খালেদা জিয়া বলেন, ‘ব্যর্থতার পাল্লা ভারী না করে সময় থাকতে সরে পড়–ন। ব্যর্থতার পাল্লা আরও ভারী হলে প্রভুরাও আপনাদের ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। কারণ প্রভুরা সব সময় দেখে জনসমর্থন কোন দিকে। একের পর এক ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়ে আপনারা জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছেন।’
ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারকে ব্যর্থ ও অযোগ্য উল্লেখ করে খালেদা বলেন, ‘যে সরকার জনগণের ভাত কাপড় দিতে পারে না, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি দিতে ব্যর্থ হয় সে সরকার ব্যর্থ ও অযোগ্য সরকার। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত তারা এ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এ দেশে যত বার অগণতান্ত্রিক সরকার এসেছে তত বারই আওয়ামী লীগ তাদের সহযোগিতা করেছে। একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করে তখন শেখ হাসিনা তার সঙ্গে নির্বাচন করে এরশাদের সরকারকে বৈধতা দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকারকে নিজেদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে দাবি করেছে। শুধু তাই নয়, এ অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ সরকারের সব অবৈধ কাজের বৈধতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে।’
স্বৈরাচারী এরশাদকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বলে দাবি করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণের রাজনীতি করে।’
স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে মাঠে নামলেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা।’ দলীয় লোক ছাড়া সরকার কাউকে চাকরি দিচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যারাই থাকুক, তাদের উচিত যোগ্যদের কাজের সুযোগ দেওয়া। কিন্তু এ সরকার দলীয় পরিচয় ছাড়া কাউকে কাজ দিচ্ছে না।’সরকার দেশকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা পাকা করেছে বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এ সরকারের আমলে বর্ডার (সীমান্ত) খুলে দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে বসানো হয়েছে হাট। ফলে ভারত থেকে অবাধে অস্ত্র ও ফেনসিডিল আসছে। যুব সমাজকে ধ্বংস করতেই এসব করা হচ্ছে।’
এ সরকারের হাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয় উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সরকারের কী চুক্তি হয়েছে তা এখনও দেশবাসীকে জানানো হয়নি। দেশের ভেতর দিয়ে তাদের (ভারতের) যানবাহন আসা-যাওয়া করবে অথচ তারা ট্যাক্স দেবে না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি রাস্তা-ঘাট অন্য দেশের স্বার্থে ব্যবহার হবে জনগণ তা মেনে নেবে না।’ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হাতে দেশ জিম্মি হয়ে আছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তাদের টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, চাঁদাবাজিতে দেশের মানুষ আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মেয়েদের উপর নির্যাতন।’ইভটিজিংয়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে নাটোরের এক শিক্ষক ও ফরিদপুরের এক মা প্রাণ হারিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা আরও অনেক ঘটছে। কিন্তু সব ঘটনা মানুষ জানতে পারছে না। কারণ পত্রিকায় এগুলো ঠিক মতো লিখতে দিচ্ছে না সরকার।’যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
যুবদল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরবের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।