ঢাকা: বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।শনিবার রাজধানীর মুক্তিভবনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি আয়োজিত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোজনায় তিনি এ কথা বলেন।বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রধান উপদেষ্টা ডা. এম এ মুকিতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্য আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব বি এম নাজমুল হক।
ড. কামাল বলেন, একই ব্যক্তি তার দলের লোক সরকারেও থাকবে, একদিন আগে পর্যন্ত সে এখানে ছিলো সমর্থক হয়ে। পরের দিন থেকে বলবে এখন আমি বিরোধীদল, এটা কী আমরা বুঝি না এটার উদ্যেশ্য এ লক্ষ্যটা কী? দেশের মানুষ সংঘাত, সংর্ঘষ চায় না, দেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ সংঘাত ও সংঘর্ষ নয় বরং শান্তি চায়। ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে না খেলতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।সরকারের সমালোচনা করে গণফোরাফ সভাপতি বলেন, জনগণকে ঠকিয়ে বারবার কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকার একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে রাজতন্ত্র কায়েমের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু জনগণ বাংলার মাটিতে আর কোনোদিন রাজতন্ত্র কায়েম করতে দেবে না।
জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি যার নাম নিতে চাই না। আজকাল থু-থুর সঙ্গে পরিচিত যে ব্যক্তি, সে একবার বলে বিরোধী দলে, আবার বলেন সরকারে। স্বৈরাচার হিসেবে যিনি পরিচিত সেই ব্যক্তি এখন সরকারের সঙ্গে আছেন। তাই আমরা শঙ্কিত, সরকার স্বৈরতন্ত্র করার কোনো ষড়যন্ত্র করছে কি না?।
কামাল হোসেন বলেন, মহাজোট সরকারের শেষ উপহার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন সংশোধন করে সংস্থাটিকে দন্তবিহীন বিড়ালে পরিণত করা। বিড়াল যাতে ঈদুর ধরতে না পারে সেজন্য দুদককে দন্তহীন করা হয়েছে।তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না। অতীতেও একদলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন মানুষ হতে দেয়নি, এবারও তা দেবে না।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ ২০০৮ সালে ভোট দিয়েছিল দিন বদলের কথা বলে, কিন্তু তারা ক্ষমতায় গিয়ে শেয়ার বাজারের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। পদ্মাসেতু নিয়ে মানুষের সঙ্গে তামাশা করেছে। তাই এদেশের মালিক জনগণ সেই ক্ষমতা আর তাদের হাতে দেবে না।
কামাল হোসেন বলেন, সরকার ক্ষমতায় গিয়ে গত প্রায় ৫ বছরে একটির পর একটি আইন সংশোধন ও আইন করেছে। সিটি কর্পোরেশনকে দুই ভাগ করেছে। দুদককে ক্ষমতাহীন করেছে। জনগণের ক্ষমতা খর্ব করার ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু বাংলার মাটিতে মানুষ আর রাজতন্ত্র কায়েম করতে দেবে না।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে ড. কামাল বলেন, দেশ ধ্বংস হয়ে যাবার আগে উদ্যোগ নেন। দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে যান। নইলে দেশের মানুষ কাউকে ক্ষমা করবে না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি আগামী পরশু থেকে দেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। তাই যদি হয় তাহলে আমরা ঐ সংঘাতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে সংলাপের তাগিদ দিয়েছেন। আর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলছেন তাঁর সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথাই হয়নি। এটা কোন ধরনের তামাশা।
মান্না বলেন,পত্রিকা মারফতে জানতে পারলাম রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে কিশোরগঞ্জের মানুষ হিসেবে সংলাপের উদ্যোগ নেবার কথা বলেছেন। একজন রাষ্ট্রপতি হয়ে কি করে কিশোরগঞ্জ বাড়ি বলে সৈয়দ আশরাফকে এ ধরনের কথা বলেন। তার (রাষ্ট্রপতির) লজ্জা হওয়া উচিত।