ঢাকা: সরকারি দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ আবারও জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন আগামীতে এককভাবে নির্বাচন করবে জাতীয় পার্টি।শনিবার রাজধানীর বনানী মাঠে বৃহত্তর ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
কার্যত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে জাপার সমর্থন দেওয়া নিয়ে বৈঠকের দু’দিনের মাথায় এরশাদ এমন ঘোষণা দিলেন।
এরশাদ বলেন, আমি একজন বিচারপতি চেয়েছিলাম, দেন নি। প্রতি জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছেন- জাতীয় পার্টির কথা মনে রাখেন নি। এখন আপনারা গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সমর্থন চান। আমরা আপনাদের সঙ্গে নেই। আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো। তিনি বলেন, ক্ষমতা ছাড়তে আপনারা ভয় পান কেন? আপনাদের বাড়িতে আগুন জ্বলবে। গুলি খেতে হবে, মরতে হবে। এ কালচার আপনারাই তৈরি করেছেন।
এরশাদ বলেন, নির্বাচন দিতে ভয় পান। সেদিন শেষ। নির্বাচন দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন- তত্ত্বাবধায়ক এলে দু’জনকেই জেলে যেতে হবে। আমাকে যখন জেলে নেওয়া হয় তখন তো কেউ প্রতিবাদ করেন নি। আগে জাতীয় পার্টি ছিলো না। এখন জাতীয় পার্টির দাম বেড়েছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি জাপা না আসা পর্যন্ত চলবে। আমরা এখন ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে।
সমাবেশে এরশাদকে মহাজোট ছেড়ে এককবাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার দাবি জানান নেতারা বক্তৃতা করেন।মঞ্চের সামনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী হাততালি দিয়ে বক্তারাদের সমর্থন জানান।
ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন, ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আপনি মহাজোট ত্যাগ করুন। আমরা আবার আপনার স্বর্ণযুগে ফিরে যেতে চাই।
গাজীপুর জেলার সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হতে চায় না। আমরা গাজীপুরবাসী আজমত উল্লাহকে ত্যাগ করেছি। গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে। আপনি মহাজোট ত্যাগ করুন। একক নির্বাচনের ঘোষণা দিন।
এরপর দোহার, নবাবগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও এরশাদকে মহাজোট ত্যাগের ঘোষণা দেয়ার দাবি জানান।প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম ফয়সাল চিশতির সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। আরো বক্তৃতা করেন- রওশন এরশাদ, কাজী জাফর আহমেদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রমুখ।