এপিপি রিপোর্ট: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “জার্মানীর হিটলারও নির্বাচিত ছিলেন। তিনি তার পার্টি পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণে তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। সুতরাং নির্বাচিত হলেই যে জনগণের কল্যাণে কাজ করবে তা ভাবার কোনো কারণ নেই।” রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। ‘‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র’’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সমমনা ১০টি গণতান্ত্রিক সংগঠন। এতে সভাপতিত্ব করেন আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। তিনি বলেন, “দেশে আইনের শাসন মানবাধিকার গণতন্ত্র কোনোটি নেই। গণতন্ত্রের মূলকথা হলো মানবাধিকার ও আইনের শাসন। জনগণের কল্যাণের জন্য যে আইন তা হলো আইনের শাসন।” বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের সভাপতি শ্যামা ওবায়েদ ইসলাম, নাগরিক সংসদের সভাপতি খালেদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমীর সভাপতি মেজর অব. মেহবুব রহমান, ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমান, জাগ্রত জনতা ফোরাম সভাপতি শহীদ চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম সম অধিকার আন্দোলনের সমন্বকারী মনিরুজ্জামান মনির, প্রজন্ম একাডেমীর সভাপতি কালাম ফয়েজী, উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদ সভাপতি রমিজ উদ্দিন রুমী, সেক্রেটারি মো. আল আমিন, ভয়েস অব বাংলাদেশ সভাপতি এহসানুল হক জসিমসহ সচেতন যুব সমাজ ও স্বদেশ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এখন দেশে ব্রুট মেজরিটি দিয়ে অনেক আইন করা হচ্ছে যা জনগণের পক্ষে যাচ্ছে না। সংবিধান সংশোধন করে কতগুলো আইন করা হয়েছে যা মৌলিক গণতন্ত্রের পরিপন্থি।” তিনি বলেন, “জনগণের কল্যাণের জন্য যে আইন সেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” তিনি বলেন, “মহাজোট সরকার গঠন করে জনগণকে ভুলে গেছে। তারা জনগণ ও বিরোধী দলের উপরে নির্যাতন চালাচ্ছে।” মির্জা আলমগীর বলেন, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকলেই বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকা উচিত। কারণ এখনো সেই অবস্থা তৈরী হয়নি যাতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যায়। কিন্তু সরকার কারো মতামত না নিয়ে তত্ত্বাধায়ক সরকার বাতিল করেছে। সংবিধানে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাও ব্রুট মেজরিটি দিয়ে বাতিল করেছে।” তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এমইউ আহমেদকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাকে গ্রেফতার করা হলো। ঘটনার দিন তিনি মুন্সিগঞ্জে ছিলেন। তার স্ত্রী বলেছে তাকে মারতে মারতে গাড়িতে উঠানো হয়। ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে ইলেক্ট্রিক সর্ট দেয়া হয়। আমরা যখন এটাকে পুলিশ হেফাজতে হত্যাকাণ্ড বলছি তখন সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছেন। তারা বলছেন বিএনপি লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে। বিএনপি কখনো লাশ নিয়ে রাজনীতি করে না। অতীতে আপনারাই লাশ নিয়ে রাজনীতি করেছেন।” তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে মেরেছেন। এটা কোন মানবাধিকার। এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড চলছে। হিউম্যান রাইটসসহ দেশীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তিনগুণ বেড়ে গেছে। তারা সরকারকে অস্ত্র না দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।” মির্জা আলমগীর বলেন, “সরকার আগের মতো সকল সংবাদপত্র বন্ধ করতে পারছে না। কিন্তু মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে নির্যাতন করেছে। শীর্ষ কাগজ বন্ধ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন করছে। জয়নুল আবদিন ফারুককে পিটিয়েছে।” তিনি বলেন, “এখন যারা গণতন্ত্রে আইনের শাসন মানবাধিকারে বিশ্বাস করেন তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।”
0 Comments
এপিপি রিপোর্ট: লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, খুনীদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে তার কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল তারা অনেকেই লিবিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। গাদ্দাফি তাদের আশ্রয় দিয়েছিল। সেই গাদ্দাফিরও পতন হয়েছে, সেই গাদ্দাফি এখন কোথায়?’ শনিবার সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ফারুক, রশিদসহ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য ১৯৯৬ সালে গাদ্দাফি কোরআনের আয়াত দিয়ে আমাকে চিঠি পাঠিয়েছিলো। আমিও কোরআনের আয়াত দিয়ে ঐ চিঠির জবাবে লিখেছিলাম, মেয়ে হয়ে বাবার হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার আছে। সন্তান হয়ে পিতা হত্যার বিচার না করা হবে অপরাধ।’ তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। তাদের লিবিয়া পঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। লিবিয়ায় কারা এই খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলো আমরা তাদের চিনি। জিয়ার ধারাবাহিকতায় তার স্ত্রী খালেদাও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারিতে পুনবাসন করে।’শুধু জিয়া, খালেদা জিয়াই নয় এরশাদও কম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই এরশাদ সাহেবও কম যাননি। বঙ্গবন্ধুর খুনী ফারুককে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিলেন।’ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর মতো ত্যাগের মানসিকতায় নিজেদের গড়ে তোলার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেরা কী পেলাম সেটা না দেখে দেশ ও জাতিকে কী দিতে পারলাম সেটাই দেখতে হবে। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন সেটাই দেখেছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর এ ত্যাগের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।’ এ সময় তিনি লিবিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির কঠোর সমালোচনা করেন। আলোচনা সভায় আবেগাপ্লুত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এ মাত্র ১৫ দিন আগে দেশ ছেড়ে বাইরে গেলাম। একদিন শুনলাম আমাদের কেউ নেই, সবাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। ৩২ নম্বর বাড়ির একটি প্রাণীও বাঁচেনি। সবাইকে হত্যা করার পর ঘাতকরা আমার ছোট ভাই রাসেলকে মায়ের লাশের পাশে নিয়ে হত্যা করে। রাসেল বলেছিলো আমি মায়ের কাছে যাবো। এরপর, জিয়াউর রহমান আমাদের দীর্ঘ দিন দেশে ফিরতে দেয়নি। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এবং টুঙ্গীপাড়ার বাড়ি দীর্ঘ দিন সিল করে রাখা হয়। আমার অন্তঃসত্ত্বা চাচীকে তার ছয় সন্তানসহ তার র খুলনার বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়। আমরা ফুফুকে তিন মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিলো। ছোট দুই সন্তানের সামনে শেখ মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা করা হয়।’শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এতো জনপ্রিয় ছিলেন যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, অপপ্রচার চালিয়েও তার জনপ্রিয়তায় তারা নষ্ট করতে পারেনি। তখনই ঘাতকরা তাকে হত্যা করে। ফারুক-রশিদ তাদের সাক্ষাতকারেও এ কথা বলেছিলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো সামরিক স্বৈরশাসকরা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে একটি এলিট শ্রেণী সৃষ্টি করেছিলো।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ নেই। উচ্চাভিলাষ থাকলে কম্প্রোমাইজ করে অনেক কিছু করতে পারতাম। আমার বাবা কোনো দিন কম্প্রোমাইজ করেননি। আমার রাজনীতির একটাই লক্ষ্য, সেটা হলো জনগণের কল্যাণ করা। আমার বাবা সারাজীবন সেটা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাবো একটাই আজকের দিনের প্রতিজ্ঞা।’ ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারাকাত, ড. হামিদা বানু ও অধ্যাপক আবুল কাসেম। এপিপি রিপোর্ট: বিএনপিপন্থী আইনজীবী এম ইউ আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই মৃত্যু একটি হত্যাকাণ্ড, পুলিশি হেফাজতে অকথ্য নিপীড়নের কারণেই এম ইউ আহমেদকে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকারের অন্ধ হিংস্রতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো।’ শুক্রবার গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতার দম্ভে বিরোধী দল তথা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মিথ্যা মামলা, পাশবিক নির্যাতন, হত্যা ও গুম করার মতো অমানবিকতা ও পৈশাচিকতা অব্যাহত রেখেছে। অ্যাড. এম ইউ আহমেদের মতো একজন বিজ্ঞ আইনজীবীকে পুলিশি নির্যাতনে হত্যার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হাইকোর্টের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গত ১১ আগস্ট রাতে সেহেরীর সময় ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ এম ইউ আহমেদকে গ্রেপ্তার করে।’ সংগঠনটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘পুলিশের নির্যাতনে গুরুতর আহত আইনজীবী এম ইউ আহমেদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (শুক্রবার) মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।’ বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এম ইউ আহমেদকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে নিষ্ঠুরভাবে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন ধরে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে শনিবার দুপুর ১টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।’ খালেদা জিয়া অ্যাড. এম ইউ আহমেদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবার, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেন। অপর এক শোকবার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুলিশী নির্যাতনে মমতাজউদ্দিন আহমেদের (এম ইউ আহমেদের) মৃত্যুতে গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরই নয়, বরং আইনজীবীদের মতো সম্মানিত নাগরিকদেরও হত্যা করছে। এই বর্বোরোচিত ঘটনায় জনসমাজে যে আতঙ্ক ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি হলো তার জন্য সরকারকে একদিন বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে।’ এপিপি রিপোর্ট: এই মুহূর্তে মন্ত্রিসভার কোনো রদবদল হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চলমান সমালোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে মন্ত্রিসভার কোনো রদবদল হচ্ছে না। মন্ত্রীরা তো ভালো কাজই করছেন। তারা কাজ করে যাচ্ছেন।’ প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন মন্ত্রিসভা গঠন করি, বিএনপি তখন বলেছিল এটা কচিকাঁচার মেলা। দীপু মনি বা হাছান মাহমুদের বয়স ৫০ নিচে। বাকিদের তো ৫০-এর ওপরে। ৭০ বছর বয়সী মন্ত্রীও আছেন মন্ত্রিসভায়।’ তিনি বলেন, ‘এমন কোনো সমালোচনা করবেন না, যাতে এই সরকার দুবর্ল হয়। প্রতিপক্ষ সেই সুযোগ নিতে পারে।` `জিয়ার আমলে ট্রানজিট কাঠামো তৈরি হয়` বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `এটা স্বাক্ষর করেছিল বাংলাদেশ ও ভারতের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী ও প্রণব মুখার্জী।’ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, ট্রানজিট চুক্তি হবে না। কারণ এখনো অবকাঠামো বা রাস্তাঘাট ঠিক হয়নি।’ সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা তো বিরূপ পরিবেশে কাজ করছি। ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, তখন অনেক মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা ছিলেন। এখন তারা নেই। এই সরকারের বিরুদ্ধে কেন এতো সমালোচনা হচ্ছে?’ বিআরটিসি বাস নামছে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সড়ক যোগাযোগের চেয়ে রেলপথের ওপর জোর দিচ্ছি বেশি। তবে ইতিমধ্যে আমরা ৩০০টি বাস এনেছি। আরও ৪০০টি বাস আনব। এছাড়া সৈয়দপুর-পার্বতীপুরের পুরনো লোকোমোটিভগুলো (ইঞ্জিন) আমরা সংস্কার করছি। সেগুলো চালু করব। আমরা কি সেই ইঞ্জিনগুলো ফেলে দেব? পুরো রেললাইনকে আমরা ব্রডগেজ করার উদ্যোগ নিয়েছি।’ জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজেলে ভর্তুকি দিচ্ছি। বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি। এতো ভর্তুকি দিয়ে উন্নয়নকাজ কিভাবে করব? ভর্তুকির কারণে উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’ ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকেই তো আমাদের ওপর নির্যাতন চলছে। আমাদের লোকজনের ওপর মামলা, হামলা করে তছনছ করে দিয়েছে। প্রশাসনকে কোনো কাজই করতে দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার আমলে সাংবাদিকরা স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশে লিখছেন।’ ২০০১ সালে জোট সরকারের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ওই সময়ের নির্যাতনকে তাণ্ডবের সঙ্গে তুলনা করেন। গঠনমূলক সমালোচনা করুন উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের সমালোচনা না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে মিডিয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের সমালোচনা করা হচ্ছে। এর ফলে দেশ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করেন। কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলি এমন কোনো সমালোচনা করবেন না।’ তিনি বলেন, ‘সমালোচনায় আপত্তি নেই তবে আমার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। আমার আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে কষ্ট পাই। মন্ত্রীরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। মনে রাখতে হবে এখানে অনেক সমস্যা। বিগত সরকারের সৃষ্ট সমস্যার বোঝা নিয়ে আমাদের ক্ষমতায় আসতে হয়েছে।’ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ধারা চেতনা যেন ব্যাহত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর বার বার আঘাত এসেছে। অনেক সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে এনেছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে আগে বেসরকারি টেলিভিশন ছিলো না। আমরা আগে যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখন বেসরকারি টিভি চ্যানেল চালু করেছিলাম। বেসরকারি বেতার চালু হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ সব শ্রেণীর মানুষের অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এর জন্য খেসারতও দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন রাতে টিভি খুললেই সরকারের ঢালাও সমালোচনা। উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারের সমালোচনা করা হয়। এভাবে সমালোচনা করে দেশটাকে কেথায় নিয়ে যাচ্ছে তার হুঁশ থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বাঙালিদের পরচর্চা করা ছাড়া চলে না। তবে গঠনমূলক সমালোচনা করলে তাতে আমরা ভুল ত্র’টিগুলো শুধরে নিতে পারবো। সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে অপসাংবাদিকতা ও হলুদ সাংবাদিকতা যাকে বলে সেটা যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। এ ধরণের উদ্দেশ্যমূলক দেশের জন্য ও রাজনীতির জন্য অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এর খেসারত দিতে হবে। এক সময় খেসারত দিতে হয়েছে। বার বার আঘাত এসেছে, আর যেনো আঘাত না আসে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সংগ্রাম করে সংবিধানে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে এনেছি। এটার বিষয়ে হয়তো অনেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ক্ষেত্রে দুই একটি বিষয়ে আপত্তি করতে পারেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পুরোপুরি ফিরে যেতে সময় লাগবে। এ জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু ৩৫ বছরে সময়ের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিরও পরির্তন হয়েছে। বুড়িগঙ্গার পানিও আগের মতো নেই। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রঙও পরিবর্তন হয়। ৩৫ বছরের রাজনীতিতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। ৩৫ বছর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে একটু সময় লাগবে।’ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের অষ্টম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার কথা উল্লেখ্ করে বলেন, ‘সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে, কাজ চলছে।’ সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্লট দেওয়া হয়েছে, ফ্ল্যাট প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের সাহায্যের জন্য ৩০ লাখ টাকার তহবিল করা হয়েছে। এই তহবিল আরও বাড়ানো হবে।’ ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ, প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মুসা, সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব ও ইত্তেফাকের সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক ও সিইও মঞ্জরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজের মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, সিপিবির সভাপতি মনজুরল আহসান খান ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ওয়ার্কার্স পাটির আনিসুর রহমান মল্লিক, ডিইউজের সভাপতি শাহ আলমগীর, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সূর্য, বিএফইউজের সহসভাপতি ড. উৎপল সরকার, বার্তা সংস্থা এপির ঢাকা ব্যুরো চিফ ফরিদ আহমেদ প্রমুখ। সাহিদ সিরাজী: দেশের চলমান সংকট নিরসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ঈদের পর যৌথভাবে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাম গণতান্ত্রিক দলগুলো। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরাও থাকছে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, বামপন্থি এসব দলের নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। বাম-গণতান্ত্রিক দলগুলোর সমন্বয়ে আলাদা জোট গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই যৌথ কর্মসূচি দিয়ে অগ্রসর হওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে এসব দলের নেতারা জানান। তারা জানান, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট নিরসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, শেয়ারবাজার কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পুর্ণ ভেঙে পড়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যে সব প্রতিশ্রুতি ছিলো তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। বরং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির উল্টো স্রোতে সরকার অগ্রসর হচ্ছে বলে এসব দলের নেতারা অভিযোগ করেন।তাদের মতে, ‘৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কথা বলে সরকার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক করে তুলেছে। এক দিকে সরকারের ব্যর্থতা যেমন দিন দিন ভারি হচ্ছে, অন্যদিকে সেই সুযোগে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী, সাম্প্রদায়িক, উগ্র জঙ্গিগোষ্ঠী আবারো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এ পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, বাম শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি বলে এসব দলের নেতারা মনে করছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্য থেকেও এ ধরণের উদ্যোগ রয়েছে। ১৪ দলের বাইরে সিপিবি ও বাসদ এসব ইস্যুতে ইতিমধ্যে কয়েকটি যৌথ কর্মসূচি পালন করেছে। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার বিষয়েও এ দুই দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ছোট ছোট বামপন্থি দলগুলোর সমন্বয়ে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া ১৪ দলের শরিক গণতন্ত্রী পার্টি, ওয়ার্কার্স পর্টি, জাসদসহ অন্যদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিষয়টি আলোচনা চলছে। এই প্রক্রিয়ায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিও রয়েছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামও এই প্রক্রিয়া আসতে পারে বলে জানা গেছে। সিপিবির উদ্যোগে এসব দলের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ঈদের পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে বলে এসব দলের নেতারা জানিয়েছেন।তবে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ এই মুহূর্তেই কোনো জোটগত প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছে না। তারা চলমান সংকটের বিরুদ্ধে কথা বলতে ও আওয়ামী লীগকে চাপে রাখতে অন্যান্য বাম-গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে ইস্যু ভিক্তিক আন্দোলনে থাকবে বলে দল দু’টির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘সরকারের ব্যর্থতার বোঝা আমরা বহন করবো। সরকারের মন্ত্রীরা আবোল-তাবোল কথা বলছেন। ১৪ দলের ২৩ দফায় যা ছিলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও সেগুলো ছিলো। সে সব প্রতিশ্রুতির কোনো বস্তবায়ন নেই।’ তিনি বলেন, ‘১৪ দল নিস্ক্রিয় হয়ে আছে। এই অবস্থায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বামপন্থি দলগলোর সঙ্গে দ্রব্যমূল্যসহ জনজীবনের সংকট এবং ’৭২ এর মুল সংবিধানে ফিরে যাওয়ার দাবিতে আমরা রাজপথে আন্দোলনের চিন্তাÑভাবনা করছি। এসব ইস্যুতে যারা একমত তাদের ঐক্যবদ্ধ করার একটা উদ্যোগ আছে।’ জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘১৪ দল, মহাজোট কোনোটারই কার্যকারিতা নেই। যদিও এটি কার্যকর হওয়া না হওয়া আওয়ামী লীগের উপর নির্ভর করে। তবে আওয়ামী লীগ ছাড়া ১৪ দলের অন্য যে শরিক রয়েছে বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।’ গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম বলেন, ‘দেশে একটা রাজনৈতিক সংকট চলছে। আওয়ামী লীগের একলা চল নীতি এর জন্য দাযী। চলমান সংকট এবং সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো এক জায়গায় আসার চেষ্টা করছি। সিপিবি, বাসদ, জনসংহতি সমিতির সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। ঈদের পর তৎপরতা শুরু হবে।’ ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ‘সরকার বিপর্যয়ের মধ্যে চলে গেছে। কোনো বিষয়েই সরকার জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। এই সুযোগ নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী আবারো তৎপর হয়ে উঠছে। দেশের মানুষের প্রতি আমাদেরও কম বেশী দায়িত্ব রয়েছে। আমরা ঈদের পর দলগতভাবে মাঠে নামবো। কমন ইস্যুতে সমমনাদের সঙ্গে আমরাও আন্দোলনে থাকবো।’ এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, ‘বর্তমান সংকট থেকে উত্তোরণে আমরা আন্দোলনে রয়েছি। এই আন্দোলনে অপরাপর বাম-গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ যৌথ ও আন্দোলনের যাওয়ার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই আমরা বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, জনসংহতি সমিতি, গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদের সঙ্গেও আলোচনা হবে। অনানুষ্ঠানিক কথা বার্তা হয়েছে। যৌথ মুভমেন্টের মধ্য দিয়ে স্থায়ী জোটের দিকে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ এপিপি রিপোর্ট: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুতের ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সোমবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের সভাপতিমন্ডরীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দ আশরাফ বলেন, পঁচাত্তরেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সে চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে শেখ হাসিনাকে হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুতের ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। শেখ হাসিনাকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থার কথা আমরাও স্বীকার করি। কিন্তু সেটা নিয়ে একটি মহল পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। কোনো কোনো পত্রিকা আন্না হাজারে খুজছে। কিছু টিভি চ্যানেল রঙ মিশিয়ে উপস্থাপনের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। সেটিও ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। যাতে ষড়যন্ত্রকারীরা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার সুযোগ পায়। তিনি বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে একটি মহল আমাদের দেশে ভারতের আন্না হাজারে খুজছে। আমাদের দেশে সরকার আছে, সংসদ আছে, গণতন্ত্র আছে। সরকার দুনীতিতে এতই নিমজ্জিত। সরকার এমন কোনো দুর্নীতি করেনি যে আন্না হাজারেকে খুঁজতে হবে। আন্না হাজারেকে কারা খুজছে সেটা বুঝতে হবে। সেদিন যারা ওয়ান ইলেভেনের নেপথ্যে কাজ করেছে তারাই আন্না হজারে খুজছে। তারা গণতান্ত্রিক সরকারকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিলো, নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে অনির্বাচিত সরকার চেয়েছিল, ওয়ান ইলেভেনের পর গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চেয়েছিল, যারা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে হত্যা করতে চেয়েছিল, তারাই আজ আন্না হাজারে খুঁজছে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশে আর কোনো দিন নির্বাচন হবে না। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা সরকার ও দেশ পরিচালনা করবে।সৈয়দ আশরাফ দলের নেতার্কীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের মাঝে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নেতায় নেতায় বিভেদ, মন্ত্রী এমপিদের মধ্যে বিভেদ, সরকার এবং দলের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে একটি মহল ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। এখনো সময় আছে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না। ক্ষমতার ভাগাভাগিই আমাদের মুল লক্ষ্য না। ওয়ান ইলেভেনে যে ভাবে দলের নেতাকর্মীরা ছিল সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, ষড়যন্ত্র ধ্বংস করতে হবে। শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রোববার পত্র-পত্রিকায় তারেক রহমানকে জড়িয়ে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা সম্পর্কে যেসব খবর ছাপা হয়েছে সেগুলো সরকার চাপ দিয়ে মিডিয়াকে ছাপতে বাধ্য করেছে। আর এগুলো করা হয়েছে আগামী নির্বাচনে তারেক রহমানকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য।’ রোববার লালবাগ বালুর মাঠে নাসির উদ্দিন পিন্টু মুক্তি পরিষদ আয়োজিত সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মামলার যে অধিকতর তদন্ত ও সম্পূরক চার্জশিট তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আগের তদন্তগুলো তাদের কাছে মনোপুত হয়নি। ওই তদন্তগুলোতে জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের নাম আসেনি বলেই দলীয় একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে অধিকতর তদন্তের নামে এবং সম্পূরক চার্জশিট তৈরি করে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন একটা তদন্ত রিপোর্ট জাতির সামনে পেশ করা হয়েছে। এ দেশের শান্তিকামী ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জনগণ সরকারের এই অপকৌশল বোঝে। এর জবাব তারাই দেবে।’ এদিকে রাত আটটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান দলটির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাটি বিএনপির আমলে তদন্ত হয়েছে। এরপর ওয়ান-ইলেভেনের সরকারও এ মামলা তদন্ত করেছে। সেখানে তারেক রহমানসহ বিএনপির কোন সিনিয়র নেতার নাম আসেনি। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অধিকতর তদন্তের নামে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এবং এই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তদন্ত রিপোর্টই রোববার কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় জোর জবরদস্তির মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়াও এ ব্যাপারে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে জর্জ মিয়াকে প্রধান আসামি করে যে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল তা ছিলো সত্য।’সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন ছোড়েন, ‘জর্জ মিয়া কি নিষ্কলংক ছিলেন? তার বিরুদ্ধে কি আর কোন মামলা ছিল না?’তিনি দৈনিকগুলোকে কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহবান জানান। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ধর্ম বিষয়ক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, তারেক রহমানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছানউল্লাহ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এপিপি রিপোর্ট : সেই ভয়াল ও বিভীষিকাময় ২১ আগস্টের ৭ম বার্ষিকী কাল রোববার। বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি কালো দিন, কালো অধ্যায়। ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে চালানো হয় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ ও আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওই সময়ের বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এই গ্রেনেড নিক্ষিপ্ত হয়। গ্রেনেড হামলা থেকে শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার প্রচণ্ড শব্দে তার কানের শ্রবণ যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শন্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত ও অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান ২৩ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় আইভী রহমান সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে(সিএমএইচ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগস্ট শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা এবং নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বিকেলে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস-বিরোধী শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশের পর শান্তি মিছিল করার কথা ছিলো। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা তার বক্তব্য শেষ করার পর পরই ৫টা ২২ মিনিটে অতর্কিতে চারিদিক থেকে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে। বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, পল্টন এলাকা। এ সময় মঞ্চে বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানসহ দলের জাতীয় নেতারা উপবিষ্ট ছিলেন। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নেতারা সঙ্গে সঙ্গে মানব বর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে সে দিন শুধু গ্রেনেড হামলাই চালানো হয়নি, তিনি যখন গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করছিলেন তখনও তাকে লক্ষ্য করে গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিলো। এই জঘণ্যতম গ্রেনেড হামলায় সে দিন যারা আহত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, দলের বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য(তখনকার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য) আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ, দলের বর্তমানে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের, ওই সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিরোধী দলের নেতার রাজনৈতিক সচিব সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, উম্মে রাজিয়া কাজল, সাহেদা তারেক দিপ্তী প্রমুখ। আহত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অনেকে এখনো ষ্পিøটারের ধুকে ধুকে জীবন কাটাচ্ছেন। সেই যারা আহত হয়েছিলেন তাদের সারা জীবন শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বহন করে চলতে হচ্ছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণ এবং দিবসটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চট্টগ্রাম অফিস: তামাশা করতেই সরকার ৩৩ মাস কাটিয়ে দিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করার প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে এ সরকারের ৩৩ মাসেও অর্পিত (শত্রু) সম্পত্তি আইন কেন বাতিল হলো না তা তিনি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন। এছাড়া তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সংখ্যালঘুরা সারাজীবন একটি দলের ভোটব্যাংক হয়ে থাকবে, এমনটি ভাবলে ভুল হবে।’ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাস্য দেবতা ভগবান শ্রীকৃঞ্চের আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত র্যালির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কোনো কাজই যখন আপনাকে ছাড়া হয় না, তখন শত্রু সম্পত্তি আইন বাতিলের দায়িত্বও আপনাকে নিতে হবে। এ সংসদেই অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সংশোধনী ছাড়াই ৯৬ সালের মতো পাস করতে হবে।’ সুরঞ্জিত বলেন, ‘৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অর্পিত (শত্রু) সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন চূড়ান্ত করে সংসদে সেটি পাস করেছিলাম। তখন দলমত নির্বিশেষে সবাই এ আইনকে সমর্থন দেয়। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের পর আইনটি আঁতুরঘরে মারা যায়।’ তিনি বলেন, ‘এবার ক্ষমতায় আসার পর সাজেদা চৌধুরী, মেনন, ইনু, আইনমন্ত্রীসহ সবাই মিলে আবারও আইনটি পাশের জন্য চূড়ান্ত করলাম। কিন্তু হঠাৎ করে প্রস্তাবিত আইনে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে সংশোধনী আনা হয়।’ এসব সংশোধনী পাকিস্তান আমলের চেয়েও খারাপ উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, এটা পাস হলে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তা মেনে নেবে না।’ সরকারকে উদ্দেশ্য করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সেখানকার সংখ্যালঘুরা ৩৪ বছর পর সিপিএমকে বাদ দিয়ে মমতাকে ক্ষমতায় এনেছে। আমাদের ধৈর্যেরও সীমা আছে। সারাজীবন সংখ্যালঘুরা একটি দলের ভোটব্যাংক হয়ে থাকবে ভাবলে ভুল হবে।’ অবিলম্বে আইন পাস করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উত্তরাধিকারদের তাদের জমি ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে যাদের উত্তরাধিকার দেশে নেই সেসব জমি সরকারের কাছে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সাবেক পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, সংগঠনের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তপন চৌধুরী। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে র্যালির উদ্বোধন করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। র্যালিটি নগরীর আন্দরকিল্লার মোড় থেকে শুরু হয়ে লালদিঘীর পাড় কোতয়ালীর মোড়, ডিসি হিল ঘুরে আবারও একই স্থানে শেষ হয়। র্যালিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সনাতনী ছাত্র পরিষদ, নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলা থেকে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন। এপিপি রিপোর্ট : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিরোধী দল আন্দোলনের নামে যতই ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালাক তাতে কোনো লাভ হবে না। যারা এতিমের টাকা লুটপাট করেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করেন, যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তাদের দ্বারা জনগণের কোনো কল্যাণ হতে পারে না।’ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ আজিজ। শেখ হাসিনা বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কোনো বাড়াবাড়ি সহ্য করা হবে না। উচ্চ আদালতে গিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বাড়াবাড়ি করেছেন।’ উচ্চ আদালতে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা তাদের আসল রূপ দেখিয়েছে, গুণ্ডামি-মাস্তানি করেছেন। বিচারপতির দিকে লোহার পাত ছুড়ে মেরেছে। বিরোধী দলের প্রতি উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা সংবিধান মানবেন না, সংসদ মানবেন না, উচ্চ আদালত মানবেন না। তারা চানটা কী? তাদের এ রকম স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নেওয়া হবে না।’ পানি ও বিদ্যুত নিয়ে কেউ যেন কোনো ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড না করতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানির সমস্যা থাকার কথা নয়। পানির পাম্পে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটর বসানো হয়েছে। অনেক জায়গায় মোবাইল জেনারেটর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সময় মতো পানি ছাড়া হয় না। ইফতাার সেহরির সময় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দেশে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ সমস্যাগুলো আমাদের জন্য হয়নি। এগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। তারপরও আমরা বসে নেই। সমস্যাগুলো আমাদের জানা। এগুলো সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে, এজন্য অর্থের সংস্থান একটা বড় বিষয়।’ বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং রাস্তাঘাট সংস্কার করা হয়নি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে সব জঞ্জাল ছুড়ে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া মিথ্যা জš§দিনে কেক কেটে উৎসব করে জাতির পিতার খুনীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছেন। তার স্বামী এই খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া এপিপি রিপোর্ট : ঈদের আগেই রাস্তা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, ‘আড়াই বছরে যা সম্ভব হয়নি ঈদের আগে ৭ দিনের মধ্যে তা করে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন নাকি?’ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিরোধী দলের নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খলেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ মানবন্ধন আয়োজন করে জিয়া পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখা। দুর্নীতির অবারিত সুযোগ সৃষ্টির জন্যই বর্ষা মৌসুমে প্রধানমন্ত্রী রাস্তা মেরামতে নির্দেশ দিয়েছেন অভিযোগ করে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন বর্ষা মৌসুম। এ সময় রাস্তা সংস্কারের কাজ হাতে নিলে বৃষ্টিতে ইট বালি সুরকি ধুয়ে যাবে। ফলে ১ লাখ টাকার জায়গায় ২০ লাখ টাকা বিল করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ জনগণকে মিথ্যা স্বপ্ন না দেখানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ১০ টাকা কেজি চাল, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান, গ্যাসের সংযোগ বৃদ্ধির কথা বলেছিলেন কিন্তু তার কিছুই করতে পারেননি। এখন ঈদের ৭ দিনের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের অলীক স্বপ্ন দেখাবেন না।’ ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অ্যাক্ট’ অনুযায়ী দুদকে মামলায় খালেদা জিয়া আসামির যোগ্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করেছে আমার জানা মতে অপরাধ আইন (ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অ্যাক্ট) অনুয়ায়ী তিনি আসামি হতে পারেন না। কেবল রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এ ধরনের মামলা হামলার পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।’ মানবন্ধনে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, জিয়া পরিষদের সভাপতি কবির মুরাদ। সভাপতিত্ব করে জিয়া পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম। এপিপি রিপোর্ট : শোকের দিনে যারা ভুয়া জন্মদিন উদযাপন করে উল্লাস করেন তাদের দ্বারা জাতির কোনো কল্যাণ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেছেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এদিন যাদের প্রকৃত জন্মদিন তারাও জন্মদিন পালন করে না। অথচ এইদিন খালেদা জিয়ার জন্মদিন না হওয়া সত্ত্বেও তিনি জন্মদিন উৎযাপন করেন, উল্লাস করেন। কেন এই উল্লাস, এই উল্লাস করে তিনি কি খুনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় এসে মানি লন্ডারিং করে বিদেশে অর্থপাচার করেছে। এমনকি এতিমের টাকা পর্যন্ত লুটপাট করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা মানি লন্ডারিং করেন, এতিমের টাকা লুটপাট করেন, তাদের দ্বারা মানুষের কল্যাণ হতে পারে না।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এপিপি রিপোর্ট: বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্ক বাড়ছে। শীর্ষ নেতাদের নামে একের পর এক মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর হাই কমান্ড থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকলেই শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন। এসব দলের প্রায় সকল প্রকার আলোচনার কেন্দ্রেই এখন থাকছে মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়। খোদ বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার নামে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। ভৈরব সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগেও তার নামে মামলা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে। এর আগে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের নামে অল্প সময়ের ব্যবধানে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলা এবং মানি লন্ডারিং মামলায় তিনটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে মানি লন্ডারিং মামলায় ৬ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।এছাড়া দলের বিভিন্ন স্তরের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা-কর্মীর নামে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এসব মামলায় আটক করে নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছে বিরোধী দল। আর জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে জেলে আটক রয়েছেন। আরো অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। মামলায় নাস্তানাবুদ হচ্ছেন হচ্ছেন চার দলীয় জোটের অন্যতম নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীও। সবকছু মিলিয়ে বিএনপি ও তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা দলগুলোতে চলছে মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্ক। এ ব্যাপার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল মামলাসহ সাড়ে ৭ হাজার মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েই চলেছে।’ ‘খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিদায় করতেই’ এভাবে তার নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকারের কর্মকা-ে বিরোধী দলই শুধু নয়, সারাদেশের মানুষ আতঙ্কে আছে।’ এই সরকার বিএনপিকে ধংস করার নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার বিরোধী দলকে দমনের জন্য মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করছে।’ ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার বিরোধী দলকে এদেশে রাখতে চায় না। ধর্ম ও জনগণের পক্ষে কথা বললেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।’ এপিপি ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রিয় সাময়িকী টাইমের দৃষ্টিতে শীর্ষ ১২ প্রভাবশালী নারী নেতৃত্বের একজন নির্বাচিত হয়েছেন। তালিকায় তার অবস্থান সপ্তম। টাইম সাময়িকীতে শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের ৬৩ বছর বয়সী এই নেতার টিকে থাকার এক ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৫ সালে সামরিক অভুত্থানের সময় তার পরিবারের ১৭ সদস্য মারা গেলেও তিনি বেঁচে যান। পরে তিনি আরও একবার ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা থেকেও বেঁচে যান। সেই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত গিয়েছিল। তার দল ২০০৯ সালে সংসদের ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৩০টি আসন পেয়ে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৬ সালেও তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ হাসিনার জন্ম। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। ইডেন কলেজ ছাত্রসংসদের নির্বাচিত সহসভাপতি ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তালিকার শীর্ষে আছেন থাইল্যান্ডের সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা। ইংলাক কেন্টাকি স্টেট ইউনির্ভাসিটি থেকে লোক প্রশাসনের ওপর লেখাপড়া করেন। জীবনের বেশিরভাগ সময়ই থাকসিন সিনাওয়াত্রার প্রতিষ্ঠিত সম্পত্তি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। কিন্তু চলতি বছরের গত ১৭ মে থাইল্যান্ডের ফিউ থাই পার্টির প্রধান হিসেবে তিনি রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেন। গত ৩ জুলাই সংসদের ৫০০ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসন পায় তার দল। পার্লামেন্টে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপরেই দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের মধ্যে একজন। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি পূর্ব জার্মানি থেকে পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। এর ঠিক এক বছর পরই তৎকালীন চ্যান্সেলর হেলমুট কোল তাকে মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। তৃতীয় অবস্থানে আছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দ্য ক্রিচনার। ২০০৭-এর নভেম্বর মাসে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। চতুর্থ অবস্থানে আছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে তিনিই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড। ৪৮ বছর বয়সী জুলিয়া ২০১০ সালের জুন মাসের ২৪ তারিখ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুডের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন। তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। ষষ্ঠ প্রভাবশালী নারী রাষ্ট্রপ্রধানের তালিকায় আছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ। হার্ভাডের ইউনির্ভাসিটি অব উইসকনসিন থেকে লেখাপড়া করেন তিনি। ১৯৭০ সালে তিনি ছিলেন লাইবেরিয়ার অর্থমন্ত্রী। পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনিই আফ্রিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। তালিকার অষ্টমে আছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহান্না সিগুরদারদোত্তির। তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট লরা চিনচিলা আছেন তালিকার নবমে। ২০১০-এ দেশটির রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি ৪৭ শতাংশ ভোট পান। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তিনি জনপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। দশমে আছেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট তারজা হালোনেন। ২০০০ সাল থেকেই তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তালিকার এগারো অবস্থানে আছেন লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট দালিয়া গ্রায়বাউস্কাইট। ২০০৯-এ তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি ছিলেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী। সর্বশেষ দ্বাদশ অবস্থানে আছেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ বিশ্বেশ্বর। ২০১০ সালের মে মাসে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। এপিপি রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী দেশকে ভয়াবহ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দিন বদলের কথা বলে ক্ষমতায় এসে বিরোধীদলকে নির্মূল করার জন্য একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তহারি পরোয়ানা।’ সরকার সমোঝোতার কোনো পথ খোলা রাখছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের মিথ্যা মামলা দায়ের ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১২টায় নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে ও বৃহস্পতিবার সারাদেশে ইউনিয়ন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।’ তিনি বলেন, ‘সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদুক যে মামলা করেছে, তা ভিত্তিহীন। কারণ, এই ট্রাস্ট সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখানো কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে জেলা প্রশাসক বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।’ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ‘নখ-দন্তহীন’ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা করেছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।তিনি বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ চেকের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। এখানে গোপনে কোনো লেনদেন হয়নি। যেহেতু এটি একটি ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান। সেহেতু অনেক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় এখানে অর্থ প্রদান করেছেন। কোনো একক ব্যক্তি এ অর্থ লেনদেন করেনি। ট্রাস্টি বোর্ড অর্থ লেনদেন করেছে।’ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেকের মাধ্যমে অনুরূপ অর্থ গ্রহণ করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘দ্বৈতনীতিতে সরকার দেশ চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নামে ১৫টি মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। আর বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার ৪টি মামলার একটিও তোলা হয়নি। সোমবার নতুন করে আরেকটি মামলা দেওয়া হয়েছে।’জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্যই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নতুন মামলা ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে- দাবি ফখরুলের। হিন্দু দেবত্তোর সম্পদের ওপর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল নিজের নামে প্রতিষ্ঠান উঠিয়েছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই ভিত্তিহীন মামলার জবাব সরকার পতনের মাধ্যমেই জনগণ দেবে।’হামলা মামলার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য, আইন শৃঙ্খলা, শেয়ারবাজার ও পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে জনগণ যখন ফুঁসে উঠেছে তখন তাদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে এ মামলা দেওয়া হচ্ছে।’মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিরীহ মানুষকে পুলিশ নিজে হাতে গণপিটুনীর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। লিমনের মতো কিশোর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুর কাদের, আমিন বাজারের ৬ কিশোরসহ সারাদেশে সংঘটিত অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিরুদ্ধে মানুষ যখন স্বোচ্ছার তখন বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন নির্যান চালিয়ে আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চায় তারা (সরকার)।’ তিনি আরও বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ এ সরকার মানুষের খাওয়া, বাজার করা ও কাপড় পরা নিয়ে তামাশা করছে।’এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, সালাউদ্দিন আহম্মেদ, রুহুল কবীর রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এম ইলিয়াস আলী, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছা বিষয়ক সম্পাদক হাবীব-উন-নবী-খান সোহেল প্রমুখ। এপিপি রিপোর্ট: বিদেশে অর্থ পাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে তারেককে এ মামলায় পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। শুনানির সময় মামুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। চার্জ গঠন ও পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি জানান, তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০২ এর ২(ঠ)(অ)(আ)/১৩ ধারায় এ চার্জ গঠন করা হয়। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য্য করা হয়েছে। ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোজাম্মেল হোসেন শুনানি শেষে দুপুর সাড়ে বারটায় এ আদেশ দেন। এসময় তারেকের অনুপস্থিতিতে বিচার চালিয়ে যেতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪০ ধারায় দরখাস্ত দেওয়া হলে বিচারক তা খারিজ করে দেন। তবে মামুন অসুস্থ মর্মে তার চিকিৎসার আবেদন করা হলে বিচারক জেল কোড অনুযায়ী তার চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। একই ধরনের অভিযোগে গত ২৩ জুন একই আদালত খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ৬ বছর কারাদ- দিয়েছেন আদালত। শুনানির শুরুতে বক্তব্য রাখেন, মামুনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। তিনি আদালতকে বলেন, মামলাটি আমলে নেবার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি ফৌজদারী বিবিধ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে। তিনি বলেন, সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের গত ৫ মে তারিখের আদেশটি বৈধ হয়নি। তাই হাইকোর্টের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগ গঠন মুলতবি করার আবেদন করেন। তারেকের পক্ষে শুনানি করেন, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তারা আদালতকে বলেন, হাইকোর্টে রিভিউ মামলার আদেশের কপি এখনও পাওয়া যায়নি। তা না পাওয়া পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক উভয় আবেদনই খারিজ করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। তারেক পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও নির্দেশ দেন। এরপর দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল মামুনকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে শোনান। অভিযোগ শুনে মামুন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। চার্জ গঠনের পর মামুনের পক্ষে মামলার দায় হতে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। কিন্তু তা চার্জগঠনের আগে না করায় বিচারক তা নথিভুক্ত করেন। আদেশের প্রতিক্রিয়ায় তারেকের আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তারেক এ মামলায় পলাতক নন। তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন আছেন। মামলার চার্জশিটেও তাকে পলাতক দেখানো হয়নি। তাকে এ মামলায় পলাতক দেখিয়ে পরোয়ানা জারি করা বিধি সম্মত হয়নি। তবে তার এ বক্তব্যের বিরোধিতা করেন অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এ মামলায় তারেক জামিনে ছিলেন না পলাতকও ছিলেন না। তারেক কখনও এ মামলায় হাজির হননি। বিচারক বারবার তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরও তিনি হাজির না হওয়ায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে চার্জ গঠন করেছেন। এরআগে গত ২৫ জুলাই তারেক ও মামুনের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি ও অভিযোগ গঠন পিছিয়ে তারেক রহমানকে সোমবার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। গত ৫ মে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জহুরুল হক অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতা শুনানি শেষে মামলাটি বিচারের জন্য আমলে নেন। উল্লেখ্য, টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় একটি ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার তারেক রহমানের মাধ্যমে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা গ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে টাকাগুলো তারা বিদেশে পাচার করেন বলে অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা করেন। গত বছরের ৬ জুলাই তিনি তারেক ও মামুনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিপক্ষে জামিনের শুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন প্রমুখ আইনজীবী। এপিপি রিপোর্ট : ছাত্র সংগঠন ও প্রবাসী শাখার বিষয়ে নিবন্ধন বিধি তোয়াক্কা করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল দুটি নিবন্ধন বিধি ও দলীয় গঠনতন্ত্র উপক্ষো করছে। এছাড়া কিছু আইন ও বিধি সংস্কার, নির্বাচনী আইনেরও বিরোধিতা করছে দল ২টি। অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের সিদ্ধান্তকেই আবার নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের সিদ্ধান্ত হিসেবে চাপিয়ে দিচ্ছে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। কিন্তু প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ইসির তিন দফা চিঠি ও এক দফা টেলিফোনের আমন্ত্রণকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ও প্রহসন বলে উপেক্ষা করেছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের। আওয়ামী লীগ অবশ্য রোববার ১৮ সদস্যের বিশাল সদস্য বহর নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নিতে যাচ্ছে। বেলা সাড়ে ১০টায় ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ইসির এ সংলাপ হওয়ার কথা। সরকারি এবং বিরোধী দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের আইন না মানার বিষয়টি স্বীকার করে নির্বাচনী বিধির সাংঘর্ষিক কার্যক্রমের বিষয়ে আবারও ব্যাখ্যা চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা। তবে অন্য সব বিষয় নিয়ে মতান্তর থাকলেও সমমনা সংগঠনের তদারকি ও পরিচালনার পরামর্শকে কোনোভাবেই নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন বলে স্বীকার করেননি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে মূল দলগুলোর সম্পৃক্ততা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা বলেন, ‘আগে একবার দুই দলের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। তারা সময় চেয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এবারো কিছু একটা আমাদের করতে হবে।’ সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একাধিক রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেছে, প্রধান দুই দল তাদের সমর্থক ছাত্র সংগঠনগুলোকে গঠনতন্ত্রে সহযোগী বা অঙ্গ সংগঠন হিসেবে না দেখালেও নির্বাচন কমিশনের ‘নাকের ডগায়’ সম্পৃক্ত থেকে কাউন্সিল করে আসছে। অনেকেরই দাবি কাগজে-কলমে ছাত্র ও প্রবাসী সংগঠনকে মূল দলের বাইরে রাখা হলেও বাস্তবে মূল দলের নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে সবকিছু। শর্ত মেনে দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হলেও কৌশলে নির্বাচনী আইন উপেক্ষা করছে প্রধান দলগুলো। ‘আইন লঙ্ঘন’ করার পরও ইসির নীরব ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টি, জেএসডি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, ন্যাপ, বিকল্প ধারা, মুসলিম লীগসহ অনেক দল। ‘ক্ষমতাধর’ রাজনৈতিক দলগুলোর এ ধরনের আইন না মানার সংস্কৃতি রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ। নির্বাচন কমিশনও তা প্রয়োগে ‘কতটুকু কার্যকর’ এমন শঙ্কা প্রকাশ করে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আইন না মানার সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা প্রতিষ্ঠিত হবে না। দলগুলোকেই এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’ এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যে দলগুলোর আসাটাই একটা বড় অর্জন হয়েছে।’ আগামীতে শর্তগুলো পালনে দলগুলোরও ইতিবাচক ভুমিকা আশা করেন তিনি। ছাত্র সংগঠন ও প্রবাসী শাখাগুলো মূল দলের বাইরে রাখতে সময়ের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য সিইসির। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, (৯০ বি) নিবন্ধন শর্তে রয়েছে, ছাত্র, শিক্ষক ও পেশাজীবীদের নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। তবে নিজস্ব গণতন্ত্র মেনে স্বতন্ত্রভাবে এ ধরনের সংগঠনের কোনো বাধা নেই। একই সঙ্গে বলা হয়েছে (৯০ সি) কোনো দলের বিদেশে অফিস, শাখা বা কমিটি থাকলে দলটি নিবন্ধনের জন্য যোগ্য হবে না। ‘ইসি কিছুই করছে না’ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন জানান, প্রধান দুই দল ইসির আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে সম্পৃক্ত থেকে ছাত্র সংগঠনের সম্মেলন করছে। বিদেশি শাখা বহাল রেখে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। গত মে মাসে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন দুই জনই বিদেশ সফর করে বিদেশি শাখাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে। গত ২৩ জুন সংলাপে আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘ছাত্র সংগঠন ও বিদেশে দলের শাখা বহাল রেখে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল বড় বড় সম্মেলন করছে, কমিটি ঘোষণা করছে- কিন্তু আপনারা কিছু করছেন না। অথচ আমরা এ আইন মানতে গিয়ে সমর্থন হারাচ্ছি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পক্ষান্তরে, বড় দল আইন লঙ্ঘন করে লাভবান হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।’ ইসির নিশ্চুপ অবস্থান থেকে সরে এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানান জাগপা চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান। এ বিষয়টি স্বীকার করে নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দলগুলো শর্ত মেনে নিবন্ধন করেছে। এটা রাজনৈতিক বিপ্লবে দলগুলোর ইতিবাচক মনোভাব ও গুণগত পরিবর্তন। তবে সবকিছু একদিনে হবে না। এখন কী করা যায় তাও ভাবছি আমরা। আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে সব আইনী বাধ্যবাধকতা মেনে নেবে রাজনৈতিক দলগুলো।’ ছাত্র সংগঠনে দুই দলের সম্পৃক্ততা ও অস্বীকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। নির্বাচনী আইন মেনে ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দলটির সাংগঠনিক নেত্রীর পদ ছেড়ে দিলেও কাউন্সিল দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন দলীয় সভাপতি ম-লীরসদস্য ওবায়দুল কাদের। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি শুধু ছাত্রলীগের কাউন্সিল মনিটরিং করেছি। এতে তো আইনী কোনো বাধা নেই। ছাত্রলীগ খারাপ কিছু করলে যেমন দায় নিতে হয়, তেমনি ভালো কিছু হচ্ছে, তাও প্রশংসা করতে হবে সবার।’ ছাত্রলীগের ভালোর জন্যই তা দেখভাল করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। সমর্থিত ছাত্র সংগঠন তত্ত্বাবধানে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক নামে একটি পদই আছে। ২০০৯ সালের ১ জুলাইয়ে দলটির চেয়ারপার্সন অনুমোদিত নতুন কমিটি ঘোষণা দেন ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক। সম্প্রতি ছাত্র দলের বিবদমান গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিরসনে আরেক সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী অ্যানিকে দায়িত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে বিএনপির এ সম্পাদক ভাতৃপ্রতিম সংগঠনকে পরামর্শ দিতে পারে। এতে সমস্যার কিছু নেই। নির্বাচনী আইন মেনেই এটা করা হয়, তাই আইনের লঙ্ঘনের প্রশ্নই উঠে না।’ ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সঙ্গে মূল দলের সম্পৃক্ততা ভাতৃপ্রতিম হলেও তারা স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব গঠনতন্ত্র মেনে চলছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের ও নজরুল ইসলাম খান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দলীয় গঠনতন্ত্রে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ না থাকলেও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে একজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন চেয়ারপার্সন। এ নিয়ে দলের ভেতর থেকে অভিযোগ আসে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করার বিষয়ে ইসি কোনো ব্যাখ্যা চাইবে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলেন, ‘সংক্ষুব্ধ কেউ এ জন্য আদালতে যেতে পারে। ইসি কিছু করবে না। কারণ, গঠনতন্ত্রে না থাকলেও প্রয়োজনে দলীয় ফোরামে এমন কিছু রাখার এখতিয়ার ওই দলেরই। কেউ বঞ্চিত হলে আদালতে এর ফয়সালা হতে পারে।’ এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান জানান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কোনো পদ নয়। অস্থায়ীভাবে কাজ চালানোর জন্য দলীয়ভাবে একজনকে ভারপ্রাপ্ত করা হয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যখন দেশের বাইরে যান, তখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি একজন থাকেন, বিএনপির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্রে না থাকলেও অস্থায়ীভাবে কাউকে আপদকালীন নিযুক্ত করা হলে তা দলীয় গঠনতন্ত্রের ব্যত্যয় নয় বলে জানান স্থায়ী কমিটির এ সদস্য। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (হালনাগাদ সংশোধিত) অনুযায়ী ছাত্র ও শ্রমিকদের কোন অঙ্গসংগঠন না রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু গত বছর ছাত্রলীগের কার্যক্রম দেখভালে তিনজন আওয়ামী লীগ নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ছাত্রদলের সঙ্গে বিএনপির নেতারা সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছেন। গত বছর ডিপে¬ামা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছাত্রদলের বর্ধিত সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ছাত্রদলকে বিএনপির সংগঠন হিসেবে উলে¬খ করেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সঙ্গে দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী হওয়ায় ২০১০সালের ১৯ মার্চে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতকে ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে ব্যাখ্যা চায়। পরে দলগুলো প্রত্যুত্তর দেয়, তাদের কার্যক্রম নির্বাচনী আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। এ নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইসি। এপিপি রিপোর্ট : বাণিজ্যমন্ত্রী 'হীরক রাজার' সভাকবির মতো জনগণকে কম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশে ১৯৭৪ সালের মতো দুর্ভিক্ষ আনার 'ষড়যন্ত্র' করছে। শুক্রবার এক ইফতার মাহফিলে তিনি বলেন, "চলচ্চিত্র হীরক রাজার দেশের একটি চরিত্রের মতো আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রীও কম খেতে বলেছেন। এ থেকে বোঝা যায়, মানুষের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে তারা ১৯৭৪ সালের মতো দেশে আরেকটি দুর্ভিক্ষ আনতে চায়।" সত্যজিত রায়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'হীরক রাজার দেশে' হীরক রাজার সভাকবি মন্ত্র পড়ে কৃষক-শ্রমিকদের 'মগজ ধোলাই' করতেন। শ্রমিকদের জন্য তার মন্ত্রটি ছিল- অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, "আমি বললে তো আপনারা রাগ করবেন, কম খান, ভালো থাকবেন।" দেশের বর্তমান অবস্থাকে 'সংকটজনক' অভিহিত করে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, "স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র আজ ধ্বংসের পথে। ৪০ বছরে আমাদের দেশের যেসব স্তম্ভ তৈরি হয়েছিল, আজ তা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করে ফেলা হয়েছে।" বিএনপি সমর্থক চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এই চিকিৎসক সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলের আয়েঅজন করা হয়। ৬ অগাস্ট সংগঠনটির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সমাবেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূণর্বহাল, স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধি, চিকিৎসকসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধসহ ১৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, "যে সরকার দেশের জমি অন্যকে দিয়ে দেয়, স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারে না, তাদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না।" সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুুর রহমান বলেন, "এই সরকার ফ্যাসিস্ট। তারা নারীদেরও সম্মান দিতে জানে না।" আদালতে হট্টগোলের মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে গ্রেপ্তার ও তাকে হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার আবেদনের সমালোচনা করে মাহমুদুুর বলেন, "তারা একজন মহিলা সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে রিমাণ্ডের আবেদন করেছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় এতো মহিলা থাকতে আরেকজন নারীর ওপর নির্যাতন চালাতে কীভাবে দিনের রিমাণ্ড চাওয়া হয়?" বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে পেশাজীবীসহ সবাইকে এক হয়ে আন্দোলনে নামার আহবান জানান তিনিও। ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, যুব দলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুছ তালুকদার দুলু, কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলন, ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এপিপি রিপোর্ট : আদালতে হাতাহাতি ও অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি সাংসদ ও আইনজীবী সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া ও বিএনপিপন্থী ২ আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া অপর আইনজীবীরা হলে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম ও আবু বকর সিদ্দিক রাজন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসপি রওনক জাহান হাইকোর্ট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হাইকোর্টে বিশৃঙ্খলা, ভাঙচুর, সরকারি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় ২ আগস্ট রাতে শাহবাগ থানায় গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা এসএম সোলাইমান ১৪ আইনজীবীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার তাদের জামিনের শুনানিতে বিব্রতবোধ করেন বিচারক। আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এবং তাদের বার কাউন্সিলের সনদ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে বুধবার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব ও বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সংবিধানের আমিনীর বিষয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানির সময় আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় আদালত স্বতঃপ্রোণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন। মামলার তদন্ত চলা পর্যন্ত দেশের সমস্ত বার ও আদালতে অভিযুক্ত আইনজীবীরা যাতে কোনো মামলার কার্যক্রমে অংশ না নিতে পারে তারও নির্দেশ দেন আদালত। যাদের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করা হয় তারা হলেন- বিএনপির এমপি ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শহিদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, অ্যাডভোকেট শরিফ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, অ্যাডভোকেট এনামুল হোসেন গাফফার, অ্যাডভোকেট এম ইউ আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মো. আশরাফুজ্জামান খান, অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম নবী ও অ্যাডভোকেট রেজোয়ান আহমেদ। এপিপি, গাজীপুর: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে আটক বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকা চৌধুরীকে বুধবার বিকেলে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর জেলা কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, ১৯৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গাজীপুর জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। একটি মাইক্রোবাসে করে কড়া নিরাপত্তায় গাজীপুর জেলা কারাগারে নিয়ে আসা হয় তাকে। এর আগে বিকেলে একই অভিযোগে আটক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কড়া নিড়াপত্তায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এপিপি রিপোর্ট : সংবিধান নিয়ে কটুক্তি করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার দেশপ্রেমের অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার সংবিধান নিয়ে কটুক্তি করায় ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীর বিরুদ্ধে জারি করা রুলের ওপর শুনানি চলাকালে আদালত এ মন্তব্য করেন। এ সময় উপস্থিত থাকা বিএনপিপন্থী আইনজীরা আদালতের এ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। এতে আদালত প্রাঙ্গণে আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে। পরে সিনিয়র আহনজীবীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে আমিনীর বিরুদ্ধে জারি করা স্বপ্রণোদিত রুলের শুনানি হয়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য দেওয়ার সময় সংবিধান নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘বেগম জিয়াও তার বিভিন্ন বক্তব্যে সংবিধান ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন।’ শুনানি শেষে আদেশ দেওয়ার সময় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ওই প্রসঙ্গটি টেনে খালেদা জিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘ওনার (খালেদা জিয়া) ভিতরে দেশপ্রেমের অভাব রয়েছে। দেশপ্রেম থাকলে সংবিধান নিয়ে তিনি কখনই এরকম বক্তব্য দিতে পারতেন না।’ উল্লেখ্য, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তার বিভিন্ন বক্তব্যে সংশোধিত এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার কথা বলেন। এপিপি রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনুর মুক্তির দাবিতে সোমবার বিকেলে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান। নজরুল ইসলাম খানের এ বক্তব্য মূলত সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনের একটিতেও জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি’ শীর্ষক বক্তব্যের জবাব। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার কথা ঠিক থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিন নির্বাচনের দু’টিতে আপনার জিতেছেন। সর্বশেষ নির্বাচনেও আপনারা জয়ী হয়েছেন। তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ দিন।’ লক্ষ্মীপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়ি বহরে হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খুনের আসামিকে ছেড়ে দেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়েছে। এতে যুগ্ম-মহাসচিব শাহজাহান সাহেবের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।’ নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জনগণ যা বোঝার বুঝে নিয়েছে। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে এর জবাব দেওয়ার। তবে রাজনীতিক হিসেব আমাদেরও একটা দায়িত্ব আছে। সেই দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে যুবদল। আর এ দায়িত্ব পালন বাধাগ্রস্ত করতেই যুবদল ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনুসহ রাজপথের সক্রিয় কর্মীদের মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের হাজার হাজার মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে। আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অব্যাহত রয়েছে।’ ‘দেশ আজ মহাসংকটের সম্মুখীন’ বলে মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় চাকুরিরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কিছু করাতে না পেরে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে। দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য এটা শুভ লক্ষণ নয়।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু এই সংবিধান পরিবর্তনে দেশের ডানরাও খুশি না, বামরাও খুশি না। আর আমরা যারা মধ্যপন্থি তারাও খুশি না। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ সাহেবও খুশি না। তাহলে কাদের খুশি করতে সংবিধান সংশোধন করা হলো।’ তিনি বলেন, ‘জনগণকে সন্তুষ্ট না করে অন্য কাউকে সন্তুষ্ট করতেই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে।’ যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন- সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি নাইটএঙ্গেল মোড় ঘুরে অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়।এ সময় পুলিশের সতর্ক লক্ষ্য করা হয়। তবে শান্তিপূর্ণ মিছিলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। |
নিউজ সার্চ
All
নিউজ আর্কাইভ
May 2018
|