএনপি। দুপুর দুইটায় জনসভা শুরু হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপি সভাপতি একেএম মোশাররফ হোসেন বুধবার বিকেলে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন। জনসভাকে সফল করতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা। জনসভাস্থল পরিদর্শন শেষে ফজলুল হক মিলন বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, “খালেদা জিয়ার সাম্প্র্রতিক সমাবেশ দেখে প্রধানমন্ত্রী আবোল-তাবোল বলতে শুরু করেছেন। চক্রান্ত করছেন যেন সমাবেশ সফল না হয়। তবে কোনো ষড়যন্ত্রই সমাবেশ রুখতে পারবে না।” ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, গফরগাঁও ও ঈশ্বরগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশে না আসতে হুমকি দেয়া হচ্ছে। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। জনসভায় খালেদা জিয়ার বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ময়মনসিংহবাসী।” সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, “কোনো শক্তিই বিএনপির এই গণজোয়ার রুখতে পারবে না। ময়মনসিংহের জনসভায় প্রমাণ হবে এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন।” স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সভা ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ মাঠে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনসভাকে সুশৃঙ্খলভাবে সফল করার জন্য বুধবার সার্কিট হাউজে স্বেচ্ছাসেবক কমিটির আহবায়ক মাহবুবুল আলম মাহবুবের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. এ.জেড.এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাকসুর সাবেক ভিপি ফজলুল হক মিলন, ময়মনসিংহ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ.কে.এম মোশাররফ হোসেন এফসিএ, বিএনপির দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, দফতর প্রেস ও মিডিয়া উপ-কমিটির আহবায়ক সৈয়দ এমরান সাহেল প্রিন্স, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম এ হান্নান খান উপস্থিত ছিলেন। সভায় জনসভা সফল করার লক্ষে সার্কিট হাউজ মাঠে ও মাঠের বাইরে সুশৃঙ্খলভাবে কর্তব্য পালনের জন্য দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আবু ওয়াহাব আকন্দের গণসংযোগ ময়মনসিংহে চারদলীয় জোটের জনসভা উপলক্ষে বুধবার শহরের নতুন বাজার, রামবাবু রোডসহ বিভিন্ন স্থানে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ গণসংযোগ করেন। গণসংযোগের সময় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক স্বতঃস্ফুর্ততা দেখা গেছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শহর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মফিদুল হক মোহন, ইসলামী ঐক্যজোটের সাইদুর রহমান, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী ফারজানার রহমান হুসনা, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা রায়হানা ফারুক, যুবনেতা ইব্রাহিম খলিলসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। গণসংযোগের সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। মুক্তাগাছায় জাকির হোসেন বাবুল ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ৮নং দাওগাঁও ইউনিয়নে পথসভা ও গণসংযোগ করেন মুক্তাগাছা থানা বিএনপি’র সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল। এ সময় তার সঙ্গে মুক্তাগাছা থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হারুন, লতিফ মাস্টার, শাহীন, ইসহাক আলী সরকারসহ চারদলীয় জোটের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে জাকির হোসেন বাবুল বলেন, “যে কোনো মূল্যে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা সফল করা হবে।” এ সময় তিনি মুক্তাগাছার নেতাকর্মীদের জনসভায় যোগ দেয়ার আহবান জানান। শহর মহিলা দলের গণসংযোগ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল শহর শাখার উদ্যোগে বুধবার শহরের বিভিন্ন রাস্তায় প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ করা হয়। এ সময় জেলা মহিলা দলের আহবায়িকা নূরজাহান ইয়াসমিন, শহর মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন পারভীন, সাধারণ সম্পাদিকা নাদিরা ইয়াসমিন রীতা, জহরত জাহান মালতী, রোকেয়া বেগম আখি, ১৮ নং ওয়ার্ড মহিলা দলের সভানেত্রী আলেয়া বেগম, মাহমুদা খাতুন লাইজু, জোৎস্না বেগম, মুন্নি, সেলিনা, শিরিনসহ মহিলা দল জেলা ও শহর শাখার নেতারা৪ উপস্থিত ছিলেন। জেলা যুবদলের প্রচার মিছিল শাহ শিব্বির আহাম্মদ ভুলু ও শামীম আজাদের নেতৃত্বে বুধবার দুপুরে জেলা যুবদলের প্রচার মিছিল ময়মনসিংহ শহর প্রদক্ষিণ করে। এ সময় মিছিলে আফছার উদ্দিন আছর, খন্দকার মাসুদুল হক, সুলতান আহাম্মেদ, দিদারুল ইসলাম রাজু, শাকিল উদ্দিন, লুৎফর রহমান দর্পণ, রফিক খান, ফরহাদ আলী, নজরুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, ফরহাদ হোসেন খোকনসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। জেলা মহিলাদলের প্রচার মিছিল জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদিকা অধ্যাপিকা রায়হানা ফারুক এবং কেন্দ্রীয় মহিলাদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফারজানা রহমান হুসনার নেতৃত্বে বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ রেলস্টেশন কৃষ্ণচূড়া চত্বর থেকে প্রচার মিছিল বের হয়ে গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। প্রচার মিছিলে আতিয়া ফাইরোজ মলি, নাজমুন নাহার, তাহমিনা বেগম রিপা, খালেদা বেগম, কাজী ওয়াহিদা নাসরিন, চায়না, রেশমা, লিপি, সুফিয়া, সুমা, শেফালী সহ শতাধিক মহিলা কর্মী অংশগ্রহণ করেন। ভালুকা শ্রমিকদলের প্রচার মিছিল ভালুকা পৌর এলাকায় ভালুকা শ্রমিকদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে একটি প্রচার মিছিল পৌর শহর প্রদক্ষিণ করে। প্রচার মিছিলে জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আদেল, সেলিম সাজ্জাদ, আব্দুল মতিন ফকিরসহ শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। প্রচার মিছিল শেষে নেতারা সমাবেশ সফল করার লক্ষে সবার প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। তারাকান্দা প্রচার মিছিল তারাকান্দা বাজারে মোতাহার হোসেন তালুকারের নেতৃত্বে বুধবার একটি প্রচার মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল শেষে তিনি সবাইকে জনসমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহবান জানিয়েছেন। গফরগাঁয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ওপর হামলা গফরগাঁওয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আপেলের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এপিপি রিপোর্ট : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম অভিমুখে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আসন্ন রোডমার্চ ও চট্টগ্রামের মহাসমাবেশকে জনতার মহাসমুদ্রে পরিণত করে চট্টগ্রাম থেকেই মহাজোট সরকারের পতনের ঘণ্টা বাজানো হবে।’ শনিবার চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ ও চট্টগ্রামের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক কর্মীসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন বলে তার একান্ত সচিব নুরুল আজিম হিরু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিকেলে নগরীর খুলশীস্থ নিউ ঝাউতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশে নোমান বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ মহাজোট সরকারের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রোডমার্চ ও জনসভা মানুষের মধ্যে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছে।’ তিনি বলেন, ‘তিন বছরের শাসনামলে সরকার জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারে নাই। সরকারের মন্ত্রী, এমপিরা দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের প্রধানমন্ত্রী প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন। শেয়ার বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।’ নোমান বলেন, ‘সরকারের পায়ের নীচের মাটি নেই। বর্তমান অবস্থায় দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সরকারের সিংহভাগ মন্ত্রী এম.পির জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এই অবস্থা অনুভব করতে পেরেই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে।’ খালেদা জিয়ার আসন্ন রোডমার্চ ও মহাসমাবেশকে জনতার মহাসমুদ্রে পরিণত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড বি.এন.পির সহ-সভাপতি টিপু সুলতানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বি.এন.পির কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম সম্পাদক এ.এম. নাজিম উদ্দীন, কোতোয়ালী থানা বি.এন.পির সভাপতি এম.এ. সবুর, খুলশী থানা বি.এন.পির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, মহানগর জাসাসের সভাপতি কাজী আকবর, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এস.কে. খোদা তোতন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার রফিকুল ইসলাম খোকন, পাহাড়তলী ওয়ার্ড বিএনপি নেতা এস.কে.বারী খোকন, দেলোয়ার হোসেন দিলু, মোঃ কামাল, এস.এম. আজাদ, মোঃ শাহাজাহান মিন্টু, আসাদুজ্জামান দিদার, মনির উদ্দিন বাবু, ফয়েজ আহমদ, আব্দুর রহমান, আতিকুর রহমান স্বপন, হালিম উদ্দিন, মহিলা দল নেত্রী ফাতেমা আক্তার, সাদিয়া জাহান শিরীন প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এ সরকারের আমলেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে হবে। এখনো যারা বাইরে আছেন তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে জানান আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব কবিতাকন্ঠ পরিষদের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। কামরুল ইসলাম বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমকেও আগামী এক মাসের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে। বিএনপির রোডমার্চ একাত্তরের ঘাতকদের রক্ষার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে কোনো ইস্যু নয়। বিএনপির রোডমার্চের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীসহ একাত্তরের ঘাতকদের রক্ষা করা। খালেদা জিয়া নিজেই সে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।” আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, কবি কাজী রোজী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ ও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ করিম। বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জমুখী রোডমার্চের এক পথসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার জামায়াত নেতাসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মুক্তি দাবি করেছিলেন। এর আগে গত ১১ অক্টোবর সিলেটেও তিনি একই দাবি করেন। এপিপি রিপোর্ট : বুধবার তিনবিঘা পরিদর্শনে এলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। তিনবিঘা সর্বক্ষণের জন্য খুলে দেয়া ভারতেরই সিদ্ধান্ত। এরফলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাসিনা। সেই সঙ্গে তার আশা, তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিও স্বাক্ষরিত হবে শিগগিরই। এই খবর দিয়েছে ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা। পত্রিকাটির অনলাইন এডিশন থেকে এই খবর জানা যায়। আনন্দবাজার লিখেছে, বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ দহগ্রাম হয়ে তিনবিঘা করিডরে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ। তাদের স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। আনন্দবাজার জানায়, তিনবিঘা করিডর সর্বক্ষণের জন্য খুলে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর বাংলাদেশ সফরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। এছাড়াও তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তিও খুব তাড়াতাড়িই সম্পাদিত হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন হাসিনা। তিনবিঘা করিডর সর্বক্ষণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় দু’পাশে থাকা পাটগ্রাম বা দহগ্রামের মতো এলাকাগুলির মধ্যে যোগাযোগ আরও সুগম হল বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। এদিন তিনবিঘায় আসার আগে দহগ্রামে একটি হাসপাতাল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। লিখেছে আনন্দবাজার। তিনবিঘায় পা দিয়ে হাসিনা উচ্ছ্বসিত, কুচলিবাড়ি অসন্তোষেই এই শিরোনাম কলকাতার গণশক্তি পত্রিকার। গণশক্তি লিখেছে, সাতচল্লিশের দেশ ভাগের মধ্য দিয়ে যে বিতর্ক, সমস্যার জন্ম হয়েছিল মাস দেড়েক আগে ঢাকায় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করে তার বেশ কিছু সমাধানের পথে এগিয়েছেন আবার। মেটেনি অনেক কিছুই, সেই চুক্তির ৪২ দিনের মাথায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিদেশমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বর্তমান জোট সরকারের সাংসদ মহম্মদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে আকাশপথে বুধবার আসেন বাংলাদেশের ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গারপোঁতায়। সেখানে ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, বিদ্যুতের সাবস্টেশন ও উন্নয়ন পরিষদ ভবনের উদ্বোধন করেন। এই দুটি ছিটমহলে যাবার জন্যই ভারত সরকার তিনবিঘা করিডর লিজ দিয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথমে ঠিক হয়েছিল ১২ ঘণ্টা করিডর ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে ২৪ ঘণ্টাই করিডর দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন। চুক্তির পরদিন থেকেই ২৪ ঘণ্টাই খোলা আছে করিডর সেই পথ ধরেই সড়ক পথে এই প্রথম তিনবিঘা এলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা। তিনবিঘায় তাদের স্বাগত জানান ভারত সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ এবং স্বরাষ্ট্রদপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্রপ্রসাদ সিং। এখানে বি এস এফ ক্যাম্পে তারা একটি চা চক্রে মিলিত হন। উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনাও হয়। তবে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কেউই মুখ খোলেননি। তিনবিঘা থেকে সড়কপথে বাংলাদেশের পাটগ্রামে একটি দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে যাবার আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনবিঘা করিডর ২৪ ঘণ্টা খুলে দেয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও ছিটমহল বিনিময় কিংবা তিস্তা জলবণ্টন সহ অন্য প্রসঙ্গ সময়ের হাতে সমাধানের ভবিষ্যৎ তুলে দিয়েছেন। হাসিনা বলেন,“ ভবিষ্যতে সমাধানের পথ বেরোবে, সময় লাগবে।” তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিও স্বাক্ষরিত হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনবিঘা করিডর ২৪ ঘণ্টার জন্য খুলে দেয়ায় খুশির আমেজ বাংলাদেশের মানুষের মনে। দহগ্রাম-আঙ্গারপোঁতা ছিটমহলে প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দার কাছে এদিন ছিল উৎসবের মেজাজ। মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবার পর এই প্রথম পা রাখলেন তিনবিঘা এবং এই দুই ছিটমহলে। গণশক্তি আরো লিখেছে, অবশ্য তিনবিঘা করিডর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে এবং দহগ্রাম ও আঙ্গারপোঁতা ছিটমহল যখন আনন্দে ভাসছে তখন তিনবিঘা লাগোয়া ভারতের কুচলিবাড়িতে সংশয়, কিছু অসন্তোষও। ২৪ ঘণ্টা করিডর বাংলাদেশের জন্য খুলে দেয়ায় ক্ষুব্ধ এখানকার মানুষ। কুচলিবাড়ির বাসিন্দা বিশ্বম্ভর রায়, সত্যেন্দ্র রায়, অঞ্জলি রায়দের গলায় অসন্তোষের সুর। তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে দেবার সময় ভারত সরকার কথা দিয়েছিল কুচলিবাড়ির উন্নয়ন হবে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ আজও আসেনি কুচলিবাড়ির গ্রামগুলিতে। প্রতিশ্রুতি মতো হাসপাতাল চালু হলেও চিকিৎসকের অভাবে গ্রামের মানুষকে ছুটতে হয় মেখলিগঞ্জ অথবা জলপাইগুড়িতে। একজন মাত্র মহিলা চিকিৎসক সপ্তাহে ৪ দিন দিনেরবেলাটুকু হাসপাতালে থাকেন। অথচ তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশের জন্য খুলে দেবার পর সে দেশের সরকার ছিটমহলে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্কুল, আধুনিক হাসপাতাল সবই করেছে। রামনিধি হাইস্কুলের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী শিল্পী অধিকারী, গৃহবধূ অলোকা রায় বলছেন, তিনবিঘা করিডর পেরিয়ে মেখলিগঞ্জ যাবার সময় দুরন্ত গতিতে যাওয়া বাংলাদেশের গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেলেও কিছু করার নেই। গত ৪২ দিনে ওই পথে তিনটি পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন ভারতীয়রা। গণশক্তি বলছে, মধ্যরাতে অখণ্ড ভারত ভেঙে জন্ম হয়েছিল ভারত আর পাকিস্তানের। ব্রিটিশ আইনজীবী সিরিল র্যাডক্লিফের কালির আঁচড়ে সীমানা নির্ণয় হয়। মাত্র ৬ মাসের মাথায় তৈরি হয় নতুন মানচিত্র। সেই হলো সমস্যার সূত্রপাত। আর সব থেকে বেশি সমস্যা হয় কোচবিহার রাজ্যে সে সময়ের রাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের জমিদারী স্বত্ব ছিল বৃহত্তর রঙপুর ও দিনাজপুর জেলায়। একইভাবে ওই দুই এলাকার কিছু তালুক ছিল কোচবিহারে। র্যাডক্লিফের কলমের খোঁচায় সব লন্ডভন্ড হলো। জন্ম হলো ছিটমহলের। ছিটমহল হলো দ্বীপের মতো রাষ্ট্রের এমন একটি অংশ যা অপর রাষ্ট্র দ্বারা ঘেরা। ভারতের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে, আবার বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে ভারতের অভ্যন্তরে। বাংলাদেশের ছিটমহল দহগ্রাম আর আঙ্গারপোঁতাকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়তে ভারত সরকার বাংলাদেশকে তিনবিঘা করিডর দিয়েছে। সেখানকার সমস্যা মিটেছে। কিন্তু বাকি ছিটমহলের ৫১ হাজার বাসিন্দার ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। এপিপি, বগুড়া: চারদলীয় জোটের উত্তরাঞ্চলীয় রোডমার্চের মঙ্গলবার দিনের শেষে বগুড়ার জনসভায় বক্তৃতা করেছেন জোট নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা তার বক্তৃতায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, কৃষি, কর্মসংস্থান, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, পুঁজিবাজার, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কথা বলেছেন। খালেদা জিয়া তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এই সরকার তোমাদের ভবিষ্যত নষ্ট করে দিচ্ছে’’। বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে সমবেত লক্ষ সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তরুণরা যাতে ভালো কাজ করে ভালো থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। মাগরিবের আজানের সময় বক্তৃতা শেষ করেন খালেদা জিয়া। কৃষি: বগুড়া’র বিষয়ে খালেদা বলেন, এটা কৃষি প্রধান এলাকা। তাই কৃষকদের গুরম্নত্ব দিতে হবে। তারা বলেছিলো বিনামূল্যে সার দেবে। দিয়েছে। দেয়নি। আমাদের সময় ইউরিয়া সারের বসত্মা ছিলো ২৬০ টাকা। তারা বিনামূল্যে দেয়ার কথা বলে এক হাজার ৬০ টাকায় দিচ্ছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি: বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘‘ব্যবসা বাণিজ্য এই সরকার আসার পরে নতুন হয়নি। দেশে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। বিদেশী বিনিয়োগ নেই। গ্যাস বিদ্যুৎ পানি দিতে পারছে না। সেজন্য কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আরো ষড়যন্ত্র আছে। কলকারাখানা ভারতীয়রা কিনে নেবে। বিদ্যুৎ দেয়ার নাম করে রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বসিয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। সব দলীয় লোকদের কাজ দিয়েছে টেন্ডার ছাড়াই। সরকারি অফিসারেরা বলেছে এটা ঠিক হচ্ছে না। এর জন্য পরে জেল হতে পারে। তাই সংসদে আইন পাশ সুযোগ করে দিয়েছে। আইন করলে কাজ হবে না। অবশ্য আইনের কাঠ গড়ায় দাড়াতে হবে।’’ পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এই সরকারের আমলে শেয়ারবাজারে কিভাবে লুটপাট হয়েছে আপনারা দেখেছেন। একবার হলো ৯৬ সালে লুট করে নিলো। এবার ক্ষমতায় এসে তার থেকে বেশি লুট করে ৩৩ মানুষের টাকা নিয়ে গেলো। আওয়ামী লীগের একজন বলেছে বিড়ালকে শুটকীর পাহাড়া দিতে দিয়েছে।’’ যমুনা ও পদ্মা সেতু: বিএনপি’র ৯১-৯৬ মেয়াদে যমুনা সেতুর কাজ শুরু করার জন্য আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় আওয়ামী লীগ হরতাল দিয়েছিল উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘আমরা যেদিন যমুনা সেতুর ভিত্তি দিতে আসি সেদিন হরতাল ডেকেছিলো। যমুনা সেতুতে তাদের কোনো অবদান কৃতিত্ব নাই।’’ খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এই সরকার পদ্মা সেতু করার জন্য বিদেশের টাকা এনেছে। বিশ্ব ব্যাংক জেনে গেছে দুর্নীতি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক বলেছে পদ্মা সেতুতে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। তাই টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ জনগণকে মিথ্যা বুঝিয়েছে। টপ লেভেলে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি হয়েছে। মনে করবেন না অন্যদের দুর্নীতির কথা বলে বেড়াবেন তাতে কাজ হবে না। আপনাদের প্রতিটি কাজে দুর্নীতি দুর্নীতি দুর্নীতি।’’ কর্মসংস্থান: বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেন, ‘‘সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে শুধু বেকার বাড়াচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে দলে দলের শ্রমিক ফিরে আসছে।’’ সব ওএসডি কর্মকর্তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘তারা বলেছিলো ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কিন্তু ঘরে ঘরে চাকরি নিয়েছে। প্রশাসনে ভালো ভালো অফিসারদের ওএসডি করে রেখেছে। ৭০০ অফিসার রয়েছেন তাদের বলতে চাই ভয় পাবেন না। যারা ওএসডি হয়েছেন সবাই চাকুরি ফিরে পাবেন।’’ সংবিধান সংশোধন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আগামি নির্বাচনে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার জন্য সংবিধান পরিবর্তন করেছে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন জালাও পোড়াও ভাঙচুর সব করেছিলো। দলীয় সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন মানবে না। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিলো তার পরও তারা নির্বাচন করে নাই। তারা জানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ভরাডুবি হবে। তাদের বলে দিতে চাই দেশের সব মানুষের দাবি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সকল দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রমাণ তারা নিরপেক্ষ নয়। তারা ২০০৮ সালে ব্যাপক কারচুপি করেছে। বিরোধী দলের ওপর দমন পীড়ন বিএনপির ও জোটের অনেক নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রেখেছে। তারা নাকি মানবতার বিরম্নদ্ধে অপরাধের বিচার করবে। আমি বলতে চাই আপনারা মানবতাবিরোধী বিচার করবেন কোনো আপত্তি নেই। তবে বিচার হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের ও স্বচ্ছ। সেখানে বিদেশী আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। দলীয় লোক দিয়ে ট্রাইবুন্যাল করা হয়েছে। এতে কোনো স্বচ্ছ বিচার হবে না। তাদের দলে ও পরিবারে অনেক যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। এটা মানবতাবিরোধী বিচারের জন্য নয় জোটকে ধ্বংস করার জন্য। নিজামী, মুজাহিদ সাঈদী সাকা সহ সবাইকে এক বছরের বেশি সময় ধরে আটক রাখা হয়েছে। তাই এদের মুক্তি দিয়ে সত্যিকারের আমত্মর্জাতিক মানের বিচার করতে হবে। নাসির উদ্দিন পিন্টুর চোখ নষ্ট করেছে। আবদুস সালাম পিন্টুর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে চার বছর ধরে আটক রাখা হয়েছে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বাবর, কয়েকজন অফিসারদের আটক রাখা হয়েছে। এগুলো সবই মিথ্যা। বিচার ব্যবস্থা স্বচ্ছ করতে হবে। পুলিশ যারা ভালো কাজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ দেই। আর যারা অতি উৎসাহী হয়ে সরকারের চাটুকারি করছেন তাদের হুশিয়ার করতে চাই। আওয়ামী লীগ নেতারা এখন রাজনীতিবিদদের ডান্ডাবেড়ি পড়ায়। তাদের বলতে চাই আপনারা যা শিখিয়ে যাচ্ছেন আপনাদের ওপর একই রকম হতে পারে। সাবধান হয়ে যান। নাহলে জনগণকে আটকাতে পারবো না। জনগণ স্লোগান দেয় জেলের তালা ভাঙবো অমুক ভাইকে আনবো। আমি বলেছি জেলে তালা ভাঙবেন না। কারণ ওই জেলে তাদেরকে ঢুকাতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে বিরোধী দলের যেসব নেতাদের আটক রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এই সরকার যুবকদের মাদকদ্রব্য খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই যুবকদের বসে থাকলে চলবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সরকার বুঝতে পেরেছে আগামি দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। পুরো বক্তৃতায় বিরোধীদলীয় নেত্রী বারবার বলেন যুবকদের বার বার তিনি বলেন আগামি দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তোমাদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে দেবো। এপিপি রিপোট: আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। তারা ২৬ মার্চ দেশ থেকে পালিয়ে কোলকাতায় গিয়ে বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করেছেন। আমরা শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার নেতা বানাতে চাইলেও শেখ হাসিনা তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা বন্ধ করে দিয়ে পরিত্যক্ত করেছেন। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘‘আধুনিক বাংলাদেশ গঠন ও কৃষি উন্নয়নে শহীদ জিয়া’’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক পরিষদ। সংগঠনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “ক্ষমতায় থাকলে আওয়ামী লীগের এক রূপ আর বিরোধী দলে থাকলে আর এক রূপ দেখা যায়। শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতার চেয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়াটাই বেশি পছন্দ করতেন। আমরা চেয়েছিলাম তিনি স্বাধীনতার নেতা হোন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সব সময় তা এড়িয়ে যেতেন। এসব কথা লিখেছেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর তাজউদ্দিন আহমদ।” দুদু বলেন, “গণতন্ত্র হত্যা, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিনকে বহিস্কার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, নিজের দল আওয়ামী লীগকে ব্যান্ড সবই বঙ্গবন্ধু করেছিলেন। এই কণ্ঠরোধকারী একজন মানুষকে জাতির পিতা করা হয়েছে। এই আলোচনা করলেও সাংবিধানিক আইনে আমাদের জেলে যেতে হবে।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাই বঙ্গবন্ধুকে পরিত্যক্ত করেছেন। কারণ আমরা তাকে আলোচনা সমালোচনার মধ্যে জীবিত রাখতে চাইলেও সংবিধান পরিবর্তন করে শেখ হাসিনা তা বন্ধ করেছেন। এখন কেউ শেখ মুজিবকে নিয়ে পিএইচডিও করতে চাইবে না। কারণ পিএইচডি করতে হলে আলোচনা সমালোচনা দুটোই করতে হয়।” বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কোনো বড় নেতা স্বাধীনতার জন্য কোনো যুদ্ধ করে নাই। আওয়ামী লীগের সব নেতা ২৬ মার্চ সীমান্ত পারি দিয়ে কোলকাতার বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করেছেন।” তিনি বলেন, “শেখ মুজিব স্বাধীনতার মূল চেতনা ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। খন্দকার মোস্তাক এসে বাকশালও বাতিল করে দেয়। তখন দেশ রাজনৈতিক দলশূন্য হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় জিয়াউর রহমান এসে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।” নিতাই রায় বলেন, “তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে ভারত ৯.২২ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়। তাই আগে তিস্তায় সর্বোচ্চ পানি ছিলো ২ লাখ হাজার কিউসেক আর সর্বনিম্ম ১০ হাজার কিউসেক। গজল ডোবায় তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে ভারত পানি নিয়ে যাওয়ায় এখন তিস্তায় সর্বোচ্চ পানি পাওয়া যায় এক হাজার কিউসেক আর সর্বনিম্ম ৪০০ কিউসেক। সেজন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজে বলেছেন তিস্তায়তো পানিই নেই। বাংলাদেশকে কি দেবো।” তিনি বলেন, “আসলেই তিস্তায় পানি নেই। কারণ তিস্তার পানি ৩৫ কিলোমিটার উজানে তিস্তা ব্যারেজ বানিয়ে ভারত প্রত্যাহার করে নেয়। ভারত ষড়যন্ত্র করেই বাংলাদেশকে মরুভূমি বানিয়েছে। উত্তরাঞ্চল মরুভূমি হয়ে গেছে। এখন টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ করে সিলেট অঞ্চলও তারা মরুভূমি করে দেবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, বিএনপি নেতা অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: বর্তমান সরকারকে জালেম, কুফরি ও শিরকি সরকার বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমির ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর লালবাগে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দুর্গাকে ‘আমাদের দুর্গা মা’ বলেছেন। এরপরও তার ঈমান আছে বলে এই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। এই সরকার এদেশে হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করছে। দুর্গার কারণেই নাকি দেশে উন্নতি হয়েছে।” তিনি বলেন, “আল্লাহর নাম বাদ দেয়ার পর দুর্গাই এখন তার ভরসাস্থল। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই দুর্গা তাকে ও তার সরকারকে জনরোষ থেকে বাঁচাতে পারবে না।” আমিনী এ সরকারকে জালেম, কুফরি, শিরকি, গণতন্ত্র হত্যাকারী, ইসলাম বিদ্বেষী সরকার আখ্যায়িত করে বলেন, “খোদার কসম করে বলছি, আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।” তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাদশাহ আকবরের কোনো পার্থক্য থাকলো না। শেখ হাসিনা সব ধর্মকে একাকার করে দিচ্ছেন।” তিনি আরো বলেন, “শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন দিতে চাইলে সব বিরোধী দলকে নিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করা হবে। প্রয়োজনে টানা হরতাল দেয়া হবে।” আমিনী বলেন, “ক্ষমতাকে স্থায়ী করার জন্য সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। কারণ দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে চায় না।” তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করা হলে লাগাতর হরতাল চলবে।” সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কমিটির নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, জামিয়া মুহাম্মদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, জামিয়া রশিদিয়ার প্রিন্সিপার, মাওলানা এরশাদুল্লাহ প্রমুখ। এপিপি, সিলেট: প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারও সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে, কোনও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণ তা মেনে নেবে না। মঙ্গলবার সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, আপনারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। অথচ মইনুদ্দিন-ফকরুদ্দিন সরকারকে উদাহারণ বানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে চান। অথচ সেটি ছিল অবৈধ ও অগণতন্ত্রিক সরকার। সেটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আগে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে তিনি সরকারের ‘চামচা’ বলে অখ্যায়িত করেন। সরকারের একক সিদ্ধান্তে গঠিত নির্বাচন কমিশন জনগণ মানবে না। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সকলের মতামত নিতে হবে। ইভিএমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত অনেক দেশ ইভিএম পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। অথচ কারচুপি করার জন্য বর্তমান সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনে এ পদ্ধতি চালুর কথা বলছে। এটি ভোট চুরির একটি নতুন কৌশল। তিনি এ বিষয়ে হুশিয়ারী উচ্চরণ করে বলেন, তাড়াতাড়ি সংবিধানে আবরও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেন, তা না হলে আপনাদের জনগণের হাতে পরতে হবে। এপিপি, মৌলভীবাজার: বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাত সোয়া দশটায় মৌলভীবাজারের শেরপুরে রোডমার্চের সর্বশেষ পথসভায় বলেছেন, “মানুষ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সময় থাকতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচন দিন।” তিনি বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা জমিজমা কিছুই থাকবে না।” জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করে বলেন, “এই সরকারকে কি আর ক্ষমতায় রাখা যায়? জনতা হাত তুলে বলেন না।” খালেদা জিয়া বলেন, “এখন সময় এসেছে এদের ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।” তিনি বলেন, “সরকার গত নির্বাচনের আগে ওয়াদা করেছিলো দশ টাকায় চাল, পাঁচ টাকায় কাঁচামরিচ খাওয়াবে। এখন কাচামরিচ দুই শত টাকা কেজি। আপনরা কি ১০ টাকায় চাল পাচ্ছেন।” যুবকদের বলেন, “তোমরা কি চাকরি পেয়েছো?” তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন আগে হরতাল হয়েছে। আমাদের কোনো মিছিল করতে দেয়নি। পিকেটিং করতে হয়নি। তারপরও মানুষ এমনিতেই হরতাল করেছে। আওয়ামী তাদের গুন্ডাবাহিনী রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আমদের নেতার্কমীদের নির্যাতন করেছে। একজন নীরিহ পথচারীকে পুলিশ বুট দিয়ে চেপে ধরেছে।” খালেদা জিয়া বলেন, “সরকার বুঝে গেছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বোচন হলে মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে। সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। আর ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনও আমরা মানবো না।” তিনি বলেন, “সরকার সংবিধান পরিবর্তন করেছে। তারা কয়েকটি ধারা যুক্ত করেছে তা যে দলই ক্ষমতায় আসুক তারা নাকি পরিবর্তন করতে পারবে না। এটা কোনো কথা হলো। এর মাধ্যমে জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই সরকারকে কি আপনারা জনগণের সরকার মনে করেন।” বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “কয়েকদিন আগে বিদেশী পত্রিকায় লিখেছিলো ওপার থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা এসেছে। মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দীনরা সেই টাকা ভাগ করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। এরা টাকার বিনিময়ে ক্ষমতায় এসেছে। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, “এখনো সময় আছে দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছেন আর মানুষকে কষ্ট দিয়েন না। মানুষকে আর ডাস্টবিনের খাবার খাওয়াবেন না। আমরা আন্দোলন চাই না। শান্তিপূণ ভাবে নির্বাচন চাই। এখনো সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠা করে নির্বাচন দিন।” তিনি বলেন, “দেশে এখন কোনো উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ড নেই। ওএমএস, টিআর কাবিখার চালও দলীয় লোকেরা বিক্রি করে দেয়। দেশের যখন এই অবস্থা তখন প্রধানমন্ত্রী লটবহর নিয়ে একের পর বিদেশে ভ্রমণ করে বেড়ায়।” শেরপুরের পথসভায় আরো বক্তৃতা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আববাস, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে এম নাসের রহমান, বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাকদ লে. কর্নেল অব. আবদুল লতিফ, নির্বাহী কমিটির সদস্য খালেদা রববানী প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল, সরকারের নানামুখি ব্যর্থতা জনগণকে জানানো ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে সোমবার শুরু হচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের রোডমার্চ কর্মসূচি। সকাল দশটায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে রোডমার্চ শুরু হবে। ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখে রোডমার্চের মধ্য দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে চারদলীয় জোটের আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। কর্মসূচি সফল করতে সকল ধরণের প্রস্ত্ততি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিএনপি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও রোডমার্চ কর্মসূচি ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা রোববার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তিন হাজারের অধিক গাড়ির বহর রাতে সিলেটে পৌঁছাবে। ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত নির্ধারিত ছয়টি পথসভায় বক্তব্য দেবেন খালেদা জিয়া। এছাড়া অনির্ধারিত বেশ কিছু স্থানেও পথসভা করবেন দলীয় চেয়ারপারসন। রাতে সিলেটে অবস্থান করে পরের দিন মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজন করা হয়েছে বড় ধরনের জনসভা। ওই জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও চারদলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়া। আরো বক্তব্য রাখবেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিকল্প ধারাসহ সমমনা বেশ কয়েকটি দলের নেতারা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের দাবি আদায় করতে চায়। তাই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দেশব্যাপি রোডমার্চ কর্মসূচি দিয়েছেন। সিলেট থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম, রংপুর অভিমুখে রোডমার্চ হবে। এসব রোডমার্চে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেবে। তিনি বলেন, “সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ এই সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে এ ধরণের রোডমার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” সুত্র জানায়, প্রথম দফায় সিলেটের পর আগামী ১৮ অক্টোবর রাজশাহী বিভাগ অভিমুখে রোডমার্চ হবে। এই দুটি রোডমার্চ ১৫টি জেলার ওপর দিয়ে যাবে। এরপর আগামী ২৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে জনসভা করবে চারদল। ওই জনসভায়ও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন খালেদা জিয়া। ঈদের পর চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, ও বরিশাল অভিমুখেও রোডমার্চ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কর্মসূচি শেষে বৃহত্তর একুশ জেলায় খালেদা জিয়া জনসভা অথবা রোডমার্চ করতে পারেন। সুত্র জানায়, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশে দলটির মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে। ঝিমিয়ে পড়া অনেক নেতাকর্মী সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ জানান, রোডমার্চ উপলক্ষে স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলের সবাইকে একযোগে মাঠে নামাতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতারা সংশ্লিষ্ট জেলা পরিদর্শন ও কর্মিসভা করেছেন। দ্বন্দ্ব সংঘাত ভুলে সবাই এক সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “বড় দল হিসেবে বিএনপিতে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু কোনো দলীয় কোন্দল নেই।” সিলেটে রোডমার্চ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহবায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন রোববার রাতে বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, রোডমার্চ সফল করতে সকল প্রস্ত্ততি সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্ত্ততি বেশ ভালো। এ পর্যন্ত কোথাও কোনো রকম বাধা বা সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। স্থানীয় পর্যায়ের সব নেতাকে বলা হয়েছে, সব ভেদাভেদ ও ছোটখাটো ভুল- বোঝাবুঝি ভুলে কর্মসূচি সফল করতে হবে। তিনি দুদিন সিলেট অবস্থান করে শুক্রবার ঢাকায় পৌঁছেছেন।” ড. মোশাররফ বলেন, “সমমনা আটটি দলের নেতৃবৃন্দ, এলডিপির কর্নেল অলি আহমেদ, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল অব. ইবরাহিম বীর প্রতীকের যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে কে কে যাবেন তা তিনি সঠিক বলতে পারেন নি। বিকল্প ধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী যাবেন কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে ড. মোশাররফ বলেন, “সেটা এখনো বলতে পারছি না।” সকাল দশটায় নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে যাবে। এ সময় ছয়টি পথসভায় ভাষণ দেবেন খালেদা জিয়া। পথসভার স্থানগুলো হলো: নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের তারাবো চৌরাস্তা, নরসিংদীর ইটখোলা মাঠ, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্ব রোড কড্ডার মোড়, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ মোড় ও মৌলভীবাজারের শেরপুর। এরপর রোডমার্চের বহর রাতের কোনো এক সময় সিলেটে পৌঁছাবে। রাতে সিলেট সার্কিট হাউজে অবস্থান করে পরদিন মঙ্গলবার প্রথমেই দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হযরত শাহ জালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করবেন। বিকেল তিনটায় সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করবেন। মঙ্গলবার রাতে রোডমার্চ বহর আবার ঢাকায় ফিরে আসবে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ঢাকা থেকে সিলেট, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম অভিমুখে তিনটি রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরে চট্টগ্রামের কয়েকজন সিনিয়র নেতার দাবি ও হজের কারণে রোডমার্চ স্থগিত করা হয়। ওই দিন, অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে জনসভা করা হবে। আর চট্টগ্রামের রোডমার্চ কোরবানির ঈদের পর হবে বলে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন। এ ছাড়া পরে খুলনা, বরিশাল ও রংপুর অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। এপিপি রিপোর্ট: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেছেন, “উনি পাগল, উনি শিশু।” নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান প্রসঙ্গে নব্বইয়ের দশকে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।” তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের এ বর্ষীয়ান নেত্রী এ মন্তব্য করেন। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় নৃত্যশালা মিলনায়তনে শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত ‘তুমি বাংলাদেশ’ নামক ছাপচিত্র প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে বলে প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন-সেই ঘোষণার সঙ্গে সুর মিলিয়ে সাজেদা চৌধুরী বলেন, “আমরা নির্বাচন করবোই। আপনারা (বিএনপি) না আসলে জনগণ থেকে প্রত্যাখাত হবেন।” ম্যাডাম এই ভুল করবেন না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেত্রী বলেন, “নির্বাচনে আসুন। আমরা হেরে গেলে আপনাদের জয় মেনে নেবো। গণতন্ত্র চাইলে নির্বাচনে আসতেই হবে।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. অহিদুজ্জামান চাঁন, শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি প্রমুখ। বক্তারা সকলেই শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার জীবনী স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা করেন। এপিপি রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, “খালেদা জিয়ার কথা অনুসারে রোডমার্চের পর বিএনপি খেলায় নামলে তারা আত্মঘাতী গোল খাবে।” বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ‘দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে জঙ্গিবাদি-জামাত-শিবির-আমিনী গংদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিকল্প নেই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ পরিষদ নামে একটি সংগঠনের এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বিএনপি’র ট্র্যাক রেকর্ড ভালো নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি এখনো জতির কাছে তাদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ বা অনুতাপ প্রকাশ করেনি। জনগণ আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে বিএনপিকে বেছে নেবে- এটা আমার বিশ্বাস হয় না।” ওবায়দুল কাদের এ সময় আরো বলেন, “রাজনীতিবিদদের কাজ করতে হবে জনগণের মনের ভাষা বুঝে।” জনমতের হাওয়া ঘুরে গেলে অনেক বিশ্বস্ত লোকও নিরপেক্ষ হয়ে যায় দাবি করে তিনি বলেন, “বালির বাঁধ দিয়ে জনমতের জনস্রোত বন্ধ করা যায় না।” “বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা যেভাবে সুনামির মতো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশও এর হাত থেকে রেহাই পাবে না। এজন্য সরকার এবং সবাইকে সতর্ক থাকা জরুরি।”- বললেন ওবায়দুল কাদের। জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য সরকারকে আগামী দু’বছরের মধ্যে ৭০ শতাংশ বাকি কাজ সম্পন্ন করার তাগিদও দেন তিনি। ১৯৭৫ এর পর এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান ঘটেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি এতদিন বিকাশের সুযোগ পেয়েছে। আমাদের নিজেদের মধ্যকার বিভক্তির জন্যই স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি এই সুযোগ পেয়েছে।” সাম্পদায়িকতার বিষবৃক্ষের মূলোৎপাটনের জন্য সবাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। আব্দুল হক সবুজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, নগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলন, ওলামা লীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসাইন বিন হেলালী প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট কারচুপি করে ফলাফল বদলে দেয়া যায়। সেজন্য ইভিএম মেশিনের ব্যবহার নিরাপদ নয় বলে দাবি করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন। তিনি বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। তাদের মেয়াদও শেষ। তাদের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করবো না।” এ সময় সাংবাদিকদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ডকুমেন্টারিতে দেখানো হয় কিভাবে ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) এ ভোট কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল পাল্টে দেয়া সম্ভব। এছাড়া বিশ্বের কোনো কোনো দেশে ইভিএম মেশিন বাতিল করা হয়েছে তাও দেখানো হয়। ডকুমেন্টারিতে দেখানো হয়, জার্মানী, আমেরিকা, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে ইভিএম মেশিন নিয়ে বির্তক হওয়ায় সেখানে এই মেশিন ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জার্মান আদালত ২০০৯ সালে এক রায়ে বলেছে, ইভিএম মেশিন খুব সহজেই টেম্পারিং করা সম্ভব। এতে ভোট পুনঃগণনার সুযোগ নেই। তাই আদালত ওই মেশিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। ডকুমেন্টারিতে আরো দেখানো হয় কিভাবে ব্যালট ইউনিট ও কন্ট্রোল ইউনিট টেম্পারিং করে এক মার্কার ভোট অন্য মার্কায় দেখানো সম্ভব। একই সঙ্গে ভোটের সংখ্যাও বাড়ানো কমানো সম্ভব। মির্জা আলমগীর বলেন, “ডকুমেন্টারি থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে ইভিএম নিরাপদ নয়। এ কারণে আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার বলে আসছি ইভিএম আমাদের দেশের জন্য নিরাপদ নির্বাচন ব্যবস্থা হতে পারে না। আশা করবো নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ইভিএম ব্যবহারের চেষ্টা থেকে বিরত থাকবে। দেশের জনগণের ওপর এই ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।” নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে সেক্ষেত্রে বিএনপির বক্তব্য কি জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, “নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। সেখানে এ মেশিন ব্যবহার মানবে কিনা তা স্থানীয় দলগুলোর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা এর ঘোরতর বিরোধীতা করছি।” আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আর কোনো আলোচনার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে বিএনপির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সুরঞ্জিত বাবু ৭২ সালে সংবিধানে স্বাক্ষর করেননি। তিনি সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় তিনি প্রতিদিন বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা থাকবে। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর তিনি পাল্টে যান। তার কথায় মনে হয় সংবিধান বাইবেল। আসলে তা নয়। সংবিধান দেশের মানুষের জন্য। দেশের মানুষের সুবিধার জন্য এটা বার বার পরিবর্তন করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও হতে পারে।” সংবাদ সম্মেলনে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে শ্যামা ওবায়েদ। বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাকে সহায়তা করেন ক্যাপ্টেন (অব.) সালাউদ্দিন, অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ এপিপি রিপোর্ট: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঢাকা-থেকে সিলেট পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচি সফল করতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা চলছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সভা শুরু হয়েছে। সভায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি হারুন আল রশিদ, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি এম ইলিয়াস আলী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও নরসিংদী জেলা সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হক আসফিয়া, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি নাসের রহমান, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম ফয়সাল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত আছেন। এ ছাড়াও যেসব জেলার ওপর দিয়ে রোডমার্চের গাড়ি যাবে সেসব জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সভায় উপস্থিত আছেন। এদিকে সোমবার বিকাল ৩টায় গুলশান কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে রাজশাহী বিভাগে রোডমার্চ কর্মসূচির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট জেলার নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এপিপি রিপোর্ট: আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রীরা হয়তো দুর্নীতিতে স্মার্ট নন, তবে তারা তাদের কাজে স্মার্ট --এ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার দুপুরে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিসভার রদবদলের সম্ভাবনাকেও নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, `অনেকে বলেন মন্ত্রীরা স্মার্ট না। আমি বলবো হয়তো তারা একটা বিষয়ে স্মার্ট না, সেটা হলো দুর্নীতি বা চুরি করার ব্যাপারে। তবে তারা দেশের উন্নয়নে, জনগণের স্বার্থে কাজ করার ব্যাপারে স্মার্ট।` মন্ত্রিসভার রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন,`মন্ত্রিসভার রদবদল সম্পূর্ণ আমাদের এখতিয়ার। এখন বলা যাবে না। হলে দেখতে পাবেন। না হলে দেখবেন না। `প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, `এতো কাজ করার পরও আমাদের সমালোচনা হয়। বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোগুলো মাঝে মাঝে এতো টক হয়ে যায়, যে তাতে আর মিষ্টি কথা থাকে না।` তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘ভাবটা এমন যে এতো উৎপাদন আমরা কেন করলাম। যেন এটা করা আমাদের অপরাধ হয়ে গেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, `সাংবাদিকরা রাজনীতিবিদদের (রাজনীতিকদের) সমালোচনা করে, কিন্তু তাদের সমালোচনা করা যায় না। রাজনীতিকদের ঢালাওভাবে সমালোচনা করা গেলে সাংবাদিকদের কেন সমালোচনা করা যাবে না? রাজনীতিকরা যদি সহ্য করতে পারেন, সাংবাদিকরা কেন সহ্য করতে পারবেন না?` |
নিউজ সার্চ
All
নিউজ আর্কাইভ
May 2018
|